সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাশার আল আসাদের পতনের পর দ্রুত বদলে যাচ্ছে ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি। সেখানে আলগা হচ্ছে রাশিয়ার হাত। এই অবস্থায় ৪৮ ঘণ্টায় সিরিয়ায় ৪o০টি হামলা চালিয়েছে ইজরায়েল। মনে করা হচ্ছে, এই হামলার জেরে দেশটির ৮০ শতাংশ অস্ত্রভাণ্ডার ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। বেছে বেছে অস্ত্রভাণ্ডারেই কেন আঘাত হানছে নেতানিয়াহুর সেনা? কীসের ভয়?
গত ৮ ডিসেম্বর রবিবার অবসান হয় সিরিয়ার ভয়ংকর গৃহযুদ্ধের (Syria Conflict)। বিদ্রোহীদের কাছে নতি স্বীকার করে আসাদ বাহিনী। ইস্তফা দিয়ে দেশ ছাড়েন গদিচ্যুত প্রেসিডেন্ট। প্রথম থেকেই গোটা পরিস্থিতির উপর তীক্ষ্ণ নজর রাখছিল ইজরায়েল। আসাদ সরতেই রবিবার রাত থেকে সিরিয়ায় আক্রমণ শানাতে শুরু করে ইজরায়েলি ডিফেন্স ফোর্সেস (আইডিএফ)। দামাস্কাস থেকে শুরু করে হোমসের মতো বড়বড় শহরের সেনাঘাঁটিগুলোকে নিশানা করে তারা।
এক বিবৃতিতে আইডিএফ জানিয়েছে, সিরিয়ার ৮০ শতাংশ অস্ত্রভাণ্ডার ধ্বংংস করা হয়েছে। দামাস্কাস, হোমস, টারতুস, লাতাকিয়া ও পালমিরায়ের বিমানঘাঁটি, জেট-বিধ্বংসী ব্যাটারি, ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন, যুদ্ধবিমান, ট্যাঙ্ক এবং অস্ত্র উৎপাদনের কেন্দ্রগুলোতে ৩৫০টি হামলা চালানো হয়েছে। নিশানা করা হয়েছিল নৌঘাঁটিগুলোতেও। সব মিলিয়ে ১৫টি যুদ্ধজাহাজ ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে বলে খবর। প্রশ্ন উঠছে, হঠাৎ কেন সিরিয়ায় এমন বিধ্বংসী হামলা চালাচ্ছে ইজরায়েল?
১০ ডিসেম্বর ইজরায়েলি হামলায় লাতাকিয়া বন্দরে ডুবল সিরিয়ার যুদ্ধজাহাজ। ছবি: এএফপি
আইডিএফ-এর বক্তব্য, আসাদহীন সিরিয়ায় নৌঘাঁটি, সেনাঘাঁটি-সহ অস্ত্রভাণ্ডারগুলি আল কায়দা, ইসলামিক স্টেট, তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) মতো জঙ্গি সংগঠনগুলির হাতে পড়লে বিপদ হতে পারে ইজরায়েলের। সেই কারণেই কৌশলগতভাবেই ধংসযজ্ঞ চালানো হচ্ছে।
এর মধ্যেই আল জাজিরা সূত্রে খবর, এখন সিরিয়ায় ক্ষমতার রাশ রয়েছে তাহরির আল-শাম (এইচটিএস)-এর হাতে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, এই আল-শাম আল কায়দার শাখা সংগঠন হিসেবেই পরিচিত। অর্থাৎ, গৃহযুদ্ধে গণতন্ত্র ফেরানোর যে লড়াই ছিল তা কার্যত হাইজ্যাক করে নেয় জেহাদিরা। এখানেই সিঁদুরে মেঘ দেখেছে তেল আভিভ। তাই যাতে জঙ্গিদের হাতে সহজে নানা হাতিয়ার না পৌঁছয় তাই সমস্ত অস্ত্র কারখানা ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য ময়দানে নেমেছে ইজরায়েলি সেনা। চারদিনে ৪৫০টি হামলা চালানো হয়েছে। যাতে পড়শি দেশ থেকে কোনও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ ইজরায়েলের বুকে না হয়।