সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নূপুর শর্মার (Nupur Sharma) বক্তব্যের সমর্থনে সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট করায় পেশায় দরজি রাজস্থানের (Rajasthan) যুবক কানহাইয়া লাল গতকাল খুন হন। এই ঘটনায় বুধবারও উদয়পুর-সহ রাজস্থানে উত্তেজনা রয়েছে। ঘটনার তদন্তে নেমেছে এনআইএ (NIA)। সন্দেহ করা হচ্ছে, গতকালকের হত্যাকাণ্ডে যুক্ত থাকতে পারে জঙ্গি সংগঠন আইসিস (ISIS)। গতকালই গ্রেপ্তার করা হয়েছিল খুনের ঘটনায় জড়িত দুই যুবককে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে নৃশংস হত্যাকাণ্ডে জঙ্গি যোগ আছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
গতকাল দুপুরে ওই হত্যাকাণ্ডের পরে উদয়পুর-সহ গোটা রাজস্থানে উত্তেজনা ছড়ায় । নেপথ্যে হত্যাকাণ্ডের ভিডিও ও দুই অভিযুক্ত মহম্মদ রিয়াজ আখতার ও মহম্মদ গোশের ভিডি-বার্তা। সেখানে তারা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) ও বিজেপি নেত্রী নূপুর শর্মাকে (Nupur Sharma) হত্যার হুমকি দেয়। মঙ্গলবারই রাজস্থান পুলিশ বলেছিল, যেভাবে খুন করা হয়েছে কানহাইয়াকে, তাতে অনুমান করা হচ্ছে, এই ঘটনা ব্যক্তি বিশেষের নয়, বরং এর সঙ্গে কোনও সংগঠন জড়িত।
[আরও পড়ুন: ‘এবার তোমার পালা’, উদয়পুরের মুণ্ডচ্ছেদের ভিডিও ই-মেল করে খুনের হুমকি নবীন জিন্দালকে]
কিছুদিন আগে কাবুলের গুরুদ্বারে হামলার দায় স্বীকার করে বিস্ফোরক বয়ান দিয়েছিল জঙ্গি সংগঠন আইসিস (ISIS)। তারা জানিয়েছিল বিশ্বনবী হজরত মহম্মদের অপমানের বদলা নিতেই এই হামলা চালিয়েছিল তারা। নিজেদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে আইসিসের স্থানীয় শাখা জানিয়েছিল, মহম্মদের (Prophet Mohammad) অপমানের বদলা নিতেই হিন্দু এবং শিখদের টার্গেট করা হয়েছে। যারা যারা হিন্দু এবং শিখদের রক্ষা করার চেষ্টা করছে, তাদেরও রেয়াত করা হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিল জঙ্গি সংগঠনটি। ফলে উদয়পুর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আইসিস যোগ উড়িয়ে দিচ্ছে না এনআইএ।
এদিকে অশান্তি এড়াতে গতকালই গোটা রাজ্যে ইন্টারনেট সংযোগ ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছিল। উদয়পুর শহরের বড় অংশে জারি হয় কারফিউ। এছাড়াও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এলাকায় শান্তি বজায় রাখতে। মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট ঘটনার তীব্র নিন্দা করার পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে শান্তি ও সৌভ্রাতৃত্ব বজায় রাখার অনুরোধ করেছেন।
[আরও পড়ুন: প্যাকেটজাত আটা, দই, মুড়িতেও কর! GST কাউন্সিলের সুপারিশে দাম বাড়ছে কোন কোন পণ্যের?]
গতকালের ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন আজমের শরিফের (Ajmer Sharif) প্রধান আজমের দরগা দিওয়ান জয়নুল আবেদিন আলি খান। তাঁরা বার্তা, ভারতের মুসলমানরা কখনওই তালিবানি মনোভাবকে সমর্থন করে না। বলেন, “কোনও ধর্মই মানুষের বিরুদ্ধে হিংসার কথা বলে না। বিশেষ করে ইসলাম ধর্মে সকল শিক্ষাই শান্তির উৎস হিসেবে কাজ করে।” আরও বলেন, “ইন্টারনেটে যে ভয়ংকর ভিডিও ছড়িয়েছে, সেখানে স্পষ্ট, কিছু অনৈতিক মানসিকতা একজন দরিদ্র ব্যক্তির উপর নৃশংস আক্রমণ করেছে। ইসলাম এই কাজকে শাস্তিযোগ্য পাপ বলে মনে করে।” এরপরেই আজমের শরিফের প্রধান বলেন, “মাতৃভূমিতে তালিবানি মানসিকতা কখনওই মেনে নেবে না ভারতের মুসলিমরা।”