নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: ওয়াকফ সংশোধনী বিল নিয়ে যৌথ সংসদীয় কমিটির (জেপিসি) প্রথম বৈঠক থেকেই শাসক-বিরোধী সংঘাত তুঙ্গে। ৩১ সদস্যের কমিটির প্রথম বৈঠক বসে বৃহস্পতিবার। সেখানে বিরোধী দলের সদস্যরা একযোগে বিলটির বিরুদ্ধে তীব্র আপত্তি জানিয়েছেন। বিলটি ‘সাম্প্রদায়িক এবং মুসলিম-বিরোধী’ বলে অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে বিরোধী শিবির। ওয়াকফ সংশোধনী বিলকে আগেই ‘অসাংবিধানিক এবং যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিপন্থী’ বলে বিরোধিতা করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস।
এদিন কমিটির বৈঠকে তৃণমূলের লোকসভার মুখ্য সচেতক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যসভার মুখ্যসচেতক নাদিমূল হক বিলের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন। সূত্রের খবর, বিলটি কেন অসাংবিধানিক, যুক্তি দিয়ে তার আইনি ব্যাখ্যা দিয়েছেন কল্যাণ। তাঁর বক্তব্য, বিলটি সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৪-তে বর্ণিত সাম্যের অধিকার এবং অনুচ্ছেদ ২৫ এবং ২৬-এ বর্ণিত ধর্মীয় স্বাধীনতা লঙ্ঘিত হচ্ছে। পাশাপাশি অতীতে ওয়াকফ সংক্রান্ত উল্লেখযোগ্য মামলাগুলির উদাহরণও তিনি তুলে ধরেছেন। নাদিমূল অভিযোগ করেছেন, ওয়াকফ বোর্ডকে শেষ করে দিতে চাইছে কেন্দ্র সরকার। বিলটি পাস হয়ে গেলে রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডগুলির হাতে কোনও ক্ষমতা থাকবে না। সমস্ত ক্ষমতা কেন্দ্র কুক্ষিগত করতে চাইছে, যাতে তাদের নেতা-মন্ত্রীদের হাতেই সমস্ত ক্ষমতা থাকে। কমিটির সমস্ত অংশীদার, যেমন রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডগুলি, মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ডের মতো সমস্ত সিভিক বডির সঙ্গে আলোচনার প্রয়োজন বলেও দাবি করেছেন নাদিমূল।
[আরও পড়ুন: হাজিরা না দিলে জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা! ১৮ রাজ্যের মুখ্যসচিবকে তলব সুপ্রিম কোর্টের]
বৈঠকে কমিটির চেয়ারম্যান বিজেপি সাংসদ জগদম্বিকা পাল জানান, বিলের বিবেচনায় ৪৪টি পরিবর্তন (সংশোধন) নিয়ে আলোচনা হবে। এছাড়াও, সমস্ত অংশীদারদের কথা শোনা হবে। মুসলিম বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে মতামত নেওয়া হবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
[আরও পড়ুন: সাইকেলে চড়তে গিয়েই যৌনাঙ্গে আঘাত! মহারাষ্ট্রে নির্যাতিত শিশুদের পরিবারকে বলেন প্রধান শিক্ষিকা]
এদিকে বিলটি নিয়ে যে সরকারের শরিক দলগুলি দো-টানায় রয়েছে তা কমিটির প্রথম বৈঠকেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। চিরাগ পাসোয়ানের দল এলজেপির সাংসদ অরুণ ভারতী বলেন, মুসলিমদের ভাবাবেগের দিকটিতে খেয়াল রাখতে হবে। আরেক শরিক নীতীশের দল জেডিইউয়ের সাংসদ দীনেশ্বর কামত সাবাধানী মন্তব্য করেছেন বলেই সূত্রের খবর। কমিটির পরবর্তী বৈঠক আগামী ৩০ আগস্ট। শীতকালীন অধিবেশেনর প্রথমদিনে সংসদে কমিটির রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা রয়েছে।