জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: বিবাহিত স্বামীকে ছেড়ে প্রেমিকের বাড়িতে এসে প্রায় দু’মাস ধরে ঘর-সংসার করছিলেন এক বধূ। খবর পেয়েই মহিলার শ্বশুরবাড়ির এলাকার লোকজন এসে তাঁকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। ওই সময় গ্রামের লোকজন বাধা দিলে তাঁদেরকে মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ। ওই ঘটনায় আটজন জখম হন। কিন্তু ভালবাসাকে ফিরে পেতে এবার দিদির দূতের শরণাপন্ন হয়েছেন যুবক।
৯ এপ্রিল ঘটনাটি ঘটে বাগদা থানার সিন্দ্রানী গ্রাম পঞ্চায়েতের হরিনগর এলাকায়। পুলিশ মঙ্গলবার চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে। ধৃতদের নাম গীতু রায়, ঝরনা রায়, তপতী রায় ও বন্দনা বিশ্বাস। তাঁদের এদিনই বনগাঁ মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক অভিযুক্তদের জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
[আরও পড়ুন: বিশ্বকাপে ভারত-পাক ম্যাচের পর কোহলিকন্যাকে ধর্ষণের হুমকি! কী জানাল বম্বে হাই কোর্ট?]
বাগদার কনিয়াড়া-দুই গ্রাম পঞ্চায়েতের তেঘরিয়া গ্রামের বাসিন্দ পাপিয়া রায়ের সঙ্গে কয়েক বছর আগে পাশের বেলেটারা গ্রামের এক ব্যক্তি বিয়ে হয়। যদিও বিয়ের আগে থেকে হরিনগর গ্রামের বাসিন্দা অনুপম বাগচীর সঙ্গে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। পরিবারের লোকজন পাপিয়ার অমতেই তাঁর বিয়ে দিয়েছিল বলে অভিযোগ। বিয়ের পর তিনি অনুপমের সঙ্গে পালিয়েও যান একবার। তখন পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে। মাস দুয়েক আগে পাপিয়া ফের অনুপমের বাড়িতে গিয়ে থাকতে শুরু করেন। তাঁদের দাবি, দু’জনে মন্দিরে গিয়ে বিয়েও করেন। স্ত্রীকে ফিরে পাওয়ার জন্য অবশেষে তৃণমূল কংগ্রেসের দিদির দূতের শরণাপন্ন হন অনুপম। দিদির দূতকে জানান, তিনি পাপিয়াকে মন্দিরে বিয়ে করেছেন। তাই স্ত্রীকে ফিরে পেতে চান।
গত ৯ এপ্রিল তেঘরিয়া ও বেলেডাঙা গ্রামের লোকজন লাঠিসোটা নিয়ে অনুপমের বাড়িতে চড়াও হয়। পাপিয়া তখন স্নান করছিলেন। তাঁকে টেনে হিঁচড়ে গাড়িতে তোলার চেষ্টা হলে হরিনগর গ্রামের লোকজন প্রতিবাদ করেন। অভিযোগ, এর পরই তেঘরিয়া ও বেলেডাঙ্গা লোকজন হরিনগর গ্রামের লোকজনের উপর হামলা চালায়। ব্যাপক মারধর করে। সাতজন মহিলা-সহ আট জন জখম হন। হরিনগর বাওড়ের ধার পল্লি যুব সংঘের সম্পাদক বিপ্রজিৎ দাস থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ৷ অভিযোগ, থানায় অভিযোগ করা হলেও পুলিশের ভূমিকা ছিল নিষ্ক্রিয়। এরপরই হরিনগর গ্রামের লোকজন দল বেঁধে বাগদার বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাসের দ্বারস্থ হন। বিশ্বজিৎ বাবু কথা বলেন পুলিশের সঙ্গে। তাতে কিছুটা নড়েচড়ে বসে বাগদা থানার পুলিশ। গ্রেপ্তার করা হয় চারজনকে। বাকি অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।