সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আগুনে পুড়ে মৃত্যু হয়েছে রামপুরহাটের (Rampurhat) বগটুই গ্রামের শিশু,মহিলা-সহ ১০ জনের। মঙ্গলবার সকাল থেকে এই মর্মান্তিক ঘটনা রীতিমত নাড়িয়ে দিয়েছে বঙ্গ রাজনীতির ভিত। সোমবার রাতে উপপ্রধান খুনের পর মঙ্গলবার সকালের এই ঘটনায় স্বভাবতই রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে জোরকদমে। তবে প্রাথমিক তথ্যপ্রমাণ দেখে রাজ্য পুলিশের শীর্ষকর্তাদের মত, এর সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক যোগ নেই। গ্রাম্যবিবাদের জেরে এতজনের মৃত্যু। তবে ঠিক কী কারণে এমনটা ঘটল, তা খতিয়ে দেখতে অত্যন্ত তৎপরতার সঙ্গে কাজ করছে সিট।
ঘটনার সূত্রপাত সোমবার রাতে। সাড়ে আটটা নাগাদ ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে বগটুই মোড়ের একটি দোকানে বসে ফোন করছিলেন রামপুরহাট (Rampurhat) ১ নম্বর ব্লকের বড়শাল গ্রামের উপপ্রধান ভাদু শেখ। সেই সময় তিনটি বাইকে চেপে কয়েকজন দুষ্কৃতী দোকানের কাছে আসে। অতর্কিতে শুরু হয় বোমাবাজি। সঙ্গে সঙ্গে দোকানে থাকা অন্যরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। কিন্তু পালাতে পারেননি ভাদু। অভিযোগ, তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে দুষ্কৃতীরা। কিন্তু তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। এর পরই ভাদুকে লক্ষ্য করে বোমা ছোঁড়ে তারা। বোমার আঘাতে রক্তাক্ত অবস্থায় ঘটনাস্থলে লুটিয়ে পড়েন তিনি। পরে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে রামপুরহাট হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
[আরও পড়ুন: রাজস্ব আদায়ে নয়া রেকর্ড! মশার লার্ভা ‘পুষে’ জরিমানা বাবদ কলকাতা পুরসভার আয় তিরিশ লক্ষ টাকা]
এরপর গভীর রাতে বগটুই গ্রামের কয়েকটি বাড়িতে আগুন লাগানো হয়। তাতেই পুড়ে মৃত্যু হয়েছে এতজনের। ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনা করে দিনের শুরুতেই নবান্নে জরুরি বৈঠক হয়। ছিলেন রাজ্য পুলিশের ডিজি ও অন্যান্য শীর্ষ পুলিশ আধিকারিকরা। এরপরই সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্য পুলিশের ডিজি মনোজ মালব্য সাফ জানান, এই ঘটনার পিছনে রাজনীতির যোগ নেই। গ্রাম্য বিবাদ বা পারিবারিক দ্বন্দ্বের জেরেই এমনটা ঘটে থাকতে পারে। তবে সবটাই তদন্তসাপেক্ষ।
ডিজি আরও জানান, সাত-আটটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। একটি বাড়ি থেকেই ৭ জনের দগ্ধ দেহ উদ্ধার হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ২ জন শিশু ও ৬ জন মহিলা রয়েছেন। ঘটনায় ইতিমধ্যেই ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সিট ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করেছে। ADG, CID জ্ঞানবন্ত সিংয়ের নেতৃত্বে টিমে রয়েছেন DIG, CID (অপারেশন) মিরজ খালিদ, আইজি, পশ্চিমাঞ্চল ভরতলাল মিনা। ডিজির বক্তব্য নিয়ে একটা প্রশ্ন থাকছেই। সিটের প্রাথমিক রিপোর্টের আগেই তিনি রাজনীতির যোগ উড়িয়ে দিলেন কীভাবে।
[আরও পড়ুন: রামপুরহাট কাণ্ডে দ্রুত প্রশাসনিক পদক্ষেপ, সিট গঠন করে সরানো হল OC, SDPO-কে]
তবে এ নিয়ে বিধানসভায় বিবৃতি দিয়ে রাজ্যের পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্য়ায় জানিয়েছেন, ”এটি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। রাজ্যকে বদনাম করার জন্য এটি করা হয়েছে।” মর্মান্তিক ঘটনা নিয়ে টুইটে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি নিয়ে ফের সরব হন। এ বিষয়ে মুখ্যসচিবের কাছে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন তিনি।