shono
Advertisement

Breaking News

কলেজ জীবনে শহরের এখানেই সময় কাটাতেন অভিজিৎ, জানেন কোথায়?

কলকাতায় ফেরার আগে কলেজ জীবন নিয়ে নস্টালজিক নোবেলজয়ী। The post কলেজ জীবনে শহরের এখানেই সময় কাটাতেন অভিজিৎ, জানেন কোথায়? appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 04:24 PM Oct 21, 2019Updated: 05:37 PM Oct 21, 2019

গৌতম ব্রহ্ম, নয়াদিল্লি: বোর্ডে কষতে দেওয়া অঙ্ক সমাধান হয়ে গিয়েছে অনেকক্ষণ। কিন্তু শান্ত-নিরীহ ছেলেটা কখনও হাত তুলে বলতে পারেনি, “আমার হয়ে গেছে।” শিক্ষিকা নিজে এসে দেখত, সবার অনেক আগেই অঙ্ক কমপ্লিট করে ফেলেছে অভিজিৎ। নোবেল পাওয়ার দিন এমন কথাই মনে আসছিল স্কুলের বন্ধুদেরও। একটুও যে বদলাননি তিনি। “অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়”, কয়েক দশক পরে হাজার ওয়াটের ‘নোবেল মঞ্চে’ নাম ঘোষণা হতেও একইরকম নির্লিপ্ত তিনি। দিল্লিতে ‘সংবাদ প্রতিদিন’-এর মুখোমুখি হতেই নানা প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে বারেবারে ফিরে গিয়েছেন নিজের ছাত্রজীবনে। প্রেসিডেন্সিতে অর্থনীতি নিয়ে পড়ার রহস্য যেমন ফাঁস করেছেন তেমনই অঙ্ক না নিয়ে পড়ার আক্ষেপও ঝরে পড়েছে তাঁর গলায়। একাধিকবার প্রেসিডেন্সি ও সাউথ পয়েন্টের পড়ুয়া জীবনের নানা স্মৃতিতে ফিরে গিয়েছেন বাঙালি নোবেলজয়ী।

দেশ ও বাংলা নিয়ে নানা প্রশ্নের উত্তরে একাধিকবার নোবেলজয়ীর কথায় ফিরে ফিরে আসছে প্রেসিডেন্সির সোনালি দিন। ঝাঁকড়া চুলের বব ডিলানকে প্রেসিডেন্সি চিনিয়েছিলেন অভিজিৎ। গিটার নিয়ে সামান্য টুং টাং। ‘ব্লোয়িং ইন দ্য উইন্ড’, ‘ডাউন দ্য হাইওয়ে’ দিয়ে তখন দৌড় শুরু করেছে অভিজিতের বন্ধুরা। বাবা দীপক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্লাস শুরু হলেই পেছনের বেঞ্চে চলে যেতেন। বসে থাকতেন মাথা নিচু করে। সুযোগ পেলেই চলে যেতেন কফি হাউসে। গানের শেষটা শেষ হত সেখানেই। কলেজ জীবনে এমনটাই ছিলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। টিভিতে অভিজিতের নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তির পর সহপাঠীদেরও সেই স্কুল-কলেজ জীবনের স্মৃতি ফিরে ফিরে আসছে। অন্যতম প্রিয় বন্ধু অভিজিৎ পাঠকের কথায়, “আমাদের কয়েকটা আড্ডার ঠেকের মধ্যে কলেজ স্ট্রিট একটা। যাতে চিন্তার খোরাক রয়েছে ঝিমার সেটাই পছন্দ। ওর আগ্রহেই চার্লি চ্যাপলিনের মডার্ন টাইমস আর গ্রেট ডিক্টেটর দেখেছিলাম।” স্মৃতিচারণায় তিনি জানিয়েছেন, “‌একই নাম হওয়ায় বন্ধুদের কাছে ডাকনাম ‘‌ঝিমা’‌ হিসেবেই জনপ্রিয় ছিল অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়।”

