নব্য়েন্দু হাজরা: ডেডলাইন নির্ধারণ করেও গত ডিসেম্বর থেকে তিনটি মেট্রো প্রকল্পের সূচনা পিছিয়ে গিয়েছে। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর এসপ্ল্যানেড-হাওড়া ময়দান অংশ, নিউ গড়িয়া- বিমানবন্দর প্রকল্পের নিউ গড়িয়া-রুবি অংশ এবং জোকা-তারাতলা মেট্রো স্টেশনে পরিষেবা শুরুর কথা থাকলেও তা করা যায়নি। কবে শুরু হবে তাও সঠিক করে জানানো হয়নি মেট্রোর তরফে।
শুধু এই প্রকল্পই নয়, শহর-শহরতলিতে চলা নির্মীয়মান মেট্রো প্রকল্পগুলোর কাজে সবদিক থেকে রাজ্য সরকার সাহায্য করলেও একাধিক জায়গা থমকে রয়েছে মেট্রোর কাজ। যেমন নোয়াপাড়া-বারাসত মেট্রোপ্রকল্পের কাজ। মেট্রো এবং বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের টানাপোড়েনের কারণে থমকে রয়েছে বিমানবন্দর থেকে নিউ বারাকপুর পর্যন্ত মাটির তলার অংশে সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ। রাজ্যের তরফে মাটির তলার হাইটেনশন কেবল দ্রুততার সঙ্গে সরিয়ে দিলেও থমকে থাকা কাজ এখনও শুরু করতে পারেনি মেট্রো। কবে হবে তারও কেউ সঠিক দিনক্ষণ জানাতে পারছেন না। মেট্রোর তরফে রাজ্য সরকারের সহায়তার কথা স্বীকার করে নেওয়া হলেও এখনও কাজ বন্ধ বিমানবন্দর-বিরাটি-মাইকেলনগর-নিউ বারাকপুর অংশে।
[আরও পড়ুন: কাশ্মীরের চাইতেও বেশি! লোকসভা ভোটে বাংলার জন্য কত বাহিনী চাইল কমিশন?]
নোয়াপাড়া-বারাসত মেট্রো প্রকল্পের প্রথম পর্বে নোয়াপাড়া থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত অংশের কাজ অনেকটাই এগিয়েছে। দ্বিতীয় পর্বে বিমানবন্দর থেকে বারাসতমুখী অংশের কাজ এখনও শুরু করা যায়নি। নিউ ব্যারাকপুর থেকে বারাসত পর্যন্ত অংশে রয়েছে জমির সমস্যাও। বিমানবন্দর এলাকার বাইরে ১২ নম্বর জাতীয় সড়ক বরাবর অংশে মেট্রোপথ তৈরি হবে। কিন্তু বিমানবন্দরে যেহেতু বিমান ওঠানামার বিষয়টি রয়েছে, তাই মাটির উপরে বেশি উচুঁ যন্ত্রপাতি ব্যবহার করার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ রয়েছে। সেখানেই আটকে কাজ। এর আগে মেট্রোর তরফে রাজ্যকে জানানো হয়, মাটির তলা দিয়ে মেট্রো নিয়ে যেতে গেলে ওই এলাকায় মাটির তলায় থাকা বৈদ্যুতিক কেবল সরাতে হবে। এই চিঠি পাওয়া মাত্র সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় রাজ্য।
রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার ৩৩ হাজার কিলোভোল্ট লাইনের কেব্ল সরানোর কাজ ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে। ডিসেম্বর মাসের মধ্যে কাজ শেষের কথা জানিয়ে দেওয়া হয় রাজ্যের তরফে। কিন্তু তারপরেও শুরু হয়নি কাজ। সূত্রের খবর, সুড়ঙ্গে কাজের জন্য ৩৫ মিটার ক্রেন আনার প্রয়োজন। কিন্তু যেহেতু বিমান ওঠা-নামার বিষয় রয়েছে, তাই এই ক্রেন দিয়ে কাজ করার ছাড়পত্র দেওয়া হচ্ছে না। আর তাতেই আটকে রয়েছে প্রকল্প। একইসঙ্গে আটকে রয়েছে দক্ষিণেশ্বরে মেট্রোলাইন সম্প্রসারণের কাজও। মেট্রোর জেনারেল ম্যানেজার পি উদয়কুমার রেড্ডি দিনকয়েক আগেও সাংবাদিক সম্মেলনে জানান, মেট্রো প্রকল্প বাস্তবায়নে সবদিক থেকে সাহায্য করছে রাজ্য। তার উদাহরণ নোয়াপাড়া-বারাসাত মেট্রো প্রকল্পের কাজ। এছাড়াও অন্যান্য নির্মীয়মাণ প্রকল্পগুলোতেও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে রাজ্য। তবুও গতিহীন বেশিরভাগ লাইনই।