সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এক দেশ এক নির্বাচন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির স্বপ্ন। বারবার এই প্রস্তাবের পক্ষে সওয়াল করেছেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু কেন একসঙ্গে গোটা দেশের নির্বাচন চাইছেন মোদি? এর সুবিধা কী? বিরোধীরাই বা কেন এর বিপক্ষে, এই প্রকল্পের সমস্যা কী?
এক দেশ এক নির্বাচনের সুবিধা:
১। বারবার নির্বাচনে বিপুল খরচে রাশ টানা যাবে। ভোটের পিছনে যেমন সরকারের খরচ কমবে, তেমন রাজনৈতিক দলগুলিরও খরচ কমবে।
২। বারবার নির্বাচনের জন্য সরকারি কাজকর্ম, সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পে থমকে যায়। একসঙ্গে ভোট হলে বারবার কাজ থমকে যাওয়া কমে যাবে।
৩। বারবার নির্বাচনের ফলে বারবার পরিশ্রম করতে হয়, ঝক্কি পোয়াতে হয় ভোটকর্মী এবং নিরাপত্তারক্ষীদের। সেটাও খানিকটা কমানো যাবে।
৪। একসঙ্গে বিধানসভা এবং লোকসভার ভোট হলে ভোটের হার বাড়তে পারে বলেও মনে করছেন অনেকে।
৫। রাজনৈতিক দলগুলিও সারাবছর ভোটপ্রচারের ঝক্কি না থাকায় মানুষের কাজে অনেক বেশি মনোনিবেশ করতে হবে।
এক দেশ এক নির্বাচনের সমস্যা:
১। সংবিধানে বহু সংশোধনী আনতে হবে। যার প্রক্রিয়া বেশ জটিল।
২। দেশের একেক রাজ্যে বিধানসভার মেয়াদ শেষ হয় একেক সময়। একসঙ্গে ভোট করাতে হলে কোনও কোনও রাজ্যের ভোট এগিয়ে আনতে হবে। কোনও কোনও রাজ্যের ভোট পিছিয়ে দিতে হবে। যা পদ্ধতিগতভাবে চরম সমস্যার। তাছাড়া লোকসভা এবং বিধানসভা ভোট চরিত্রগতভাবে আলাদা। রাজ্য এবং কেন্দ্রের ভোট একসঙ্গে হলে বিধানসভা ভোটের চরিত্র নষ্ট হতে পারে বলে আশঙ্কা বিরোধীদের।
৩। কোনও রাজ্যে বা কেন্দ্রে মেয়াদের মাঝপথে সরকার পড়ে গেলে ফের সেই রাজ্যে বা কেন্দ্রে নির্বাচন করানোর প্রয়োজন পড়বে। ফলে এক দেশ-এক নির্বাচনের মূল উদ্দেশ্য সাধিত হবে না।
৪। সংবাদসংস্থা পিটিআইয়ের খবর অনুযায়ী, দেশের লোকসভা ও সব রাজ্যে বিধানসভা ভোট একসঙ্গে হলে প্রতি ১৫ বছরে ১০ হাজার কোটি টাকা খরচ হবে শুধুমাত্র ইভিএমের (EVM) জন্য। যা বর্তমান খরচের চেয়ে অনেক বেশি। কারণ একসঙ্গে ভোট হলে প্রতি বুথকেন্দ্রে দু’টি ইভিএম দরকার পড়বে। একটি লোকসভার (Lok Sabha Elections 2024) জন্য। অন্যটি বিধানসভার জন্য। এখন যেহেতু বিধানসভা এবং লোকসভা নির্বাচন আলাদাভাবে হয়, তাই একটি কেন্দ্রে একটি ইভিএমেই কাজ চলত। এবার সেটা দ্বিগুণ হয়ে যাবে। সেই সঙ্গে দ্বিগুণ হয়ে যাবে ভিভিপ্যাটের খরচও। একটি ইভিএমের মেয়াদ সর্বোচ্চ ১৫ বছর। ফলে ১৫ বছর পর পর ইভিএমের পিছনে ওই বিপুল খরচ করতে হবে।
৫। একসঙ্গে ভোট করাতে হলে ভোটকর্মী এবং নিরাপত্তাকর্মীদের উপর অতিরিক্ত চাপ পড়বে।