Advertisement

[আরও পড়ুন: ভবানীপুরে হর্ন বাজানোর প্রতিবাদ করায় খুন, আত্মসমর্পণ অভিযুক্ত আইনজীবীর]

মঙ্গলবার কলকাতায় ফিরছেন ঘরের ছেলে অভিজিৎ। তাঁর পছন্দের রান্না তৈরি করে ফেলেছেন মা নির্মলা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানিয়েছেন, “কলকাতায় আসবে আর ছেলের পাতে মাছ থাকবে না তা কি হয়!” তবে প্রত্যেকবার রান্না করলেও এবার হয়তো ব্যস্ততার কারণে আর ছেলের হেঁসেলে ঢোকা হবে না। অনেক লোক আসবে অভ্যর্থনা জানাতে। এদিকে বিজেপি নেতা রাহুল সিনহার বক্তব্যে আমল দেননি নোবেলজয়ীর মা। দ্বিতীয় স্ত্রী বিদেশি হলেই নোবেল পাওয়া যায় এমন বেলাগাম কথার উত্তরে নির্মলাদেবী জানিয়েছেন, “এটা তো বেশ ভাল। তাহলে উনিও একটা বিয়ে করুন।” এতদিন বাদে বন্ধু নোবেল হাতে ফিরছেন। ফিরে ফিরে আসছে ডোভার লেনে সঙ্গীত সম্মেলনে রাগ ভৈরবী, আর ঢাকুরিয়া লেকের আড্ডায় কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স। চুটিয়ে গল্প করতেন অভিজিৎ। এমনই অতীতের গল্পে জাবর কাটছেন ছোটবেলার ‘দোস্ত’রা। নোবেলজয়ীর নিজের মনে পড়ছে প্রিয়তমা গণিতকে ছেড়ে দেওয়ার মূহূর্ত। অপেক্ষাকৃত দুর্বল প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্ক বিভাগ ছেড়ে অর্থনীতির পাশে বসেছিলেন ‘হীরের টুকরো’। অর্থনীতির চড়া রোদে সে হীরে শুধু ঝলমলই করল না। দেশ ছাড়িয়ে বিদেশের দরবারের সেরার সেরা খেতাব কুড়লো।

নোবেলজয়ীর বর্তমান ঠিকানা দিল্লির ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার। সেখানেই ৪৪ নম্বর ঘরে বসে জানালেন, অঙ্ক নিয়ে এগনোর পরিকল্পনা একেবারে পাকা। কিন্তু মুখে না বললেও বাবা দীপক বন্দ্যোপাধ্যায় ঠারে ঠোরে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন এগনোর পথ বদলালেই ভাল হয়। তৎকালীন প্রেসিডেন্সির অর্থনীতি বিভাগ যে কিছুটা হলেও এগিয়ে ছিল অঙ্কের তুলনায়। বাবার কথা শুনেই তারপর এগিয়ে যাওয়া। কলেজ জীবনের স্মৃতি উঠে এল বন্ধু অভিজিৎ পাঠকের কথায়। জানিয়েছেন, “ ও আমার চেয়ে অনেক ভাল ছাত্র ছিল। কিন্তু কলেজে আমরা দুই অভিজিৎ পাল্লা দিয়ে ফার্স্ট সেকেন্ড হতাম।” পার্ট ওয়ানে ফার্স্ট ক্লাস পায়নি নোবেলজয়ী। তবে পার্ট টুতে তাঁর রেজাল্ট দেখে চমকে গিয়েছিল গোটা কলেজ। ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হয়েছিল সে। অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিজিৎ পাঠক দু’‌জনেই একই সঙ্গে প্রেসিডেন্সি কলেজে পড়েছেন। পরে চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্সি পড়তে চলে যান অভিজিৎ পাঠক।

The post কলেজ জীবনে শহরের এখানেই সময় কাটাতেন অভিজিৎ, জানেন কোথায়? appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement