সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বধূ স্বামীকে ছেড়ে নতুন সংসারে। রাস্তায় দুধে স্নান স্বামী, ছেলের। রাস্তায় স্নান করে ‘শুদ্ধিকরণ’ শ্বশুরেরও! ১৮ বছর আগে নলহাটি ২ ব্লকের বান্দখালা গ্রামের দেলওয়ারা হোসেনের সঙ্গে গ্রামেরই সাবিনা ইয়াসমিনের বিয়ে হয়। সংসার জীবনে ১৬ বছরের এক ছেলে ও ১৩ বছরের এক মেয়ে আছে। গ্রামবাসীরা জানায়, বেশ কিছুদিন ধরেই তাদের সংসারে অশান্তি শুরু হয়। কারণ দেলওয়ারা বাইরে কাজে গেলে সাবিনা গ্রামেরই এক যুবকের সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। তারই চূড়ান্ত পরিণতি হয় বুধের দুপুরে। সাবিনা তাঁর ভালবাসার মানুষকে বিয়ে করে নতুন সংসারে চলে যান। তার প্রতিবাদে দেলওয়ারার বাবা নুরুল হোদা ছেলে ও নাতিকে নিয়ে বান্দখালা মোড়ে কাঁচা দুধে প্রকাশ্যে স্নান করলেন। যদিও সাবিনার পরিবারের তরফ থেকে জানানো হয়, গত ২২ অক্টোবর ডাকযোগে স্বামীকে তালাকনামার নোটিস পাঠিয়েছেন। তারপরেই তালাক হয়েছে।
নুরুল হোদা বলেন, ‘‘ইসলামিক শরিয়াতি নিয়ম মেনেই বউমাকে ঘরে এনেছিলাম। সে এখন অন্যত্র বিয়ে করে সরে গিয়েছে। ঘরকে শুদ্ধ করতে হবে। তাই দুধে স্নান করে প্রকাশ্যে সবাইকে জানিয়ে আমরা শুদ্ধ হলাম।’’ কিন্তু ডিজিট্যাল যুগে এভাবে সীতার অগ্নিপরীক্ষার মতো এমন দুধে শুদ্ধ হওয়াকে ঘিরে বিতর্ক উঠেছে। পেশায় রাজমিস্ত্রী দেলওয়ারা পরিযায়ী শ্রমিক হিসাবে বাইরে কাজে যেতেন। তারই সুযোগ নিয়েছেন তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী। তবে তাদের এই খোলা বাজারে দুধে স্নান দেখতে ভিড় জমে যায়। দেলওয়ারা বলেন, ‘‘আমরা এটাই চেয়েছিলাম। তাই ২০ লিটার দুধ কিনে সকলে মিলে এই শুদ্ধিকরণ।’’ ভাব এমন, যেন আপদ বিদেয় হল! খুশি ছেলে-শ্বশুরও।
ছেলে সালমান শেখ বলেন, ‘‘গত তিন চারমাস আগে থেকে মা আমাদের বাড়ি ছেড়ে নিজের বাড়িতে চলে গিয়েছে। লজ্জায় আমরা সমাজে মুখ দেখাতে পারছিলাম না। মা চরম ভুল করেছে। রাস্তায় বেরলেই মায়ের নামে কুকথা শুনছিলাম। মা বিয়ে করতেই আর থাকতে পারলাম না। এ জীবনে আর মায়ের মুখ দেখতে চাই না। তাই দুধে স্নান করে শুদ্ধ হলাম।’’ বৃহস্পতিবার বান্দখালা রাস্তার চৌমাথায় সপরিবারের দুধ স্নান দেখতে ভিড় জমে। কিন্তু তাদের মধ্যে থেকে কুসংস্কারের প্রতিবাদ করতে কাউকে এগিয়ে আসতে দেখা যায়নি।
