সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বহুদিন ধরে বলা হচ্ছে, মা না হওয়া পর্যন্ত তলপেটে অপারেশন করানো উচিত নয়৷ কিন্তু তা বলে সিস্ট, টিউমার শরীরে মধ্যে বাড়তে থাকবে? যদি আপনিও এরকম ভেবে থাকেন তাহলে কিন্তু সেটা পুরোপুরি ভুল ধারণা৷ প্রয়োজনে মাইক্রোসার্জারি করানোও যায়৷ বললেন আইএলএস হসপিটালের গাইনোকোলজিস্ট ও ল্যাপারোস্কোপিক সার্জন ডা. অরুণা তাঁতিয়া৷ শুনলেন সোমা মজুমদার
দেখা গেল, কারোর চকোলেট সিস্টের সমস্যা রয়েছে। সেক্ষেত্রে অপারেশন না করলে সমস্যা বাড়বে। কিন্তু বাবা-মা চান না বিয়ের আগে মেয়ের সার্জারি হোক। আবার কেউ হয়ত পলিসিস্টিক ওভারির সমস্যায় ভুগছেন। চিকিৎসক অপারেশনের পরামর্শ না দিলেও এই সিস্টের জন্য পরবর্তীকালে তাঁর মাতৃত্বে সমস্যা তৈরি হতে পারে বলে চিন্তিত তার পরিবার৷ তবে কোনও রোগকে শুধু বিয়ে না হওয়ার অজুহাতে শরীরে বাড়তে দেওয়া ভুল সিদ্ধান্ত৷
কোন সমস্যায় দোলাচল
বর্তমান লাইফস্টাইলে কিশোরী, তরুণীদের পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিন্ড্রোম, চকোলেট সিস্ট, ইউট্রাস ফ্রাইবয়েডের সমস্যা ক্রমশ বাড়ছে৷ সার্জারি করে সিস্ট অপসারণ করা উচিত না উচিত নয় তা নিয়েও দ্বিধায় ভোগেন অভিভাবকরা৷ যেসব ক্ষেত্রে অপারেশনের প্রয়োজন সেই সব ক্ষেত্রে করিয়ে নেওয়া উচিত৷ মাইক্রোসার্জারিতে কোনও ক্ষতি হয় না৷
[প্রকৃত ভারতীয়র পাকিস্তানকে বয়কট করা উচিত, মত শিবসেনা নেতার]
বেশিরভাগ মহিলা ওভারি বা গর্ভাশয়ে ছোট সিস্ট বহন করে৷ ৩ সেমির কম মাপের সিস্ট হলে তা কোনও ক্ষতি করে না৷ এগুলি বেশিরভাগ নিজে নিজে ঠিক হয়ে যায়৷ এই ধরনের সিস্টের ক্ষেত্রে নিয়মিত ব্যায়াম, যোগা করা উচিত৷ এছাড়াও শাক-সবজি, বাদাম, ফল বেশি পরিমাণে খেতে হবে৷ অন্যদিকে চকোলেট সিস্ট ১০ সেমির বেশি হলে মাইক্রোসার্জারি করে অপসারণ করা যেতেই পারে৷
ল্যাপারোস্কোপির কখন প্রয়োজন হয়
গাইনোলজিক ল্যাপারোস্কাপি হল ওপেন সার্জারির বিকল্প৷ ওপেন সার্জারিতে বড় অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন কিন্তু ল্যাপারোস্কোপিতে মাইক্রোসার্জারির মাধ্যমে অপারেশন করা হয়৷ সিস্টের মাপ যদি ১০ সেমির বেশি হয় তখন মাইক্রোসার্জারি করার পরামর্শ দেওয়া হয়৷ জরায়ু অপসারণ, ডিম্বাশয় অপসারণ, ওভারিয়ান সিস্ট অপসারণ ইত্যাদি বিভিন্ন ক্ষেত্রে ল্যাপারোস্কোপি করতে হয়৷ তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে রোগীর অবস্থা যথাযথভাবে পরীক্ষা করেই এই ধরনের মাইক্রোসার্জারি করা উচিত৷ কারণ সিস্ট অথবা টিউমারের আকার কতটা বড় বা তার অবস্থানের উপরেই নির্ভর করে রোগীর সার্জারির প্রয়োজন আছে কিনা৷
[‘তুমি সেরা হতে পার, কিন্তু ভগবান নও’, কপিলকে খোঁচা ‘গুত্থি’র]
তবু সাবধান
সাধারণ ল্যাপারোস্কোপিতে কোনও সাইড এফেক্ট নেই৷ কিন্তু ভুল চিকিৎসা করলে রিস্ক ফ্যাক্টর থেকে যায়৷ তাই সঠিকভাবে রোগ পরীক্ষা করে সার্জারি করা উচিত৷ কারণ সঠিকভাবে ল্যাপারোস্কোপি না করলে মারাত্মক ফল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে৷
অনেক সময় শিশুরও ডিম্বাশয়ে সিস্ট হতে দেখা যায়৷ এক্ষেত্রে ম্যালিগন্যান্ট টিউমার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে৷ ফলে সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করলে ক্যানসারের থাবায় প্রাণনাশ অবশ্যম্ভাবী হয়ে যেতে পারে৷
অযথা দুশ্চিন্তা নয়
গর্ভবতী হওয়ার আগে স্ত্রী রোগ সংক্রান্ত কোনও সমস্যা দেখা দিলে অযথা দুশ্চিন্তা করবেন না৷ সঠিক সময়ে ডাক্তারের পরামর্শ নিন৷ যদি ওষুধের মাধ্যমে না কমে, তাহলে ডাক্তারের পরামর্শমাফিক ল্যাপারোস্কোপিক করতে ভয় পাবেন না৷ সার্জারি করলেই যে তা আপনার মাতৃত্বে প্রভাব ফেলতে পারে এমন ধারণা পুরোপুরি ভুল৷ বরং জরায়ুতে ফাইব্রয়েড হওয়ার মতো রোগের ক্ষেত্রে টিউমার অপসারণ না করলে গর্ভধারণের সময় জটিলতা তৈরি হবে৷ একইভাবে চকোলেট সিস্টের সার্জারিও প্রয়োজনে করিয়ে নিন৷ তবে প্রতিটি ক্ষেত্রেই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়েই চিকিৎসা করা উচিত৷ যেসব ক্ষেত্রে অপারেশনের দরকার নেই সেখানে শরীরে কোনও রোগ বাড়ছে, এই নিয়ে অহেতুক দুশ্চিন্তা করবেন না৷
যোগাযোগ: আইএলএস হসপিটাল (০৩৩ ৪০২০৬৫০০)
আরও পড়তে ক্লিক করুন
The post বিয়ের আগে সিস্ট নিয়ে ভয়? ঝুঁকি নেই এই সার্জারিতে appeared first on Sangbad Pratidin.