সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আধার জটে অসমে ‘বঞ্চিত’ লক্ষ লক্ষ মানুষ। পাচ্ছেন না বিনামূল্যের রেশনও। সোমবার এই কথা মেনে নিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। বিধানসসভায় বিরোধীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, এনআরসির জন্য বায়োমেট্রিক লক রয়েছে অনেকের। ফলে আধার-বঞ্চিত প্রায় ২৭ লক্ষ মানুষ। এই সমস্যার এখনই সমাধান সম্ভব নয়।
সোমবার বিধানসভায় আধার বঞ্চিতদের হয়ে সরব হন অসমের কংগ্রেস বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ। রাজ্য ও কেন্দ্রকে তোপ দেগে করিমগঞ্জ উত্তরের বিধায়ক নাকি বলেন, বঞ্চিতদের মধ্যে অনেক ‘রামভক্ত’ও রয়েছেন। পালটা হিমন্ত কটাক্ষ করেন, “রামভক্তদের জন্য আমরা ব্যবস্থা ভেবে রেখেছি। তবে দেখবেন আপনার ও আপনার পাশে যাঁরা রয়েছেন তাঁরা যেন আপত্তি না করেন।” অর্থাৎ, ইঙ্গিতে নাগরিকত্ব আইনের কথা মনে করিয়ে দিয়ে কংগ্রেস ও বদরুদ্দিন আজমলের এআইইউডিএফ-কে খোঁচা দেন হিমন্ত।
বলে রাখা ভালো, ২০১৮ সালে প্রকাশিত হয় অসমের এনআরসি খসড়া। বাদ পড়ে প্রায় ৪০ লক্ষ মানুষের নাম। পরের বছর চূড়ান্ত খসড়া প্রকাশিত হলে দেখা যায় বাদ পড়েছেন অন্তত ২০ লক্ষ মানুষ। এনআরসির প্রথম খসড়ায় নাম না থাকার ভিত্তিতে বায়োমেট্রিক লক থাকায় রাজ্যের ২৬ লক্ষ ৫২ হাজার ৭৮৪ জন মানুষ কেন্দ্রীয় সুবিধা, বিভিন্ন প্রকল্প, চাকরি, শিক্ষা, এমনকি বিনামূল্যের চালের সুবিধা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন, যা দুর্ভাগ্যজনক। এ কথা মেনে নিয়েছেন হিমন্ত। তিনি জানান, রাজ্যের প্রকল্পগুলোর জন্য আধার বাধ্যতামূলক নয়। কিন্তু কেন্দ্রীয় প্রকল্পের জন্য তা প্রয়োজন। অনেককেই বিনামূল্যে চাল দেওয়া যাচ্ছে না।
এদিন হিমন্ত জানান, এনআরসি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সরকারের হাত-পা বাঁধা। আদালত বলেছিল, চূড়ান্ত এনআরসিতে নাম ওঠা সকলে আধার পাবেন ও নাম না থাকা ব্যক্তিরা ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের বিচার সাপেক্ষে তা পাবেন। কিন্তু যে হেতু কেন্দ্র এখনও এনআরসির চূড়ান্ত তালিকাকে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন সাপেক্ষে ও আরজিআই বিজ্ঞপ্তির ভিত্তিতে আনুষ্ঠানিক রূপ দেয়নি, তাই বায়োমেট্রিকও লক রয়েছে।