অর্ণব দাস, বারাসত: আলোর উৎসবে সেলুলয়েডে ভয় দেখিয়েছেন বাঙালি ভূত 'মঞ্জুলিকা'। সিনেমাহলে 'ভুলভুলাইয়া ৩' দেখতে গিয়ে যে রোম খাঁড়া হয়েছে, তা কমবেশি মেনে নেবেন সকলেই। সেই 'ভূতে'র ছায়া এবার বারাসতে! কখনও ঘুঙুর পায়ে ছমছম শব্দ, কখনও চাপা কান্নার আওয়াজ। এমন পরিবেশ 'কুহেলি' ছবির কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে যেন! এমনই সব চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটছে বারাসত শহর লাগোয়া কদম্বগাছি এলাকায়। হু হু করে সেসব ভিডিও ভাইরাল সোশাল মিডিয়ায়। যদিও সেসবের সত্যতা যাচাই করেনি 'সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল'। রহস্য উন্মোচনে পশ্চিমবঙ্গ যুক্তিবাদী মঞ্চ।
শীত এখনও পড়েনি। বিকেলের পর থেকে হাওয়ায় শিরশিরে ভাব। বিকেল ৫টার পর কার্যত গৃহবন্দি হয়ে পড়ছেন সাধারণ মানুষ। রাতে অত্যন্ত জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউই বাড়ি থেকে বের হচ্ছেন না। 'ভূত' আতঙ্কে কার্যত কাবু আট থেকে আশি। বারাসত শহর লাগোয়া পঞ্চায়েত কদম্বগাছি। এই পঞ্চায়েতের অধীনে রয়েছে উলা, বয়রা, কালসারা, কাঁঠালিয়া, জাগুলি-সহ একাধিক গ্রাম। এসব গ্রামগুলিতে বিঘার পর বিঘা জমি। কোথাও আম চাষ, কোথাও আবার বাঁশ বাগান। ঘন জনবসতিপূর্ণ এলাকা না হলেও নিত্যদিন বহু মানুষেরই যাতায়াত রয়েছে এই এলাকা দিয়ে।তবে সন্ধের পর থেকে এমনিতেই নিরিবিলি হয়ে যায় এসব এলাকা।
কদম্বগাছি এলাকায় সন্ধের পর থেকে 'ভূতে'র আতঙ্ক! নিজস্ব ছবি।
সম্প্রতি সেই নিরিবিলি পরিবেশে 'দানব' গুজবে কাবু মানুষজন। সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে একাধিক ভিডিও। আর সেটা এই এলাকার বলেই দাবি করছে কেউ কেউ। ভাইরাল ওই ভিডিওতে কখনও দেখা যাচ্ছে, এক শাড়ি পরিহিতা মহিলা রাতের অন্ধকারে যাতায়াত করছেন। তাঁর পায়ে বাঁধা রয়েছে ঘুঙুর। কাঁদতে কাঁদতে পায়ে ঘুঙুরের আওয়াজ করেছে সে। এলাকার বেশ কয়েকজন যুবক রটিয়ে দেয়, এই ভিডিওটি নাকি এলাকারই। হোয়াটসঅ্যাপেও তা ভাইরাল হয়ে গিয়েছে।
স্থানীয়রাও এই ভিডিও সম্পর্কে অবগত। সন্ধে নামলে দুয়ারে খিল এঁটে ঘরের ভিতরে থাকছেন সবাই। কিন্তু তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ আবার এসব ঘটছে বলে মানতে নারাজ। তাঁরা স্রেফ গুজব বলে ধরে নিয়েছেন। এনিয়ে পশ্চিমবঙ্গ যুক্তিবাদী মঞ্চের রাজ্য সম্পাদক প্রদীপ সরকার বলেন, ''সমস্তটাই মানুষকে বিভ্রান্ত ও অন্যপথে পরিচালিত করতে এটা রটানো হচ্ছে। শুধু বারাসত বলে নয়, বনগাঁতেও এই গুজব রটেছে। কেউ যদি নির্দিষ্ট জায়গা ও আক্রান্তের খোঁজ দিতে পারেন, তাহলে তাঁকে আমরা পুরস্কৃত করব। এনিয়ে আমরা প্রচারও শুরু করে দিয়েছি।''