বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: অধিবেশন শেষ। কমিটির সভা বা দলের প্রয়োজন ছাড়া দিল্লি আসার দরকার নেই। বরং রাজ্যের সংগঠনের দিকে নজর দিন। রাজ্যজুড়ে আন্দোলন গড়ে তুলুন। রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে (Sukanta Majumdar) সাফ জানিয়ে দিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা (J P Nadda)। সোমবার সুকান্তকে জরুরি তলব করেন নাড্ডা। কমিটি গঠন বা আন্দোলন সংগঠিত করার ক্ষেত্রে কোনও বাছবিচার করা যাবে না। জন প্রতিনিধিদের সঙ্গে সম্মন্বয় রেখে কাজ করতে হবে বলে জানিয়ে দেন। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যে রাজ্য থেকে কোনও অভিযোগ শুনতে নারাজ, এদিন মুখোমুখি বসে সুকান্তকে বুঝিয়ে দেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি।
বাংলার সংগঠন থেকে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে পাহাড় সমান অভিযোগ পালটা অভিযোগ জমা পরেছে। বর্তমান ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর বিরুদ্ধেই অভিযোগ বেশি। এমনকী, অনেক জনপ্রতিনিধিও সরাসরি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে অভিযোগ জানিয়েছে। অভিযোগের সিংহভাগই ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে একতরফা সিদ্ধান্ত নেওয়ার। সাংসদদের অভিযোগ, অনেকসময়েই তাঁদের এলাকায় দলের কর্মসূচি হলেও তাঁরা অন্ধকারে থাকছেন। আবার এমন সময় করা হচ্ছে যখন তাঁরা জরুরি কাজে বাইরে থাকছেন। সংগঠন ও জন প্রতিনিধিদের মধে্য সম্মন্বয়ের অভাব থাকছে। রাজ্যস্তরে জরুরি বৈঠকে থাকলে বেছে বেছে সাংসদ বা বিধায়কদের ডাকা হচ্ছে না বলে অভিযোগ। সূত্রের খবর, সকলকে নিয়ে বৈঠক করে পরিকল্পনা মাফিক রাজ্য থেকে মণ্ডল পর্যন্ত আন্দোলন ছড়িয়ে দিতে হবে। দলের অসময়ের সঙ্গীদের বাদ দিয়ে পরিকল্পনা করলে হবে না। সংগঠনের পুরনো নেতৃত্বকে সম্মান দিয়ে কাজে লাগাতে হবে বলে নির্দেশ দেন সর্বভারতীয় সভাপতি।
[আরও পড়ুন: আশ্বাস মিললেও SSC চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগ কবে? শিক্ষামন্ত্রীর মন্তব্যে জিইয়ে রইল প্রশ্ন]
দমদম এয়ারপোর্ট অ্যাডভাইজারি কমিটিতে জায়গা পেলেন সুকান্ত ও শুভেন্দু। অথচ স্থানীয় সাংসদ হিসাবে এই কমিটির চেয়ারম্যান সৌগত রায়। তিনি তৃণমূল সাংসদও বটে। অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রকের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার নির্দেশেই এই দু’জনকে কমিটিতে নেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সুকান্ত সাংসদ হিসাবে অ্যাডভাইজারি কমিটিতে জায়গা পেতেই পারেন। কিন্তু বিরোধী দলনেতা কোন ক্ষমতাবলে গুরুত্বপূর্ণ পদ পেলেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
এয়ারপোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার যে কোনও বিমানবন্দরেই অ্যাডভাইজারি কমিটি থাকে। নিয়ম অনুযায়ী, এই কমিটির চেয়ারম্যান হন স্থানীয় সাংসদ। এক্ষেত্রে কলকাতা বিমানবন্দর যেহেতু দমদম লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। তাই কলকাতা বিমানবন্দরের এয়ারপোর্ট অ্যাডভাইজারি কমিটির চেয়ারম্যান বর্তমানে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। কিন্তু এতদিন সেখানে কেন্দ্রের শাসকদলের কোনও জনপ্রতিনিধি ছিলেন না। সম্প্রতি দিল্লি সফরে আসেন শুভেন্দু। তখনই বিষয়টি নিয়ে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার সঙ্গে কথা হয় বিরোধী দলনেতার। দু’জনকে গুরুত্বপূর্ণ এই কমিটিতে জায়গা করে দিতে চান বলে বিরোধী দলনেতাকে জানান। এছাড়াও সুকান্তর সঙ্গে আলাদা করে সংসদে কথা বলেন অসামরিক বিমান পরিবহণমন্ত্রী। তিনিও অ্যাডভাইজারি কমিটিতে জায়গা পেতে আগ্রহ প্রকাশ করেন মন্ত্রীর কাছে। এপ্রসঙ্গে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, “সর্বগ্রাসী ক্ষমতার লোভে সব জায়গায় দখল করতে চাইছে বিজেপি। স্থানীয় সাংসদ থাকা সত্ত্বেও গ্রাম থেকে নিয়ে এসে দু’জনকে বসানো হয়েছে।”