ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: এবার তৃণমূল কংগ্রেসে (TMC) চালু হচ্ছে ‘এক ব্যক্তি এক পদে’র নিয়ম। অর্থাৎ, কোনও একজন ব্যক্তি একই সঙ্গে দলের এবং প্রশাসনিক স্তরের একাধিক পদে থাকতে পারবেন না। দলে শৃঙ্খলা আনতে এবং সাংগঠনিক ও প্রশাসনিক কাজ যাতে পৃথক এবং সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হয় তা নিশ্চিত করতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। শনিবার দলের কোর কমিটির বৈঠক শেষে এই সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
তৃণমূল সূত্রের খবর, এখন থেকে দল এবং প্রশাসনের কাজকে সম্পূর্ণ আলাদা করতে চাইছেন মমতা। যাতে প্রশাসনিক বা সরকারের কাজে কোনওরকম অসুবিধা না করেই দলের সংগঠন বৃদ্ধির কাজ চালিয়ে যাওয়া যায়। মূলত সেই লক্ষ্যেই ‘এক ব্যক্তি এক পদ’ নিয়ম চালু করছে শাসকদল। রাজ্যের কোনও মন্ত্রীকে আর জেলা সভাপতি বা দলের অন্য কোনও সাংগঠনিক পদে রাখা হবে না। আবার দলের কোনও পদাধিকারিকে নিয়োগ করা হবে না প্রশাসনিক পদে। জেলাস্তর থেকে একেবারে ব্লকস্তর পর্যন্ত এই নিয়ম চালু থাকবে। এই নতুন নিয়মের ফলে অন্তত চারটি জেলার জেলা সভাপতি বদল করতে হবে শাসক শিবিরকে। উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়া গ্রামীণ, পূর্ব মেদিনীপুর এবং পূর্ব বর্ধমানের জেলা সভাপতিরা এই মুহূর্তে রাজ্যের মন্ত্রীপদে রয়েছেন। এদের সকলকেই যে কোনও একটি পদ ছাড়তে হবে। ব্লকস্তরেও বহু রদবদল হবে। কারণ, একেবারে নিচের তলাতেও দেখা যায় একজন ব্যক্তিই একাধিক পদ দখল করে বসে আছেন। দলের তরফে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, আগামী এক মাসের মধ্যে যাবতীয় প্রয়োজনীয় রদবদলের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করা হবে।
[আরও পড়ুন: বড় সিদ্ধান্ত, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়]
আসলে, একুশের বিধানসভা নির্বাচনের (West Bengal Assembly Elections 2021) আগে দলে নজিরবিহীন ভাঙন দেখেছে তৃণমূল কংগ্রেস। যার অন্যতম কারণ ছিল, সাংগঠনিক বিশৃঙ্খলা এবং গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। কার্যত, গোটা রাজ্যেই একই সঙ্গে দলের একাধিক গোষ্ঠী কাজ করেছে। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে অতি সন্ন্যাসীতে গাজন নষ্টের মতো পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। একের পর এক নেতাকর্মীকে দেখা গিয়েছে স্রেফ সম্মান (পড়ুন পদ) না পেয়ে দল ছাড়তে। ২৪-এর লোকসভায় যাতে সেসবের পুনরাবৃত্তি না হয়, তা নিশ্চিত করতে চাইছেন তৃণমূল নেত্রী। আসলে এই ‘এক ব্যক্তি এক পদ’ নিয়ম চালু হলে দলের আরও বেশি নেতাকে কোনও না কোনও পদ দেওয়া সম্ভব হবে। যার ফলে কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষের পরিমাণও কমতে পারে বলে মনে করছে তৃণমূল নেতৃত্ব।