বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (CAA) নিয়ে সিঁদুরে মেঘ দেখছে গেরুয়া শিবির। আদৌ এই আইন তাঁদের ভোটবাক্স ভরাতে সাহায্য করবে কিনা দেড় মাস পর ধন্ধে বিজেপি (BJP) নেতৃত্ব। নির্বাচনের মুখে সিএ লাগু হলেও দেড় মাস পরেও দেশের কোনও প্রান্ত থেকে একটিও আবেদন জমা পড়েনি বলে জানাল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। সম্প্রতি এক আরটিআই কর্মী তথ্য জানার অধিকার আইনে জানতে চান এখনও পর্যন্ত দেশের কতজন নাগরিকত্বের আবেদন জানিয়েছে? উত্তরে সোমবার মন্ত্রকের তরফে জানান হয়, এখনও পর্যন্ত একজনও আবেদন করেননি। ফলে প্রথম দফার নির্বাচনের পর এই তথ্য সামনে আশায় হতাশ বিজেপির শীর্ষনেতৃত্ব।
মার্চের ১১ তারিখ সিএএ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হতেই উল্লাসে মাতে গেরুয়া শিবির। বাংলা ছাড়াও পাঞ্জাব, তামিলনাড়ুর ভোটবাক্সে ব্যাপক প্রভাব পরবে বলে মনে করে বিজেপি নেতৃত্ব। বারবারই গেরুয়া নেতারা প্রচার করে যে এই আইন নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার আইন নয়। নাগরিকত্ব দেওয়ার আইন। পাল্টা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, রাজ্যে সিএএ লাগু করতে দেবেন না। প্রচারে বারবারই তিনি বলেন, “এই আইনের মাধ্যমে নাগরিকত্ব কেড়ে নেবে কেন্দ্রীয় সরকার। কারণ নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করলেই সঙ্গে সঙ্গে তিনি নাগরিকত্ব হারাবেন।”
[আরও পড়ুন: আমেঠি-রায়বরেলিতে মনোনয়নের আগেই রামলালার দর্শনে অযোধ্যায় রাহুল-প্রিয়াঙ্কা! তুঙ্গে জল্পনা]
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবিতেই যে বাংলার মানুষ সমর্থন জানাচ্ছে তা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের দেওয়া তথ্য থেকেই স্পষ্ট। সম্প্রতি এখ আরটিআই কর্মী মন্ত্রকে কাছে জানতে চান, অনলাইন পোর্টাল মাধ্যমে এখনও পর্যন্ত কতজন নাগরিকত্বের জন্য আবেদন জানিয়েছে। যদি করে থাকেন তাহলে তাঁরা কি নাগরিকত্ব পেয়েছেন।
জবাবে মন্ত্রকের তরফে ২৩ এপ্রিল জানান হয়, এখনও পর্যন্ত দেশের কোনও রাজ্য থেকেই একজনও আবেদন করেননি।
[আরও পড়ুন: ‘ভোট না দিন, অন্তত আমার শেষকৃত্যে আসবেন’, নিজের গড়ে আবেগঘন আবেদন খাড়গের]
তথ্য সামনে আসতেই হতাশ গেরুয়া শিবিরের নেতৃত্ব। কারণ এই আইন লাগু হওয়ার পর তাঁরা যে আশা করেছিলেন দেশের মানুষ সেই আশায় জল ঢেলে দিয়েছে বলে মনে করছেন দলের একাংশ। এইভাবে চলতে থাকলে দল ও সরকারের মুখ পুড়বে বলে মনে করছেন তাঁরা। কারণ এই আইন নিয়ে ঢালাও প্রচার চালাচ্ছে বিজেপির শীর্ষনেতৃত্ব। এমনকী প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও সরব হয়েছেন। কিন্তু তাঁদের আবেদনেও সাড়া মেলেনি। রাজনৈতিক কারবারিদের মতে, নাগরিকত্ব আইন গেরুয়া শিবিরের কাছে হিতে বিপরীত হতে পারে। মমতা বন্দে্যাপাধ্যায়ের যুক্তির পাশেই থাকার ইঙ্গিত দিচ্ছে তথ্য জানার অধিকার আইনের জবাব। মানুষ আবেদন জানাতে ভয় পাচ্ছেন। পাছে নাগরিকত্ব চলে যায়।