সৌরভ মাজি, বর্ধমান: নাতনি হয়েছে। ঘরে লক্ষ্মী এসেছে। খুশিতে আত্মহারা দাদু। আর সেই খুশি ভাগ করে নিতে গ্রামেরই প্রাথমিক স্কুলের পড়ুয়াদের জন্য বিশেষ আহারের ব্যবস্থা করেন।
বুধবার পূর্ব বর্ধমানের রায়না-২ ব্লকের লোহাই গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মিড ডে মিলে স্পেশাল মেনু ছিল গ্রামেরই কাশীনাথ কুণ্ডুর সৌজন্যে। তাঁর একমাত্র ছেলে আদর্শ কুণ্ডু ও বউমা সুপ্রীতি কুণ্ডুর প্রথম সন্তান, কন্যার জন্ম হয়েছে কয়েকদিন আগে। নাতনির নাম রেখেছেন অত্রিকা। কাশীবাবু চাষাবাদ নিয়ে থাকেন। ছেলে ব্যবসা করেন। নাতনি ঘরে আসার খুশিতে স্কুলের পড়ুয়াদের জন্য বিশেষ খাবারের ব্যবস্থা করেন কাশীনাথবাবু।
এদিন সকাল থেকেই ছিল স্কুলে ব্যস্ততা। বিশেষ এই দিনে পড়ুয়াদের সঙ্গে ছিলেন রায়না-৩ চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক দেবব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অভিজিৎ ভট্টাচাৰ্য, রায়না-২ ব্লকের মিড ডে মিল আধিকারিক চন্দন সরকার। এদিন স্কুলের পড়ুয়াদের জন্য স্পেশাল মেনুতে ছিল ভাত, পোস্ত, মুরগির মাংস, চাটনি ও রসগোল্লা। পড়ুয়ারাও খুশি মিড মিলে 'ভোজ' খেয়ে।
\
বর্তমান সমাজে ছেলেদের প্রতি একটা বাড়তি টান থাকে অনেক বাবা-মায়ের। কিন্তু ছেলে-মেয়ে যে সমান সেটা অনেকেই মনে করেন না। কাশীনাথবাবু নাতনি হওয়ায় এইভাবে আনন্দ উৎসবের আয়োজন করে সকলকে সেই বার্তাই দিতে চাইলেন, ছেলে হোক বা মেয়ে সবাই সমান। তিনি বলেন, "আমার একটাই ছেলে। ছেলে-বউমার কোলে প্রথম সন্তান এসেছে। খুবই আনন্দের খবর আমার কাছে। ফুটফুটে নাতনি হয়েছে। সেই আনন্দ সবার সঙ্গে ভাগ করে নিলাম। আমার পাড়ারই স্কুল। সেখানকার ছাত্রছাত্রীদের দুপুরে একটু খাওয়ালাম। সবাই এইভাবে এগিয়ে আসুক।" স্কুলের প্রধান শিক্ষক অভিজিৎ ভট্টাচার্য জানান, কাশীনাথবাবু আগেই তাঁকে বলেছিলেন নাতনি হওয়ার জন্য স্কুলের শিশু শ্রেণি থেকে চতুর্থ শ্রেণির সবাইকে একদিন তিথি ভোজন করাবেন। পুজোর ছুটির পর এদিন উনি ৯৩ জন ছাত্রছাত্রীকে খাইয়েছেন।