দেব গোস্বামী, বোলপুর: বাংলার রাজনৈতিক চরিত্র ধর্মনিরপেক্ষতা রক্ষা করা। যে কোনও মূল্যে তা রক্ষা করাই কর্তব্য। তা যেন কেউ ভুলে না যায়। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের (Vishva Bharati) অধ্যাপক সংগঠনের সভাপতি সুদীপ্ত ভট্টাচার্যকে ইমেল করে ফের তা মনে করিয়ে দিলেন ভারতরত্ন তথা নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন (Amartya Sen)। বর্তমানে তিনি বিদেশে। শুক্রবার একই চিঠি তিনি পাঠান তাঁর কন্যা অন্তরা দেবসেন-সহ অন্যান্য ঘনিষ্ঠদের।
চিঠিতে বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষিতে বাংলার অটুট ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্র এবং তা রক্ষা করা নিয়ে নিজের বক্তব্য জানিয়েছেন অমর্ত্য সেন। তিনি লিখেছেন, “বাংলার প্রধান ইস্যু ধর্মনিরপেক্ষতার (Secularism) স্বপক্ষে রুখে দাঁড়ানো। প্রয়োজন শক্তিশালী প্রতিরোধ। বাংলার ধর্মনিরপেক্ষতার দীর্ঘ ঐতিহ্য থাকা সত্বেও তা সবসময় হয়ে ওঠে না। ধর্মভিত্তিক বিভাজন ছেড়ে নিরপেক্ষ রাজনীতির প্রয়োজন বাংলার। ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতিকে (Politics) পরাজিত হতে দেওয়া হবে একটি ভুল। বাংলার একতার চরিত্র আমাদের হারালে চলবে না। আমি আমার দাদু ক্ষিতিমোহন সেনের কথা ভাবছিলাম। তিনি বুঝিয়ে বলতেন, হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের গুরুত্ব প্রাথমিকভাবে পরস্পরকে সহ্য করা নয়। গুরুত্বটা তার থেকেও অনেক বেশি। বরং বলা যায় গুরুত্বটা হল একসঙ্গে কাজ করার। যেটা ঐতিহাসিক ভাবে হয়ে এসেছে বিভিন্ন ক্ষেত্রে- প্রাচুর্যময় সাহিত্য, প্রধান স্থাপত্য, বিরল কারুকার্য এবং অসংখ্য যৌথ সৃজনশীলতায়।”
[আরও পড়ুন: স্বামীজির জন্মদিনে বিবেকানন্দের বাসভবনে অভিষেক, তাঁর কাছে কী চাইলেন মহারাজ?]
দেশের বাইরে থাকলেও, শত ব্যস্ততার মধ্যে দেশের বিভিন্ন ইস্যু বা সমস্যা নিয়ে তিনি ভাবেন এবং সে বিষয়ে তাঁর সুচিন্তিত মতামত ব্যক্ত করেছেন বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের একাংশের মত, “ঐক্যবদ্ধ সংস্কৃতির পক্ষেই সওয়াল করেছেন তিনি। এককথায় সাম্প্রদায়িকতা যাতে কদর্য মাথা তুলতে না পারে সেই ধর্মনিরপেক্ষতার কথায় স্মরণ করে দিতে চেয়েছেন অধ্যাপক সেন।” যদিও লোকসভা ভোটের মুখে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদের এই বার্তা বিশেষ অর্থবহ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরাও।