সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: “উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি চাই না, দাঙ্গা চাই না, ভাত চাই”, দিল্লি হিংসাকে সামনে রেখে আজ কালিয়াগঞ্জের সভা থেকে বিজেপির উদ্দেশে এভাবেই সুর চড়ালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হুঁশিয়ারি দিলেন, দিল্লিতে যা হচ্ছে, তা বাংলায় হবে না। বাংলা দিল্লি নয়। আর এই বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি স্পষ্ট বুঝিয়ে দিলেন, বাংলার মাটিতে হিংসার কোনও স্থান নেই। দিল্লির ঘটনার জন্য আন্তরিক দুঃখপ্রকাশ করেন তৃণমূল সুপ্রিমো। সেইসঙ্গে নারীশক্তিকে উদ্দীপ্ত করতে তাঁর পরামর্শ, “হাতা-খুন্তি নিয়ে যেমন রান্নাঘরে কাজ করেন, তেমন কেউ বাড়িতে গিয়ে কোনও জুলুম করলে, সেগুলো নিয়ে রুখে দাঁড়ান।”

গত বছর উপনির্বাচনে ফের তৃণমূল বিধায়ক নির্বাচিত হওয়ার পর এই প্রথম কালিয়াগঞ্জে পা রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রশাসনিক পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে ভাষণ দিতে গিয়ে প্রথমকেই তৃণমূল প্রার্থীকে জেতানোর জন্য তিনি জনগণকে ধন্যবাদ জানান। বলেন, “লোকসভার পর সবটা মানুষ বুঝেছেন। আর তাই কালিয়াগঞ্জে উপনির্বাচনে আমাদের ফিরিয়েছেন। উপনির্বাচনের পর আমাদের আত্মবিশ্বাস বেড়েছে।” শুধু কালিয়াগঞ্জই নয়, গত লোকসভা নির্বাচনে গোটা উত্তরবঙ্গেই ধুলিসাৎ হয়ে গিয়েছিল রাজ্যের শাসকদল। প্রতিটি লোকসভা আসনই চলে গিয়েছিল বিজেপির দখলে। সেখানে দাঁড়িয়ে কালিয়াগঞ্জ বিধানসভার উপনির্বাচনে জয় নিয়ে আত্মবিশ্বাসী হয়ে পড়েছিল গেরুয়া শিবির। কিন্তু তাঁদের সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি। কালিয়াগঞ্জ থেকে জিতেছেন তৃণমূলের তপন দেব সিনহা। তারপর তাঁকে সামনে রেখেই ফের সংগঠন গুছিয়ে নিতে শুরু করেছে শাসকশিবির।
[আরও পড়ুন: পুলওয়ামার শহিদ বাবলু সাঁতরার বাড়িতে রাজ্যপাল, পরিবারকে দিলেন ৫ লক্ষ টাকার চেক]
এদিন কালিয়াগঞ্জের সভা থেকে নাগরিকত্ব নিয়ে সকলকে আশ্বস্ত করেছেন মমতা। তাঁর কথায়, “কেউ নাগরিকত্ব কাড়তে পারবে না। নাগরিকত্ব নতুন করে দেওয়ার দরকার নেই, আপনারা সবাই নাগরিক। বিজেপির কথায় ভুল বুঝবেন না। কেউ চিন্তা করবেন না, যে কোনও বিপদে আপনাদের পাশে পাবেন এই দিদিকে।” উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জ সংখ্যালঘু এলাকা, তার উপর বাংলাদেশ সীমান্ত খুব দূরে নয়। কাজেই এখানে CAA, NRC নিয়ে চিন্তার ছায়া পড়বে, সেটা স্বাভাবিক। আর সেকথা মাথায় রেখেই মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের আশ্বস্ত করে একথা বলেন।
[আরও পড়ুন: বকেয়া ২০০০ টাকার জন্য মালিকের শিশুপুত্রকে খুন! গ্রেপ্তার যুবক]
সোমবারের সভা থেকে বেশ কয়েকটি নতুন প্রকল্প ঘোষণা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চালু করলেন নতুন আবাস যোজন – স্নেহালয়। খেটে খাওয়া দরিদ্র মানুষজনের জন্য চালু হল ‘জয় বাংলা’ প্রকল্প, যাতে মাসে ১০০০ টাকা ভাতা পাবেন তাঁরা। আদিবাসীদের জন্য ‘জয় জহর’ স্কিমেও ওই একই সুবিধা মিলবে। শুধুমাত্র বিডিও-র কাছে আবেদন করলেই এই ভাতা পাওয়া যাবে বলে এদিন ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বেকার যুবক, যুবতীদের ব্যবসা শুরুতে উৎসাহ দিতে চালু করেছেন – ‘কর্মসাথী’ প্রকল্প। এছাড়া সংখ্যালঘুদের জন্য ‘ঐক্যশ্রী’ প্রকল্পেরও সূচনা হয়েছে এদিন। কালিয়াগঞ্জ হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা ৬০ থেকে বাড়িয়ে করে দেওয়া হল ১০০।
The post ‘দাঙ্গা চাই না, ভাত চাই’, কালিয়াগঞ্জের সভা থেকে বিজেপিকে হুঁশিয়ারি মমতার appeared first on Sangbad Pratidin.