সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নতুন বছরের শুরুতে রাজ্যের সমস্ত প্রশাসনিক কাজকর্মের বিস্তারিত রিপোর্ট নিতে বৃহস্পতিবার জেলাশাসক, পুলিশ সুপারদের নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠকে বসলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। আর নেতাজি ইনডোরের সেই বৈঠকে গোড়া থেকে আক্রমণাত্মক মেজাজেই দেখা গেল তাঁকে। প্রশাসনের নানা স্তরে কাজকর্ম নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেন। আধিকারিকদের উদ্দেশে রাগত স্বরে তিনি বলেন, ”উপরতলার অফিসাররা সব নিচুতলার কর্মীদের দিকে কাজ ঠেলে দেন। এই প্রবণতা একেবারেই ভাল নয়। কাজের প্রতি অবহেলার মনোভাব এটা। সরকারি কাজে এ ধরনের মনোভাব একেবারেই বরদাস্ত নয়। কাজটা করতে হবে। শুধু টাকা দিলাম আর মেলা করলাম, তা হবে না।” তাঁর এই বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট, কোনও কোনও দপ্তরের আধিকারিকদের সম্পর্কে তাঁর কাছে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে।
আগামী ১৫ তারিখ থেকে শুরু হবে এ বছরের দ্বিতীয় দফার ‘দুয়ারে সরকার’ প্রকল্প। এবারের শিবিরগুলিতে আরও বেশি পরিষেবা পাওয়া যাবে বলে এদিন জানান মুখ্যমন্ত্রী। এই মুহূর্তে মোট ১৮ টি বিভাগের পরিষেবা মেলে। এবার আরও ৬ টি বাড়তি পরিষেবা পাওয়া যাবে ‘দুয়ারে সরকার’ শিবিরে। মৎস্যজীবী, শিল্পী, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প, প্রাণিসম্পদ বিকাশ দপ্তরের জন্য নির্দিষ্ট ক্রেডিট কার্ডও মিলবে এই ক্যাম্প থেকে। এমনই জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবারের ‘দুয়ারে সরকার’ চলবে ১৫ মার্চ পর্যন্ত। যেখানে যেটুকু পরিষেবা দেওয়া বাকি আছে, এবারের ক্যাম্প থেকে তা সম্পূর্ণ করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
[আরও পড়ুন: চিড়িয়াখানার রক্ষীকে মেরে সঙ্গী সিংহকে নিয়ে চম্পট সিংহীর, আতঙ্ক শহরজুড়ে]
এই প্রসঙ্গেই আসে ‘স্টুডেন্টস ক্রেডিট কার্ডে’র কথা। তা নিয়ে ক্ষোভ উগরে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ”এই কাজের ক্ষেত্রে সবচয়ে অসহযোগিতা করছে ব্যাংকগুলি। তারা ঠিকমতো ঋণ দিচ্ছে না। কো-অপারেটিভ ব্যাংকগুলিকেও অনেকবার বলা হয়েছে। সরকারের টাকা ব্যাংকের না দেওয়ার কী আছে? সরকার তো এই বাবদ টাকা দিয়েছে। যে সব ব্যাংক এই টাকা দিতে চাইছে না, তাদের আর গুরুত্ব দেওয়ার দরকার নেই। সমবায় ব্যাংকগুলি এই টাকা দেবে।”
যে প্রকল্পগুলি চলছে, সেই কাজ আগে শেষ হোক। তার আগে পর্যন্ত নতুন কোনও প্রকল্প নেওয়া যাবে না। স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এ প্রসঙ্গে তাঁর পরামর্শ, বাজেটের বাইরে এক টাকাও যেন খরচ না হয়। প্রয়োজনে যে খরচ কমানো সম্ভব, তা কমাতেই হবে। কোভিড কালে যথেষ্ট প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়াই করে সবরকম জনকল্যাণমূলক পরিষেবা চালাতে হচ্ছে, তা উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
[আরও পড়ুন: কোভিডের ধাক্কা সামলে অবশেষে তৈরি চন্দ্রযান-৩, কবে চাঁদে পাড়ি জানাল কেন্দ্র]
এরপর মুখ্যমন্ত্রী কয়েকটি জেলার কাজ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। পশ্চিম বর্ধমান নিয়ে তিনি জানতে চান – ”কেন এত পিছিয়ে?” এরপর একে একে আলিপুরদুয়ার, বীরভূম জেলার কাজের অগ্রগতিও ঠিকমতো নয় বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। ১০০ দিনের কাজে বাংলা এগিয়ে থাকা সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় বাজেটে বরাদ্দ কমানো হল কেন? সেই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। এছাড়া কেন্দ্র থেকে বকেয়া ৯০ হাজার কোটি টাকা এখনও পায়নি বাংলা, তা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।