নন্দন দত্ত, সিউড়ি: এক উপপ্রধান খুনের পর অশান্তির জেরে আগুনে পুড়ে মৃত্যু হয়েছে ১০ জনের! বীরভূমের রামপুরহাটে (Rampurhat) এমন নৃশংস কাণ্ডে অতি দ্রুত পদক্ষেপ নিল প্রশাসন। ঘটনার গুরুত্ব, ব্যাপকতা বুঝে তদন্তের স্বার্থে তৈরি করা হল বিশেষ তদন্তকারী দল SIT. দায়িত্ব, কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে ক্লোজ করা হল রামপুরহাট থানার ওসি, আইসিকে। অপসারিত এসডিপিও। ইতিমধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্তের কাজে তদারকি করছেন বীরভূমের পুলিশ সুপার নগেন্দ্র ত্রিপাঠি। এই মুহূর্তে ব্যাপক উত্তেজনা রামপুরহাটের ১ নং ব্লকের বগটুই গ্রামে। রাজনৈতিক চাপানউতোর চলছে জোরকদমে।
বগটুই গ্রামে অগ্নিসংযোগে এতজনের মৃত্যুর খবর পেয়েই নড়েচড়ে বসে নবান্ন (Nabanna)। সবরকমভাবে প্রশাসনিক পদক্ষেপ নিতে ঝাঁপিয়ে পড়েন কর্তারা। নবান্নে সঙ্গে সঙ্গে মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, রাজ্য পুলিশের ডিজি জরুরি বৈঠক করেন। গোটা ঘটনার রিপোর্ট তলব করা হয় নবান্নের তরফে। এর পরপরই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim) রামপুরহাটে রওনা দেন। তাঁর সঙ্গে ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন জেলার তিন তৃণমূল বিধায়ক। ADG, CID জ্ঞানবন্ত সিংয়ের নেতৃত্বে তৈরি হয়েছে সিট। সেই টিমে রয়েছেন দুই আইপিএস মিরাজ খালিদ ও সঞ্জয় সিং। তাঁরা দুপুরের মধ্যে প্রাথমিক রিপোর্ট দিতে পারেন বলে খবর। তবে তদন্তের প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে ওসি ও এসডিপিওকে সরানো হয়েছে।
[আরও পড়ুন: উপপ্রধান খুনের পর অগ্নিগর্ভ রামপুরহাট, আগুনে পুড়ে মৃত ১২, অধিকাংশই মহিলা]
এদিকে ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হলেও তৃণমূলের (TMC) মিডিয়া কো-অর্ডিনেটর কুণাল ঘোষ দাবি করেছেন, বগটুই গ্রামে অগ্নিকাণ্ডের সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই। তাঁর বক্তব্য, উপপ্রধান ভাদু শেখের হত্যাকাণ্ড রাজনৈতিক প্রতিহিংসা, তবে আজকের অগ্নিকাণ্ডে এতজনের মৃত্যু একেবারেই রাজনৈতিক নয়। আসল ঘটনা খুঁজে বের করতে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু হয়েছে। একই বক্তব্য জেলার তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলেরও। তিনি শর্ট সার্কিটে বিপত্তির দাবি তুলেছেন।
[আরও পড়ুন: ট্যাংরার পর নিউ আলিপুর, রঙের গুদামে বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডে ব্যাপক আতঙ্ক এলাকায়]
বিজেপির (BJP) রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার অবশ্য এতজনের মৃত্যুর মতো মর্মান্তিক ঘটনায় রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে দায়ী করে মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগ দাবি করেছেন। সিপিএম (CPM) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের দাবি, ওই এলাকায় বালিখাদান, কয়লাখাদানে লুটের টাকার ভাগ নিয়ে বচসা, তার জেরে এই গণহত্যা।