সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গত এপ্রিলে এগারোটি দুর্নীতি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন আং সান সু কি (Aung San Suu Kyi)। আদালতের রায়ে পাঁচ বছরের জেলের সাজা হয় নোবেলজয়ী নেত্রীর। এবার আরও চারটি দুর্নীতির মামলায় ছ’বছরের কারাদণ্ড হল সু কি-র। সোমবার সেনা শাসিত মায়ানারের (Myanmar) একটি আদালত এই রায় দিল।
৭৭ বছরের মায়ানমারের প্রাক্তন কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে মোট আঠেরোটি অভিযোগ রয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম নির্বাচনে হিংসা ছড়ানো তথা ভোটে কারচুপি। সব মামলায় দোষী প্রমাণিত হলে ১৯০ বছরের জেল হতে পারে সু কি’র। যদিও যাবতীয় অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন নেত্রী।
[আরও পড়ুন: ‘ওঝা’র নিদানের জের, পরিচারিকাকে নগ্ন করে বেধড়ক মারধর মালকিনের]
সূত্রের খবর, সোমবার সু কি-কে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে ডাও খিন কি ফাউন্ডেশনের তহবিল তছরুপের দায়ে। নিজের শাসনকালে স্বাস্থ্য ও শিক্ষার প্রসারে এই সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন সু কি। অভিযোগ, সংস্থাকে অতিরিক্ত ছাড়ে সরকারি জমি লিজে দেওয়া হয়েছিল। যদিও গোটা বিচার প্রক্রিয়াই মেকি এবং সু কি-কে ফাঁসানো হয়েছে বলে দাবি করছেন প্রাক্তন কাউন্সিলরের সমর্থকরা।
বর্তমানে মায়ানমারের রাজধানী শহরের কারাগারে বন্দি রয়েছেন সু কি। আগেই দোষী সাব্যস্ত বেশ কয়েকটি মামলায় ১১ বছরের জেল হয় তাঁর। এদিকে অন্যবারের মতোই মায়ানমার আদালতের রায়ের বিরোধিতায় সরব হয়ছে আন্তর্জাতিক মঞ্চ। দ্রুত সু কি’র মুক্তি দাবি জানিয়েছে বিভিন্ন দেশ। কিন্তু আন্তর্জাতিক চাপের মুখেও মাথা নত করতে নারাজ প্রবল ক্ষমতাশালী জুন্টা।
[আরও পড়ুন: ‘ভারতে ফিরিয়ে আনা হোক নেতাজির চিতাভস্ম’, স্বাধীনতা দিবসেই দাবি সুভাষ কন্যার]
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি আচমকাই মায়ানমারের (Myanmar) ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। পতন হয় নির্বাচিত সরকারের। তারপর থেকেই সেনার নির্দেশে বন্দি মায়ানমারের নেত্রী আং সান সু কি (Aung San Suu Kyi)। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। আর্থিক দুর্নীতি, ভোটে কারচুপি এমনকী ভোটপ্রচারে করোনাবিধি ভাঙারও অভিযোগ রয়েছে নোবেলজয়ী এই নেত্রীর বিরুদ্ধে।
ক্যু-এর প্রায় চার মাস পর গত মে মাসে প্রথমবার তাঁকে আদালতে তোলা হয়। সেখান থেকে আইনজীবীর মাধ্যমে দেশবাসীর উদ্দেশে বার্তা দেন তিনি। ২০২০ সালে বিরোধীদের পরাজিত করে ক্ষমতা দখল করে সু কি’র দল ‘ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি’ (NLD)। মায়ানমার সংসদের নিম্নকক্ষের ৪২৫টি আসনের মধ্যে ৩৪৬টিতে জয়ী হয় তারা। কিন্তু, রোহিঙ্গা ইস্যু থেকে শুরু করে একাধিক বিষয়ে বিগত দিনে সেনাবাহিনীর সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয় সু কি সরকারের। তারপর অভ্যুত্থান পালটে দেয় গোটা চিত্র।