সুকুমার সরকার, ঢাকা: এ এক অদ্ভুত সম্পর্কের কাহিনি! শুনে আপাতভাবে মনে হবে, নিছক গল্প। কিন্তু বাস্তবে এমনটাই ঘটেছে বাংলাদেশের ঢাকায়। কর্মসূত্রে স্বামীর দীর্ঘ বিদেশযাত্রার 'সুযোগে' শ্বশুরের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক সম্পর্ক। স্বামী ফেরার পর সবটা জেনে ফেলায় প্রথমে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি। তারপরই স্বামীর রোজগার করা অর্থ ও গয়না নিয়ে শ্বশুরের সঙ্গে পালিয়ে যান ওই বধূ। বাবা আর স্ত্রীর এহেন কীর্তি দেখে থ যুবক। উপায়ন্তর না দেখে আদালতের দ্বারস্থ হলেন তিনি।
ঘটনা ঢাকার জুরাইন এলাকার। এখানকার বাসিন্দা ইব্রাহিম তাঁর স্ত্রী রুবিনা বেগম ও বাবা নূর হোসেনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। পুত্রের অভিযোগ, বিদেশ থেকে ফিরে তিনি স্ত্রী ও বাবার মধ্যে 'অসামাজিক সম্পর্ক' লক্ষ্য করেন। ইব্রাহিম জানান, ২০০৮ সালে রুবিনা বেগমকে বিয়ে করেছিলেন। দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে সুখে সংসার করছিলেন তাঁরা। তিন সন্তানের জনক ইব্রাহিম ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে পরিবারের আর্থিক স্বাচ্ছল্যের জন্য কাজ করতে সৌদি আরবে যান। সেখানে ১৫ মাস কাজ করে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে দেশে ফেরেন। তারপরই স্ত্রী রুবিনার আচরণে পরিবর্তন লক্ষ্য করেন তিনি। মাস কয়েক আগে সকালে ঘুম থেকে উঠে রান্নাঘরে গিয়ে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রী ও বাবা নূর হোসেন আপত্তিকর অবস্থায় রয়েছেন। ঘটনা দেখে হতভম্ব ইব্রাহিমের সামনে থেকে তাঁর বাবা দ্রুত পালিয়ে যান। রুবিনাকে এনিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, "নূর হোসেন তো আমার শ্বশুর, এমন ঘটনা কীভাবে সম্ভব?''
ইব্রাহিম এরপর স্ত্রীর ফোনকল রেকর্ডস ঘেঁটে বাবার সঙ্গে অস্বাভাবিক অসংখ্য ফোনালাপ ও দীর্ঘ কথোপকথনের প্রমাণ দেখতে পান। ঘটনাটি পরিবারের সদস্যদের জানালেও কোনও সমাধান মেলেনি। উলটে বাবা নূর হোসেন নাকি ছেলেকে ঢাকার বাইরে গিয়ে চাকরি করতে বলেন। এসবের পর বাবা রুবিনা বেগমকে নিয়ে বেরিয়ে যান। এত ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর ইব্রাহিম উপায় না দেখে সোজা আদালতের দ্বারস্থ হন। তাঁর অভিযোগ, বাবা নূর হোসেন একসময় এক বিচারপতির গাড়িচালক ছিলেন এবং মুক্তিযোদ্ধার পরিচয় ব্যবহার করে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করতেন। অতীতেও তার অনৈতিক আচরণের অভিযোগ উঠেছিল, কিন্তু প্রভাব ও প্রমাণের অভাবে কেউ আইনের আশ্রয় নিতে পারেনি।
ইব্রাহিম আরও জানিয়েছেন, বিদেশে থাকাকালীন ইব্রাহিম শাহজালাল ইসলামি ব্যাঙ্কের জুরাইন শাখায় প্রায় ১০ লক্ষ টাকা পাঠিয়েছিলেন। এছাড়া স্ত্রী রুবিনার কাছে ছিল প্রায় ৯ লক্ষ টাকা ও কিছু স্বর্ণালঙ্কার, যা নিয়ে সে বাবার সঙ্গে চলে গেছে। শেষ পর্যন্ত কোনও সমাধান না পেয়ে ইব্রাহিম ঢাকা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালত গোয়েন্দা পুলিশকে এনিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেন। মামলার খবর জানার পর থেকেই নূর হোসেন ও রুবিনা লুকিয়ে রয়েছেন।
