টিটুন মল্লিক, বাঁকুড়া: রথের বাজার। দেদার বিক্রির আশায় ফ্রিজ ভর্তি করে ইলিশ, পমফ্রেট মজুত করেছিলেন বাঁকুড়ার চকবাজারের মাছ ব্যবসায়ী মনসা ধীবর। ডিম ব্যবসায়ী শেখ মেহের আলি রেখেছিলেন ডিম। কিন্তু বাড়তি আয়ের আশাই কাল হল। মজুত করা মাছ হাপিস করে দিল চোরের দল। এই ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই তোলপাড় বাঁকুড়া শহরে। মাথায় হাত পড়েছে ব্যবসায়ীর।
মাছ ব্যবসায়ী মনসা ধীবর শুক্রবার সকালে চুরির খবর পেয়ে তড়িঘড়ি দোকানে যান। তাঁর প্রথম নজর যায় ইলিশের বাক্সের দিকে। সঙ্গে সঙ্গে মাথায় হাত! ইলিশ তো দূর, আঁশও নেই! চোর সঙ্গে করে নিয়ে গিয়েছে ভেটকি-সহ অন্যান্য মাছও। এই দৃশ্য দেখে মাথায় হাত মনসার। তিনি বলেন, "আমি ইলিশগুলো মজুত করে রেখেছিলাম। সপ্তাহান্তে ইলিশের বেশ চাহিদা থাকে। তার উপর রথ। দামও ভালো পাওয়া যাবে। কিন্তু, কীভাবে যে চোর টের পেল! একটা মাছও ছাড়েনি। সব কিছু নিয়ে গিয়েছে।" অন্যদিকে, ডিম ব্যবসায়ী শেখ মেহের আলিও বিষ্মিত। তিনি বলেন, "দীর্ঘ সময় ধরে পর পর চারটি দোকানে লুঠপাঠ চালিয়েছে। আমার দোকান থেকে নগদ টাকা, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র খোয়া গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীদের স্বার্থে পুলিশি নিরাপত্তা বাড়ানো এবং সিসিটিভি লাগানোর দাবি জানাচ্ছি প্রশাসনের কাছে।"
[আরও পড়ুন: আজই শপথ সায়ন্তিকা-রেয়াতের? শেষ মুহূর্তেও অব্যাহত টানাপোড়েন]
ব্যবসায়ী জয়দেব ধীবর বলেন, "চুরির ঘটনা এর আগেও ঘটেছে। বাজারের সামনে পুলিশ ফাঁড়ি থাকা সত্ত্বেও বারবার চুরির ঘটনা ঘটছে। এই বাজারে কোনও সিভিক ভলান্টিয়ারও পাহাড়া দেয় না।" খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন স্থানীয় কাউন্সিলর রাজীব দে। তিনি পুলিশের বিরুদ্ধে এদিন ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাঁর কথায়, "সন্ধের পর থেকে এই চক বাজার মদ-গাঁজার ঠেকে পরিণত হয়। পুলিশকে এই বিষয়ে জানালেও কোনও কাজ হয়নি। আগে রাতে এই বাজারে ডিউটিতে ছিলেন সিভিক ভলান্টিয়াররা। কিন্তু, এখন আর তাঁদের দেখা পাওয়া যায় না। যে বা যারা এই চুরির সঙ্গে যুক্ত তাদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারির দাবি জানাচ্ছি।" এই ঘটনায় অন্যান্য ব্যবসায়ীদের মধ্যেও তীব্র আতঙ্ক। এই ঘটনা প্রসঙ্গে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হেডকোয়ার্টার) সিদ্ধার্থ দর্জি জানান, পুলিশ ঘটনাটির তদন্ত করছে। তাঁর আরও বক্তব্য, "রাতে পুলিশের মোবাইল ভ্যান টহল দেয়। অনেক বড় জায়গা। এক একটা দোকান ঘোরা মুশকিল। তবে এই চুরির ঘটনায় তদন্ত করা হচ্ছে।"