সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: পানাগড়ের ভয়াবহ দুর্ঘটনায় তরুণীর মৃত্যুর পর ২৪ ঘণ্টা পার তবু অধরা অভিযুক্তরা। পুলিশ সাফ জানিয়ে দিয়েছে, রবিবার রাতে ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কে কোনও ইভটিজিংয়ের ঘটনা ঘটেনি। বরং রেষারেষির বলি হয়েছেন ইভেন্ট ম্যানেজার সংস্থার কর্ণধার তরুণী। পথ দুর্ঘটনার প্রমাণস্বরূপ প্রত্যক্ষদর্শীও রয়েছেন বলে দাবি পুলিশের। শুধু তাই নয়, 'ক্রেটা' গাড়ির চালক-সহ আরোহীদের মারধর করেছিল মৃতার গাড়ির আরোহীরা, এরও প্রত্যক্ষদর্শী রয়েছে পুলিশের কাছে। তবে তদন্তের মতিগতি নিয়ে প্রশ্ন তুলছে মৃতার পরিবার।
পুলিশ সূত্রে খবর, 'ক্রেটা' গাড়ির মালিকের নাম বাবলু যাদব। গাড়ির পুরনো যন্ত্রাংশের ব্যবসায়ী। স্থানীয় কাওয়ারি বাজারে এলাকা ব্য়বসা রয়েছে তাঁর। এলাকায় প্রভাবশালী হিসেবে পরিচিত। কিছুদিন আগে তাঁর এক কর্মী দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি। রবিবার রাতে তাঁকে দেখতে গিয়েছিলেন বাবলু যাদব। সঙ্গে ছিলেন তাঁর সহকর্মীরা। ফেরার পথেই নাকি সুতন্দ্রা চট্টোপাধ্যায়ের গাড়ির সঙ্গে রেষারেষি শুরু হয় বলে দাবি। তারপরই রাইস মিল মোড়ের কাছে বাবলু যাদবের গাড়ি দাঁড় করিয়ে আরোহীদের মারধর করে সুতন্দ্রার গাড়ির আরোহীরা। এমনকী, গাড়ির চাবি কেড়ে নেয়। এমনই দাবি পুলিশের। এই ঘটনারও প্রত্যক্ষদর্শী রয়েছে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। পুলিশ এত কিছু দাবি করলেও এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। যা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
এমনকী, 'ক্রেটা' গাড়ির কাউকে এখনও গ্রেপ্তার করা হয়নি। এমনকী, জিজ্ঞাসাবাদও হয়নি। তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন মৃতার পরিবার। বলা হচ্ছে, গাড়ি আটক করা হলেও এখনও কেন মালিকের খোঁজ পেল না পুলিশ? কেন ওই রাতে ক্রেটা গাড়িতে যারা ছিলেন, তাঁদের আটক করা হল না? কেন জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে না? যদিও অবশেষে মঙ্গলবার দুপুরে বাবলু যাদবের বাড়িতে পৌঁছে গিয়েছে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ। কিন্তু বাবলু পলাতক বলেই খবর। এদিকে থানায় পৌঁছে গিয়েছে সিআইডির দল। রুটিন মাফিক খোঁজখবর করছে তারা।
অন্যদিকে মৃতার পরিবারের দাবি ঘিরেও উঠছে প্রশ্ন। দুর্ঘটনার পরপরই তরুণীর সঙ্গীরা দাবি করেছিলেন, ইভটিজিংয়ের ঘটনা ঘটেছে। তরুণীকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু পুলিশের কাছে দায়ের করা অভিযোগে ইভটিজিংয়ের কোনও উল্লেখ নেই। কেন এমনটা হল, তা ঘিরে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।