রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্য়ায়: বিধানসভায় নতুন বিধায়কদের জন্য প্রশিক্ষণ কর্মশালা। কিন্তু সেখানে নতুনদের উপস্থিতি সেভাবে চোখেই পড়ল না। এই ছবি ধরা পড়ল শাসক ও বিরোধী উভয় শিবিরেই। যা নিয়ে কার্যত অসন্তুষ্ট স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়রা।
একুশের নির্বাচনের পর বিধানসভায় নতুন বিধায়কদের সংখ্যা অনেক। অধিবেশনে বিধায়কদের ভূমিকা কী হবে, কীভাবে প্রশ্ন করতে হবে, অর্থাৎ বিধানসভার পরিষদীয় রীতিনীতির পাঠ বোঝাতে সোমবার আয়োজন করা হয়েছিল ওরিয়েন্টেশন কোর্সের। ব্যবস্থা করেছিলেন স্পিকার। কিন্তু প্রশিক্ষণ কর্মশালা শুরুর সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন মাত্র ৪০ জনের মতো বিধায়ক। পরে সেই সংখ্যা ১০০ হলেও অধিকাংশ বিধায়কদেরই শেষপর্যন্ত দেখা মেলেনি। নতুন বিধায়কদের অনুপস্থিতির হার এত কম থাকার বিষয়টি দুর্ভাগ্যজনক বলেই মনে করছেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।
[আরও পড়ুন: ‘বৈশাখীকে ভয় দেখানো হচ্ছে’, আদালতে দাঁড়িয়ে রত্নার বিরুদ্ধে ফের ফুঁসে উঠলেন শোভন]
শাসকদলের নতুন বিধায়কদের মধ্যে জুন মালিয়া, লাভলি মৈত্র থেকে সুকান্ত পালরা ছিলেন। তবে বিরোধী বিজেপির যে পাঁচজনের উপস্থিতি দেখা গিয়েছে তাদের মধ্যেও অবশ্য নতুন বলতে একমাত্র বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অশোক লাহিড়ী ছিলেন। এদিন প্রশিক্ষণ কর্মশালায় সকাল থেকেই বিজেপি বিধায়কদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর আসন ফাঁকা ছিল। বিজেপি পরিষদীয় দলের মুখ্য সচেতক মনোজ টিগ্গা প্রথমে না এলেও পরে আসেন। বিজেপির পরিষদীয় দলের মধ্যে যে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে তা এদিন ফের স্পষ্ট হয়।
সকাল সাড়ে ১১টার সময় বিজেপি বিধায়ক বঙ্কিম ঘোষ এসে দলের কাউকে না দেখতে পেয়ে কক্ষস্থল ছেড়ে বেরিয়ে যান। হাজিরা খাতায় সই করেও তা কেটে দেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, এইধরণের কোর্সের কোনও মূল্য নেই। এসব বলে বেরনোর সময়ই বঙ্কিমবাবু দেখতে পান তাঁর পরিষদীয় দল নেতা মনোজ টিগ্গা চারজন বিজেপি বিধায়ককে নিয়ে আসছেন। তাঁদের সঙ্গে ফের প্রশিক্ষণের ক্লাসে ঢুকে পড়েন বঙ্কিম। মনোজ টিগ্গার কথায়, ‘‘এইধরণের কোর্স অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সকলের থাকা উচিত।’’এদিন উপস্থিত পাঁচজন বিজেপি বিধায়কের মধ্যে অশোক লাহিড়ী ছাড়া মনোজ টিগ্গা, বিশ্বনাথ কারক, বঙ্কিম ঘোষ, পার্থসারথী চট্টোপাধ্যায় প্রত্যেকেই পুরনো।
[আরও পড়ুন: ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ে তিনবার ভূমিকম্প তুরস্কে, কম্পন অনভূত সুদূর গ্রিনল্যান্ডেও]
উদ্বোধনী ভাষণ দিতে উঠে স্পিকার বলেন, “শ্রোতাদের থেকে বক্তার সংখ্যা বেশি। সকলে আরও বেশি সংখ্যায় এলে ভাল হত। নতুন বিধায়কদের উপস্থিতি আরও ভাল হওয়া উচিত ছিল।” নতুনদের উপস্থিতি কার্যত না থাকা নিয়ে পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “আমাদের বিধায়করাও কম এসেছে। এগুলো সমস্যা আছে। ওরিয়েন্টেশনের মাধ্যমেই কমাতে হবে। উপস্থিত থাকতে হবে শুধু নোটিস দিয়ে কাজ হবে না।”