দেব গোস্বামী, বোলপুর: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে রাজনৈতিকভাবে বিরোধিতারই সম্পর্ক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তবে সৌজন্যবোধও অটুট উভয়ের। রাজ্যে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে এলে 'দিদি'র খোঁজ নেন প্রধানমন্ত্রী। আবার দুর্গাপুজোর উপহার হিসেবে মমতার তরফে মোদির পাঞ্জাবি উপহার পাওয়া বাধাধরা ব্যাপার। বঙ্গে তো বটেই, গোটা দেশেই দিদি-মোদিকে নিয়ে চর্চা তুঙ্গে। তবে এর বাইরে আরও একটি চমকপ্রদ তথ্য এই মুহূর্তে চর্চার একেবারে কেন্দ্রবিন্দুতে এসে পৌঁছেছে। তা হল বীরভূমের দুবরাজপুরে নরেন্দ্র মোদি ও মমতা আগরওয়াল নামে দুই ভাইবোন। পরিচয়পত্র বলছে, ভাইয়ের নাম নরেন্দ্র কুমার মোদি। আর তাঁর দিদি হলেন মমতা আগরওয়াল। অনেকেই বলছেন, এমনও হয়!
দুবরাজপুর পৌরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা নরেন্দ্র কুমার মোদি, বয়স ৫০। পেশায় মুদিখানা ব্যবসায়ী। নরেন্দ্রর তিন দিদির মধ্যে এক দিদির নাম মমতা আগরওয়াল মোদি। আর এই দু'জনের নাম সামনে আসতেই কার্যত চক্ষু চড়কগাছ সকলের। কৌতূহল তুঙ্গে রাজনৈতিক মহলেও। কাকতালীয়ভাবে দিদি-ভাইয়ের নামে এমন চমক তো সচরাচর দেখা যায় না। স্থানীয় বিজেপি নেতা সত্যপ্রকাশ তিওয়ারির কথায়, ''বিষয়টা বেশ মজার। আমরা আমাদের ভাইয়ের মতো নরেন্দ্র মোদিকে পেয়েছি। কাকতালীয়ভাবে তাঁর এক দিদিরও সন্ধান পাওয়া গিয়েছে, যাঁর নাম মমতা। সুতরাং এক ঘরেই আমরা মমতা এবং মোদিকে পেয়েছি। খুব ছোট থেকে আমরা তাঁকে দেখছি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মতো এই নরেন্দ্র মোদিও খুব সৎ ছেলে। সে চায়ের দোকানে গেলে এলাকার মানুষও তাঁকে মজা করে চেয়ার ছেড়ে দিয়ে বলেন, এই নরেন্দ্র মোদি এসেছে, বসতে দাও।'' দুবরাজপুর শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি স্বরূপ আচার্য বলছেন, ''কাকতালীয় হলেও বিষয়টা বেশ মজার। যেটা রাজনৈতিকভাবে হয়তো কোনওদিন সম্ভব নয়, সেটা আমরা এখানে দেখলাম।''
ভাইবোনের নাম নিয়ে এহেন চর্চায় কী প্রতিক্রিয়া তাঁদের? ভাই নরেন্দ্র মোদি বলছেন, ''আমার এবং দিদির নাম সম্পূর্ণ কাকতালীয়ভাবেই মিলে গিয়েছে দেশের প্রধানমন্ত্রী এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে। ছোটবেলায় আমার জেঠু এই নামকরণ করেছিলেন। তখন নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রীও ছিলেন না আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রীও ছিলেন না। তবে এখন বেশ ভালোই লাগে এবং আমার সৌভাগ্য যে মানুষ মজা করে হলেও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমাকে তুলনা করেন। যদিও আমি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নই, আমি শুধু একজন সাধারণ ব্যবসায়ী। আমাদের দিদি-ভাইয়ের মধ্যে সম্পর্ক খুব ভালো। ছোটবেলায় অবশ্য ঝগড়াঝাঁটি লেগে থাকত। তবে দিদির বাড়ি গেলে আমাকে রসগোল্লা খাওয়ায়। আমি কোনও দোকানে কিছু কিনতে গেলে সবাই সরে গিয়ে দোকানিকে বলে, এঁকে আগে দাও।''
নরেন্দ্র মোদির দোকানের কর্মচারী দিব্যেন্দু রজক। বিষয়টি নিয়ে তাঁর প্রতিক্রিয়া, ''বেশ ভালো লাগার বিষয় আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রীর নামও নরেন্দ্র মোদি, আবার আমাদের বাবুর নামও নরেন্দ্র মোদি। প্রধানমন্ত্রী যেমন ভালো মানুষ, বাবুও তেমনই ভালো। মাঝে মাঝে আমরাও বলি, প্রধানমন্ত্রী এসেছে। আবার তার চেয়েও বেশি মজার বিষয়, আমাদের রাজ্যের দিদির নাম মমতা, আবার বাবুর দিদির নামও মমতা। আমরা খুব উপভোগ করি এটা।''
