সুব্রত বিশ্বাস: স্টাফ স্পেশ্যালে (Staff Special) রেলকর্মীদের জন্য নির্ধারিত কামরায় উঠে পড়ায় ‘হেনস্তা’ করা হল মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীকে। প্রথমে বচসা ও পরে হাতহাতি পর্যন্ত বেঁধে যায় ওই কামরায়। শেষমেশ রেলকর্মী ও মহিলা আরপিএফ কর্মীকে মারধর করার অভিযোগে এনআরএসের স্বাস্থ্যকর্মী তনুশ্রী চৌধুরিকে গ্রেপ্তার করল আরপিএফ (RPF)। আদালতে ওই স্বাস্থ্যকর্মী আরপিএফের বিরুদ্ধে পালটা অভিযোগ করেন।
ঘটনার সূত্রপাত দশটা নাগাদ। শিয়ালদহগামী ডায়মন্ড হারবার লোকালে বারুইপুর থেকে চড়েন তনুশ্রীদেবী। ১২ কামরার ট্রেনের ছ’টি রেলকর্মীদের জন্য সংরক্ষিত। বাকি ছ’টি কামরা রাখা হয়েছে যে সব কর্মীদের ‘স্টাফ স্পেশ্যালে’ ছাড় দেওয়া হয়েছে তাদের জন্য। ওই মহিলা স্বাস্থ্যকর্মী রেলের সংরক্ষিত কামরাতে চড়েন। ফলে রেলকর্মীরা তাঁকে অন্য কামরায় যাওয়ার জন্য বলেন। তিনি সে সময় কামরা বদল করতে চাননি বলে অভিযোগ। এই নিয়ে উভয়পক্ষের বচসাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায়।
[আরও পড়ুন: অধীরের জন্যই নির্বাচনে ভরাডুবি! পদত্যাগ চেয়ে নতুন করে বঙ্গ কংগ্রেস সাজানোর দাবি]
সোনারপুর এলে উত্তেজনা চরমে ওঠে। মহিলা আরপিএফ এসে তনুশ্রী চৌধুরিকে অন্য কামরা চলে যেতে বললেও তিনি যেতে অস্বীকার করেন। এরপর মহিলা এসআই রিনাকুমারী তাঁকে ট্রেন থেকে নামানোর চেষ্টা করলে খড়গহস্ত হন স্বাস্থ্যকর্মী বলে আরপিএফের অভিযোগ। এই সময়ে তিনি রিনাকুমারীর গায়ে হাত দেন। ওই স্টেশনে বেশি সংখ্যক মহিলা আরপিএফ থাকায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৪৫ ও ১৪৬ ধারায় তাঁকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠায় আরপিএফ। পরে ওই স্বাস্থ্যকর্মীও পালটা অভিযোগে আরপিএফ কর্মীদের অভিযুক্ত করেন।
স্টাফ স্পেশ্যালে ট্রেনে স্বাস্থ্যকর্মীদের ছাড় দেওয়া হয়েছে আগেই। আরপিএফের অভিযোগ, মহিলা গ্রেপ্তারের আগে পর্যন্ত নিজের পরিচয় দেননি। এমনকী, তাঁকে গ্রেপ্তারের পর মেডিক্যাল চেক আপে জন্য সোনারপুর রেলের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকের সঙ্গে তিনি দুর্ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ।
[আরও পড়ুন: গাড়ির জানলা থেকে ঝুলছে ৩ যুবকের দেহ! ফের ভয়াবহ পথ দুর্ঘটনার সাক্ষী ইসলামপুর]
বিএসএনএল, পুলিশ, হাই কোর্ট কর্মীদের ট্রেন ছাড় দেওয়ার পর শুক্রবার থেকে ব্যাঙ্ককর্মীদের ছাড় দেওয়ায় এদিন ট্রেনে ভিড় হয় বেশি। ফলে ওই কামরায় মহিলার ওঠা নিয়ে রেলকর্মীরা প্রতিবাদ করেন বলে জানিয়েছেন। প্রায় দু’ডজন রেলকর্মী আরপিএফকে লিখিত অভিযোগ জানান ওই স্বাস্থ্যকর্মীর বিরুদ্ধে। রাজ্য সরকারের কাছে রেল আগেই জানতে চেয়েছে, কত সংখ্যক ব্যাঙ্ক কর্মী ট্রেনে চড়বেন। তাই দেখে তারা ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো থেকে মান্থলি বিক্রির জন্য কাউন্টার ও কর্মী নিয়োগ করবেন। কিন্তু রাজ্য সরকার সেই উত্তর না জানানোয় বিস্ময় প্রকাশ করেন পূর্ব রেলের এজিএম অনীত দুলাত। তিনি বলেন, “আমি অত্যন্ত সিনিয়র প্রশাসনিক কর্তা। ফলে এই প্রশ্নের উত্তর রেলের তরফে দেওয়া উচিৎ ছিল। তাতে কাজের সুবিধা হত।”