দেবব্রত মণ্ডল: সুপার সাইক্লোন আমফানের প্রভাবে উপকূলবর্তী অঞ্চলের মানুষদের সরিয়ে আনা হয়েছে ত্রাণ শিবিরে। ফলে ত্রাণ শিবিরগুলিতে এখন উপচে পড়া ভিড়। প্রশাসনিক ব্যবস্থা ছাড়াও স্থানীয় মানুষজন নিজেদের মতো করে বিভিন্ন স্কুল কলেজে এবং বড় বড় বাড়িতে গিয়ে থাকতে শুরু করেছেন। সেখানে এখন প্রতিটা মানুষ যেভাবে অবস্থান করছেন, তার ছবিটা বেশ ভয়াবহ। দুর্যোগ থেকে বাঁচতে গিয়ে করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে শিবিরগুলিতে। জীবনে বাঁচার তাগিদে এবং আমফান থেকে রক্ষা পেতে তাতে মানা হচ্ছে না কোন সামাজিক দূরত্ব। আর এই সামাজিক দূরত্ব না মানার কারণে আমফান পরিস্থিতির পর বাড়তে পারে করোনা সংক্রমণ। এই বিষয়টিই ভাবিয়ে তুলছে প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার প্রায় শতাধিক ত্রাণ শিবিরে রাখা হয়েছে প্রায় আড়াই লক্ষ মানুষকে। প্রশাসনিক পরিসংখ্যান এই থাকলেও এর বাইরে বহু মানুষ নিজেদের উদ্যোগে চলে গেছেন বিভিন্ন স্কুলগুলিতে। কারণ বহু কাঁচা বাড়ি ইতিমধ্যে ভাঙতে শুরু করে দিয়েছে। ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে মাটির বাঁধগুলি। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে বহু মানুষ শেষ সময়ে চলে এসেছেন বিভিন্ন স্কুল ও আশপাশের পাকা বাড়িতে। কুলতলিতে যতগুলি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছিল তার থেকেও অনেক বেশি ত্রাণশিবিরে প্রয়োজন ছিল বলে জানিয়েছেন স্থানীয় প্রাক্তন বিধায়ক জয়কৃষ্ণ হালদার। তিনি বলেন প্রতিটি স্কুলে ৫০০-৬০০ মানুষ উপস্থিত হয়েছেন।
[ আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রে মিলছে না পর্যাপ্ত খাবার! ক্ষুব্ধ ফ্রেজারগঞ্জের দুর্গতরা ]
এলাকার যে সমস্ত ত্রাণ শিবিরগুলিতে আমফান দুর্গতদের রাখার পরিকল্পনা করা হয়েছিল, প্রশাসনের তরফে সেগুলিকে স্যানিটাইজার করা হয়েছিল সমস্ত নিয়ম মেনে। প্রথমদিকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সকলকে ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু বুধবার দুপুরের পর থেকে পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে। মানা যায়নি আর কোনও সামাজিক দূরত্ব। প্রাণে বাঁচার তাগিদে অনেক মানুষ একসঙ্গে ভিড় করেছে একই স্কুলে বা কোনও ত্রাণ শিবিরে। শুধু স্থানীয় মানুষজন এসেছেন এমন নয়, বহু পরিযায়ী শ্রমিকও আছেন তার মধ্যে। যারা কয়েকদিন আগেই বাড়িতে ফিরেছেন। হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার কথা থাকলেও পরে বাড়ি ভেঙে পড়ায় সেই সমস্ত হোম কোয়ারেন্টাইনগুলো আর কারওর পক্ষেই মানা সম্ভব হয়নি। তাঁরা সকলেই চলে যাচ্ছেন ত্রাণ শিবিরগুলিতে।
তবে সামাজিক দূরত্ব না মানার বিষয়টি স্বীকার করতে নারাজ প্রশাসন। এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলাশাসক সাগর চক্রবর্তী বলেন “যে সমস্ত ত্রাণ শিবিরগুলোয় সরকারিভাবে মানুষকে আশ্রয় দেওয়ার আয়োজন করা হয়েছিল, প্রতিটিতে সামাজিক দূরত্ব মেনে সমস্ত মানুষকে রাখা হয়েছে। বহু ত্রাণ শিবিরগুলিতে থাকা কর্মীদেরকে এবং আশ্রয় নেওয়া মানুষদেরকে মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।”
[ আরও পড়ুন: দিঘা না সুন্দরবন – আমফান মোকাবিলায় কে এগিয়ে? জানুন বিশেষজ্ঞদের বিশ্লেষণ ]
The post ত্রাণ শিবিরে নেই সামাজিক দূরত্ব, আমফানের পর করোনার প্রভাব বাড়ার আশঙ্কা appeared first on Sangbad Pratidin.