রমণী বিশ্বাস, তেহট্ট: ট্রফি কিংবা মেডেলের পরিবর্তে লাঠি খেলায় বিজয়ী দলকে পুরস্কার হিসেবে দেওয়া হলো ১৮ কেজি খাসি এবং দ্বিতীয় দলকে দেওয়া হল ১৬ কেজি খাসি। নদীয়ার তেহট্ট থানার চিলাখালী হালসোনা পাড়া আমরা ক'জন মাচা কমিটির পক্ষ থেকে শনিবার সন্ধ্যা থেকে অনুষ্ঠিত হয় এই লাঠি খেলা। এই লাঠি খেলায় নদিয়া-মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন জায়গা থেকে আটটি দল অংশগ্রহণ করার কথা থাকলেও ছয়টি দল অংশগ্রহণ করে।
উদ্যোক্তারা জানান লাঠি খেলা মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রচলিত একটি ঐতিহ্যবাহী খেলা। এই খেলার উৎপত্তি সম্পর্কে বিভিন্ন মতামত রয়েছে। কেউ কেউ মনে করেন যে, লাঠি খেলার শুরু মুঘল আমলে, যখন মুঘল সৈন্যরা লাঠি দিয়ে যুদ্ধ করত। আবার কেউ কেউ মনে করেন যে, লাঠি খেলার শুরু ব্রিটিশ আমলে, যখন মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকেরা ব্রিটিশ সৈন্যদের সঙ্গে লাঠি দিয়ে যুদ্ধ করত। তবে লাঠি খেলা সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কোনও তথ্য পাওয়া না গেলেও, এটি প্রাচীন খেলা, যা বিভিন্ন সংস্কৃতি ও সম্প্রদায়ে প্রচলিত ছিল বলে মনে করা হয়। তবে একটি জনপ্রিয় মতামত হল, এই খেলা শুরু হয়েছিল যুবকদের মধ্যে শারীরিক শক্তি ও দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য।
কমিটির সম্পাদক মানিক শেখ জানান, মুসলিম সম্প্রদায়ের একাংশের মানুষ মনে করেন লাঠি খেলা তাঁদের একটি ঐতিহ্যবাহী খেলা, যা তাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে ধরে রাখে। এলাকার মানুষের আনন্দ বিনোদনের জন্য এই খেলার আয়োজন করা হয়েছিল। উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ এই খেলায় অংশ নেয়। প্রথম পুরস্কার হিসেবে ১৮ কেজি খাসি এবং দ্বিতীয় পুরস্কার হিসেবে ১৬ কেজি খাসি টিমের কর্মকর্তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এই খেলায় এক বা দুই জন খেলোয়াড় কিংবা একাধিক জন লাঠি নিয়ে একে অপরকে আক্রমণ ও প্রতিরোধ করে। এইভাবেই চলে এই খেলা। খেলার রেফারি লালচাঁদ হালসোনা জানান এই খেলা মোটামুটি ৪০ মিনিট ধরে হয়। কয়েকটি ভাগে এই খেলা হয়। সিঙ্গল লাঠি খেলায় দুই খেলোয়াড় লাঠি নিয়ে একে অপরের সঙ্গে লড়াই করে। দলগত খেলায় দুই দল একে অপরের সঙ্গে লড়াই করে।
