বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: উলটপুরাণ! মহারাষ্ট্রের (Maharashtra) পালটা বিহার (Bihar)। মহারাষ্ট্রে শিবসেনা (Shiv Sena) ভাঙিয়ে সরকার দখলে সফল হলেও জোর ধাক্কা বিহারে। সেখানে সরকার হাতছাড়া। বিজেপির (BJP) হাত ছেড়ে লালুপুত্রের সঙ্গে জোট করে অষ্টমবারের জন্য বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হলেন নীতীশ কুমার (Nitish Kumar)। সরকার হাতছাড়া হতে পারে বারবার ইঙ্গিত পাওয়ার পরেও কেন হাত গুটিয়ে বসে ছিল কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তা নিয়ে গেরুয়া শিবিরের অন্দরে শুরু হয়েছে আকচাআকচি। ক্ষোভের আগুনে পুড়ছে পদ্মশিবির। শীর্ষনেতৃত্ব আগে সতর্ক হলে পাটলিপুত্র হাতছাড়া হতো না বলে ধারণা দলের একাংশের। রাজ্য নেতৃত্বের মতামতকে অতিরিক্ত গুরুত্ব দিতে গিয়েই হিন্দি বলয়ের গুরুত্বপূর্ণ এই রাজ্য থেকে মাথানিচু করে ফিরতে হয়েছে। সেইসঙ্গে নীতীশ জোট ছাড়ায় মহারাষ্টের সাফল্য অনেকটাই ফিকে হয়ে গেল মনে করছেন তাঁরা।
দু’বছর বাকি নেই লোকসভা ভোটের। তাঁর আগেই ‘অপারেশন লোটাস’ (Operation Lotus) সম্পূর্ণ করার লক্ষ্য নিয়েছিল গেরুয়া শিবির। অর্থাৎ বিরোধীমুক্ত দেশ। সেই লক্ষ্যে মহারাষ্ট্রের পর ঝাড়খণ্ড (Jharkhand) দখলে মরিয়া ছিলেন অমিত শাহ, জে পি নাড্ডারা। ঝাড়খণ্ড দখলে আনতে পারলেই অসম ও ত্রিপুরার পর বাংলা বাদে ঝাড়খণ্ড, বিহার এবং উত্তরপ্রদেশ পদ্মময় থাকত। কিন্তু, নীতীশ কুমারের চালে মাঝপথেই ধাক্কা খেল ‘অপারেশন লোটাস’। ফলে এখন ঝাড়খণ্ড নিয়েও নতুন করে ভাবতে হচ্ছে গেরুয়া শিবিরের চাণক্যদের।
[আরও পড়ুন: ৭০ কোটির সম্পত্তি, ২৪টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সন্ধান, জেল হেফাজতে ঝাড়খণ্ডের আইনজীবী]
ইতিমধ্যেই বিপুল টাকা সমেত হাওড়া পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন ঝাড়খণ্ডের তিন কংগ্রেস বিধায়ক। তদন্তের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়েছে সিআইডির হাতে। ধৃত তিন বিধায়ককে জেরা করে
বিজেপি শাসিত অসমে তদন্তে গিয়ে বাধার মুখে পড়তে হয় রাজ্যের গোয়েন্দাদের। দিল্লিতে বাধা দেয় অমিত শাহর পুলিশ।
[আরও পড়ুন: গত ২৪ ঘণ্টায় কমল রাজ্যের করোনা সংক্রমণ, জেনে নিন কোন জেলায় আক্রান্ত কতজন]
গোটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিজেপির অন্দরে শুরু হয়েছে কোন্দল। দলের শীর্ষনেতৃত্বের একাংশের মতে ‘অপারেশন লোটাস’-এর লক্ষ্যপূরণে তাড়াহুড়ো করতে গিয়েই এই বিপত্তি। মুখ থুবড়ে পড়তে হল বিহারে। ঝাড়খণ্ড দখলের পরিবর্তে হাতছাড়া হল বিহার। এর জন্য কয়েকজন শীর্ষনেতৃত্বকেই আসামির কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছে দলের একাংশ। তাঁদের মতে, দীর্ঘদিন ধরেই বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে গেরুয়া নেতৃত্বের দূরত্ব বাড়ছিল। বারবার নীতীশের তরফে সেই বার্তাও দেওয়া হচ্ছিল। নীতি আয়োগের বৈঠক কার্যত বয়কট করে চরম বার্তা দেন নীতীশ কুমার। তার পরেও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের গয়ংগচ্ছ মনোভাবের ফলে দলকে ডুবতে হল বলে অভিযোগ দলেরই বিক্ষুব্ধ অংশের।