সুব্রত বিশ্বাস ও ধীমান রায়: সুদে টাকা ধার নিয়েছিলেন। টাকা শোধ দিতে পারছিলেন না। সেটাই তাঁর ‘অপরাধ’। শাস্তি হিসাবে রেললাইনের ধারে প্রৌঢ়কে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ। ট্রেনের ধাক্কায় কাটা পড়ল পা-ও। মধ্যযুগীয় বর্বরতার সাক্ষী পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত দু’জনকে পাকড়াও করেছে রেলপুলিশ। তাদের দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়। অভিযোগ অস্বীকার করেছে অভিযুক্তরা।
জখম রুদ্রভৈরব মুখোপাধ্যায় রাজ্যের সেচদপ্তরের কর্মী। পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রাম কর্মস্থল তাঁর। স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে কাটোয়ার ২ নম্বর ওয়ার্ডের ফরিদপুর কলোনিতে থাকতেন রুদ্রভৈরব। কেতুগ্রাম থানার পুলিশ ও রেলপুলিশ ওই ব্যক্তিকে বৃহস্পতিবার কাটোয়া-আজিমগঞ্জ শাখার শিবলুন স্টেশনের কাছে রেললাইনের পাশ থেকে উদ্ধার করে। পুলিশ সূত্রে খবর, তাদের কাছে খবর পৌঁছয় রেললাইনে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় কেউ পড়ে রয়েছেন। সেই মতো ওই এলাকায় যায় পুলিশ। উদ্ধার করা হয় তাঁকে। উদ্ধারের সময় রুদ্রভৈরববাবুর দুই পায়ে গুরুতর আঘাত লক্ষ্য করা যায়। তাঁর একটি পা কাটা পড়েছে বলেও খবর। কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে রাতভর চিকিৎসা হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় এসএসকেএম হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: বিয়ে করতে ‘অস্বীকার’ প্রেমিকের! হেমতাবাদ থানার শৌচালয়ে ঢুকে আত্মঘাতী কিশোরী]
রুদ্রভৈরববাবুর ছেলে শৌভিকের দাবি, সহকর্মী বিশ্বনাথ সাহা ও সুদীপ ধরের কাছ প্রায় আড়াই লক্ষেরও বেশি টাকা নিয়েছিলেন তাঁর বাবা। তা নিয়ে অশান্তি চলছিল। তারাই বৃহস্পতিবার একটি বাইকে করে রুদ্রভৈরববাবুকে রেললাইনের ধারে নিয়ে যায়। বেহুঁশ করে হাত-পা বেঁধে রেললাইনের পাশে ফেলে দেওয়া হয় রুদ্রভৈরববাবুকে। এরপরই ট্রেনে পা কাটা পড়ে তাঁর।
রেলপুলিশ বিশ্বনাথ সাহা ও সুদীপ ধরকে পাকড়াও করে। জেরা করা হয় তাদের। দাবি, টাকা ফেরত দিতে না পারায় অশান্তি চলছিল। তবে রেললাইনে রুদ্রভৈরববাবুকে তারা ফেলে দেননি বলেই রেলপুলিশকে জানান। রুদ্রভৈরববাবুর অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যে বলেই দাবি দুই অভিযুক্তের। হাওড়ার রেল পুলিশ সুপার পঙ্কজ দ্বিবেদী জানান, প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে আত্মহত্যারই চেষ্টা করেছিলেন জখম ওই ব্যক্তি।