দীপঙ্কর মণ্ডল: অতিমারীতে চূড়ান্ত ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষা। রাজ্যের স্কুলগুলির শিক্ষার ছবি একেবারেই সুখকর নয়। তাই দ্রুত খুলে দেওয়া হোক বিদ্যালয়ের দরজা। ফের ক্লাসে ফিরুক পড়ুয়ারা। বুধবার এমন পরামর্শই দিলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়।
অ্যানুয়াল স্ট্যাটাস অফ এডুকেশন রিপোর্ট (ASER) বা বার্ষিক শিক্ষার মানের রিপোর্ট প্রকাশ করে তিনি স্কুলের শিক্ষার করুণ ছবি তুলে ধরেছেন। কলকাতার একটি হোটেলে এদিন সাংবাদিক বৈঠক করে লিভার ফাউন্ডেশন। আমেরিকা থেকে ভারচুয়ালি সেই বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন অভিজিৎ বিনায়ক (Abhijit Banerjee)। তিনি বলেন, “পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়ারা দ্বিতীয় শ্রেণির অঙ্ক করতে পারছে না। যে পদ্ধতিতে পড়ানো হচ্ছে, তাতে ছাত্রছাত্রীদের একটা অংশ ক্রমশই পিছিয়ে পড়ছে। আর একবার পিছিয়ে গেলে সেই শূন্যস্থান আর পূরণ হচ্ছে না। তার ফলে বাড়ছে স্কুলছুটের সংখ্যাও। যা কোনও রাজ্য তথা দেশের জন্যই স্বস্তিকর ছবি নয়। আর সেই কারণেই দ্রুত স্কুল খোলার পক্ষে সওয়াল করলেন তিনি।
[আরও পড়ুন: ভয় ধরাচ্ছে দেশের দৈনিক করোনায় মৃতের সংখ্যা, কোভিড চিকিৎসায় বাজারে এল ন্যাজাল স্প্রে]
এই রিপোর্টে আরও বলা হচ্ছে, করোনা কালে (Corona Pandemic) ৯০ শতাংশ পড়ুয়ার নাম স্কুলে নথিভুক্ত থাকলেও রিডিং লেভেল নেমে গিয়েছে ১০ শতাংশে। বিশেষ করে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়ারা, যারা অতিমারীর জেরে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে যেতে পারেনি, তারাই সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছে। আর এই রিপোর্ট থেকেই স্পষ্ট, কীভাবে গত এক বছরে শিক্ষার মানের পতন ঘটেছে। এই প্রসঙ্গ উল্লেখ করেই অভিজিৎবাবুর পরামর্শ, এখনই রাজ্যের স্কুলগুলি খুলে দেওয়া হোক। স্কুলে না গিয়ে অভ্যাস খারাপ হয়ে যাচ্ছে।
প্রসঙ্গত, এএসআর হল- অ্যানুয়াল স্ট্যাটাস অফ এডুকেশন রিপোর্ট। বার্ষিক শিক্ষার মানের রিপোর্ট। ১৭টি জেলার পরিবারভিত্তিক সংগৃহীত তথ্যের বিশ্লেষণ করে তৈরি হয়েছে বার্ষিক শিক্ষার মানের রিপোর্ট। দেখা যাচ্ছে, সরকারি স্কুলের পড়ুয়াদের ৬৪.৫ শতাংশের স্মার্টফোন রয়েছে। সেখানে বেসরকারি স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের ৮১.৪ শতাংশের পরিবারে স্মার্টফোন আছে। তবে পড়ুয়াদের রিডিং লেভেল একধাক্কায় অনেকটা কমেছে। উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীরা স্কুলে ফিরেছে। সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে ইতিমধ্যেই প্রথম থেকে সপ্তম শ্রেণির জন্য পাড়ায় শিক্ষালয়ের ব্যবস্থা করেছে রাজ্য সরকার। তবে অভিভাবকরাও চাইছেন, ক্লাসরুমে ফিরুন বাচ্চারা।