রমণী বিশ্বাস, তেহট্ট: ভালোবাসার সম্পর্ক মেনে নেয়নি পরিবার। অভিমানে আত্মহত্যা করার জন্য মোবাইল টাওয়ারের মাথায় উঠে বসল প্রেমিক যুগল! তেহট্টের ভবানীপুর এলাকায় এই গুজব নিয়ে শোরগোল শুরু হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় তেহট্ট থানার পুলিশ, ছুটে যায় বড় র্যাডার যুক্ত দমকলের একটি ইঞ্জিন। শনিবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ দমকলের কর্মীরা টাওয়ারের মাথায় উঠে দেখেন সমস্তটাই গুজব। কেবলমাত্র টাওয়ারের নিচে পড়ে রয়েছে দু'জোড়া চটি। এলাকার বাসিন্দাদের সন্দেহ হয়, প্রেমিকযুগল কোনও কারণে টাওয়ারে উঠেছিল আত্মহত্যা করার জন্য। অথবা গোটাটাই গুজব।
ঘটনা শনিবার সন্ধ্যার। ৮টা নাগাদ গ্রামে রটে যায়, জঙ্গলের মধ্যে মোবাইল টাওয়ারের কাছ থেকে এক মহিলার কণ্ঠস্বর শোনা গিয়েছে। এই রটনা কতটা সত্যি, তা যাচাই করতে স্থানীয় কয়েকজন টাওয়ারের নিচে গিয়ে দেখতে পান, দু'জোড়া চটি পড়ে রয়েছে। একজোড়া পুরুষ ও একজোড়া মহিলার। মুঠোফোনের দৌলতে সঙ্গে সঙ্গে রটে যায়, ওই প্রেমিক যুগলের সম্পর্ক বাড়িতে মেনে নেয়নি। তাই প্রেমিক যুগল আত্মহত্যা করার জন্য মোবাইল টাওয়ারের মাথায় উঠে বসে আছে। মোবাইল টাওয়ারের জায়গা নির্জন থাকায় স্থানীয়দের আশঙ্কা হয়, যুগলে টাওয়ারের উপরে উঠে আত্মহত্যা করবে।
এই কথা জানাজানি হতেই আশেপাশের গ্রামের মানুষ টাওয়ারে নিচে ভিড় জমায়। তাঁরা আলো নিয়ে টাওয়ারের উপরে দেখার চেষ্টা করেন। সেইসঙ্গে চিৎকার করে তাঁদের নেমে আসার অনুরোধ করেন। কিন্তু কেউ কোন সাড়া না দেওয়ায় তাঁরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। টাওয়ার দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা স্থানীয় বাসিন্দা অচিন্ত্য মণ্ডল স্থানীয়দের কাছ থেকে ঘটনার বিবরণ শুনে পুলিশ ও দমকলকে খবর দেন।
পুলিশ ও দমকলের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। তাঁরা নিচ থেকে বেশ কয়েকবার ডাকাডাকি করলেও কোন সাড়া পায় না। তখন দমকলের কর্মীরা টাওয়ারের উপরে উঠে দেখে সেখানে কেউ নেই। এরপর এলাকার বাসিন্দারা ঘরে ফেরে। এই 'নাটক' চলে রাত প্রায় এগারোটা পর্যন্ত। এলাকার বাসিন্দারা জানান, তাঁদের মনে হয়েছে ছেলে ও মেয়ের জুতো দেখে কোনও প্রেম সম্পর্কিত বিষয়ে দু'জন আত্মহত্যা করতে টাওয়ারে উঠেছে। তাঁদের বাঁচানোর জন্য পুলিশ ও দমকলকে খবর দেওয়ার জন্য বলা হয়। তবে জুতোজোড়া কীভাবে ওই জায়গায় এল, তা নিয়ে রহস্য দানা বেঁধেছে বাসিন্দাদের মনে।
