সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘আমার কোনও ধর্ম নেই। আমি কোথায় যাব?’ ফেসবুকের পাতায় এমন প্রশ্নই তুলেছেন নৃত্যশিল্পী মানসিয়া ভি পি (Mansiya VP)। আসলে ‘হিন্দু নন’, এই ‘অপরাধে’ ওই নৃত্যশিল্পীকে কেরলের (Kerala) একটি মন্দিরে অনুষ্ঠান করতে বাধা দেওয়া হয়েছে।
আগামী ২১ এপ্রিল ত্রিশুর জেলার কুড়ালমাণিক্যম মন্দিরে (Koodalmanikyam Temple) অনুষ্ঠান করার কথা ছিল প্রখ্যাত নৃত্যশিল্পী (Dancer) মানসিয়া ভি পি-র। কিন্তু ফেসবুক পোস্টে মানসিয়া জানিয়েছেন, ত্রিশুরের (Thrissur) ইরিঞ্জালাকুড়ার ওই মন্দির কর্তৃপক্ষ তাঁকে অনুষ্ঠান করতে নিষেধ করে বার্তা পাঠিয়েছেন। কারণ হিসাবে জানানো হয়েছে, যেহেতু তিনি হিন্দু নন, তাই মন্দিরে অনুষ্ঠান করতে পারবেন না।
[আরও পড়ুন: পাঞ্জাবেও এবার ‘দুয়ারে রেশন’! মমতার দেখানো পথে হেঁটে ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মানের]
মানসিয়া জানিয়েছেন, কুড়ালমাণিক্যম মন্দিরটি রাজ্য সরকারের দেবশ্বম বোর্ড দ্বারা পরিচালিত। তাদের তরফেই নিষেধ করা হয়েছে তাঁকে ওই মন্দিরে নৃত্য পরিবেশন করতে। মানসিয়া দক্ষিণি নৃত্যশৈলী ভরতনাট্যম (Bharatanatyam) নিয়ে বর্তমানে পিএইচডি করছেন। এর আগে তাঁকে মৌলবীদের কোপেও পড়তে হয়েছিল। প্রশ্ন তোলা হয়েছিল, মুসলিম পরিবারে জন্ম ও বেড়ে ওঠা সত্ত্বেও তিনি কেন নৃত্যের মতো একটি শিল্পের সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করেছেন।
এদিকে ফেসবুকে সাম্প্রতিক বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ ও উষ্মা প্রকাশ করেছেন মানসিয়া। জানিয়েছেন, শ্যাম কল্যাণ নামে এক সংগীত শিল্পীকে তিনি বিয়ে করেছেন এবং তারপর হিন্দু ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়েছেন। তার পরও তাঁকে হেনস্তার শিকার হতে হচ্ছে! তাঁর বক্তব্য, ‘আমার কোনও ধর্ম নেই। আমি কোথায় যাব?’ মন্দির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা জানিয়ে দিয়েছে, ‘ঐতিহ্য অনুযায়ী কেবল হিন্দুরাই এই মন্দিরে অনুষ্ঠান করতে পারবেন। আমরা শুধু মন্দিরের ঐতিহ্য ও নিয়ম অনুসরণ করেছি।’
[আরও পড়ুন: দেশে আরও কমল করোনা সংক্রমণ, ফের চিন্তা বাড়াল ঊর্ধ্বমুখী মৃত্যুহার]
মানসিয়া আরও জানিয়েছেন, মাসখানেক আগে মন্দির কর্তৃপক্ষ তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে। অনুষ্ঠানের জন্য মন্দির কর্তৃপক্ষ তাঁর নামও ছাপিয়েছিল। কিন্তু যেহেতু তিনি হিন্দু নন, তাই সেই অনুষ্ঠানে মানসিয়াকে অংশগ্রহণের অনুমতি দিতে রাজি হচ্ছেন না। এর পিছনে হিন্দুত্ববাদীদের চাপ রয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে।