সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাজনৈতিক মতাদর্শ একটা সময়ে এক হলেও, বর্তমানে তিনি বিপরীত শিবিরে রয়েছেন। কিন্তু তাপস পালের অকায়প্রয়াণে শোকজ্ঞাপন করলেন বিজেপি নেতা অনুপম হাজরাও। “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়িয়ে পশ্চিম বাংলায় সম্ভবত তুমিই প্রথম দেখিয়েছিলে অভিনেতা থেকে নেতাও হওয়া যায়”, মৃত্যুর খবর পাওয়ার পরই তাপস পালের সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত সম্পর্ক নিয়ে নানা কথা তুলে ধরলেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। ঝাঁজালো মন্তব্যে বিঁধতেও ছাড়েননি বিরোধী শিবিরকে।
“তৃণমূলের নেতা হিসেবে, হয়তো তোমার একটা উক্তির জন্য তুমি আজও সমালোচিত। কিন্তু অভিনেতা হিসেবে তুমি ছিলে অনন্য। তুমি একটা উক্তি করে সবার কাছে খারাপ, অথচ ধর্ষণ আর মানুষ খুন করেও বহাল তবিয়তে তৃণমূলের বহু নেতা আজও দিদিমনির স্নেহের পাত্র! অথচ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়িয়ে পশ্চিম বাংলায় সম্ভবত তুমিই প্রথম দেখিয়েছিলে অভিনেতা থেকে নেতাও হওয়া যায়। কিন্তু শেষের দিকে তৃণমূলের হঠাৎ করে দলের মধ্যেই তোমাকে অচেনা করে দেওয়া (যেহেতু তখন তৃণমূলের তোমাকে ব্যবহার করা শেষ), ছিল তোমার অবসাদে চলে যাওয়ার অন্যতম কারণ। সেটা কেউ না জানলেও আমি অন্তত কিছুটা জানি। পার্লামেন্টের সেন্ট্রাল হলে একসঙ্গে আড্ডা দেওয়ার দিনগুলো খুব মনে পড়ছে। মানতেই পারছি না তুমি চলে গেলে!”, লিখলেন আবেগপ্রবণ বিজেপি নেতা অনুপম হাজরা।
কোন পরিস্থিতিতে পরে সেই মন্তব্য করেছিলেন তাপস পাল? অনুপমের সঙ্গে তা নিয়ে আলোচনা হলে সেকথা শেয়ার করেছিলেন অভিনেতা সাংসদ। অনুপম জানান, তাপস নাকি তাঁকে একাধিকবার বলেছেন, সিপিএমের হার্মাদদের উপর রাগ করে, আবেগপ্রবণ হয়ে কথাগুলো বলে ফেলেছিলেন। বলার পরে অনেকবার অনুভব করেছেন, সেদিন সেই কথাগুলো বলা তাঁর ঠিক হয়নি। এমনকী অনুশোচিত হয়ে কাতর আরজিও জানিয়েছিলেন যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হয়তো তাঁকে একটা সুযোগ দেবেন সাংসদ হিসেবে প্রতিনিধিত্ব করার। বলেছিলেন, “আমি তো আর মানুষ খুন করিনি।”
[আরও পড়ুন: ‘পয়সা ছিল না, পেপারে মুখ ঢেকে লোকাল ট্রেনেই যাতায়াত করতেন’, তাপসের স্মৃতিচারণায় বন্ধুরা ]
একসময়ে রোজভ্যালি দুর্নীতিতে বাবুলের নামোল্লেখ করায় তাপস পালের বিরুদ্ধে মানহানি মামলা দায়ের করার শাঁসানিও দিয়েছিলেন বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়। আজ সেই রাজনীতিকের প্রয়াণে শোকজ্ঞাপন করেছেন আসানসোলের বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুলও। “আজ অনেক কিছু মনে পড়ছে। ওর স্টার স্ট্র্যাচারটা ছিল মারাত্মক। পড়াশোনা করতে করতে ‘ভালবাসা ভালবাসা’, ‘অনুরাগের ছোঁয়া’ দেখেছি। ‘দাদার কীর্তি’র কথা আলাদা করে আর না-ই বা বললাম”, মন্তব্য বাবুলের।
“যে সমস্ত মানুষ তাপস পালের চারিদিকে ছিলেন, সেই জন্যই ওঁর এরকম পরিণতি”, ঝাঁজালো মন্তব্য করলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। “তাপস পাল অবহেলার শিকার। লঘু পাপে গুরু দণ্ড দেওয়া হয়েছিল তাঁকে”, বললেন কংগ্রেসনেতা অধীর চৌধুরি।
[আরও পড়ুন: ‘বাঁশি’ ছবি দিয়েই ইন্ডাস্ট্রিতে ফিরতে চেয়েছিলেন, শুটিং অসম্পূর্ণ রেখেই চলে গেলেন ‘সাহেব’]
The post তাপস পালের মৃত্যুতেও তৃণমূলকে কটাক্ষ করতে ছাড়লেন না দিলীপ-অধীররা appeared first on Sangbad Pratidin.