সুকুমার সরকার, ঢাকা: বিদেশের মাটিতে কেটে গিয়েছে এক বছর। স্বাধীন দেশের নাগরিক নয়, পরিচয় এখন শরণার্থী। ভিটে বলতে আশ্রয় শিবিরের নোংরা প্লাস্টিকের ছাউনি। অন্ন সংস্থান হয় অন্যের দয়ায়। বিশ্ব মানচিত্রে ব্রাত্য রোহিঙ্গাদের অবস্থা এখন এমনই। ২০১৭ সালে আজকের দিনই পালটে দেয় অনেক রোহিঙ্গার জীবন। নারকীয় হিংসার আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায় সাজানো সংসার, আপনজনেরা। তাই দেশত্যাগের বর্ষপূর্তিতে বাংলাদেশে বার্মিজ সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা।
[সাময়িক স্বস্তি, অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পেলেন অভিনেত্রী নওশাবা]
এদিন উখিয়ার কুতুপালং জাতীয় সড়কে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে অংশগ্রহণ করে কয়েক হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী। মিছিলে রাষ্ট্রসংঘের হস্তক্ষেপের দাবি জানায় উদ্বাস্তুরা। ২৫ আগস্ট দিনটিকে রোহিঙ্গা গণহত্যা স্মরণ দিবস হিসেবে পালন করার সিদ্ধান্ত নেয় বিক্ষোভকারীরা। এছাড়াও বার্মিজ সেনা ও সু কি সরকারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের দাবি জানায় রোহিঙ্গারা। মিছিলে অংশ নেওয়া হোসেন নামের এক রোহিঙ্গা শরণার্থী বলেন, “২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট বার্মিজ সেনার গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন আমার বাবা। আমার বোনকে ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়। মা বাংলাদেশে পালিয়ে আসার পথে মারা যান। সব হারিয়ে আজ আমি নিঃস্ব। তারপরও আমি আমার দেশে ফিরে যেতে চাই।” আরেক শরণার্থী জানান, আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করতেই এই মিছিল। বিশ্ব দরবারে রোহিঙ্গাদের উপর চলা অত্যাচারের বর্ণনা তুলে ধরতে হবে।
বাংলাদেশে শরণার্থীরা নিরাপত্তা পেয়েছে। খাদ্য, বস্ত্র ও বাসস্থানও জুগিয়েছে হাসিনা সরকার। তবুও কোথাও যেন দেশের জন্য মন কেমন করে। ফেলে আসা বাড়ি যেন আজও হাতছানি দেয়।তাই শরণার্থীরা নিজভূমে ফেরার দিন গুনছেন। তবে এক বছর পার হয়ে গেলেও দেশে ফেরার কোনও সম্ভাবনার দেখা মিলছে না। রোহিঙ্গা নেতা জাফর আলমের অভিযোগ, শরণার্থীদের দেশে ফেরাতে রাজি নয় মায়ানমার। ফলে বাংলাদেশের সঙ্গে প্রত্যাবাসন চুক্তি স্বাক্ষর করলেও তা বাস্তবায়িত করছে না সু কি সরকার। সব মিলিয়ে দু’দেশের টানাপোড়েনে শরণার্থীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে দেখা দিয়েছে প্রশ্ন।
[আফগানিস্তান ইস্যুতে আমেরিকার পিঠে ছুড়ি মেরেছে পাকিস্তান!]
The post রোহিঙ্গা গণহত্যার বর্ষপূর্তি, বাংলাদেশে বিক্ষোভ মিছিল শরণার্থীদের appeared first on Sangbad Pratidin.