অভিরূপ দাস: দুর্গাপুজো ও দীপাবলির পর জগদ্ধাত্রীর আরাধনার দিনে ফের অঙ্গ প্রতিস্থাপন। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সফল হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপন৷ দক্ষিণ ২৪ পরগনার পূজালির বাসিন্দা সৈকত লাট্টু নামে এক যুবকের হৃদযন্ত্র পেলেন রানিগঞ্জের রাখাল দাস।শনিবার এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে গ্রিন করিডর তৈরি করে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ব্রেন ডেথ হওয়া এক রোগীর হৃৎপিণ্ড আনা হয়। এই প্রথম রাজ্যের কোনও সরকারি হাসপাতালে হৎপিণ্ড প্রতিস্থাপিত হল।
[‘বন্দিদশা’ থেকে মুক্তি, ঘরে ফিরলেন মালয়েশিয়ায় আটকে পড়া শ্রমিক]
দীর্ঘদিন ধরেই এসএসকেএমে ভরতি ছিলেন সৈকত। তাঁর ব্রেন টিউমার হয়েছিল। শুক্রবার রাতে সৈকতের ব্রেন ডেথ হয়। অঙ্গ প্রতিস্থাপনের জন্য চিকিৎসকরা তাঁর পরিবারের লোকেদের খবর দেন। রাতেই লাট্টুর পরিবারের লোকেরা আসেন। হৎপিণ্ড প্রতিস্থাপনের সম্মতি দেন তাঁরা। স্বাস্থ্য ভবন থেকে পাঁচজনের একটি দল রাতেই এসএসকেএম হাসপাতালে পৌঁছায়। সৈকতের পরিবারের কাছ থেকে লিখিত সম্মতি নেয় স্বাস্থ্য ভবনের ওই দলটি। তারপরই কলকাতা পুলিশ গ্রিন করিডর করে সৈকতের হৎপিণ্ডটি এসএসকেএম থেকে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসে। মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে খবর, রাতে তিনজন গ্রহীতাকে তৈরি রাখা হয়েছিল। সবাই এ রাজ্যের বাসিন্দা। দীর্ঘদিন তাঁরা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভরতি রয়েছেন। এই তিনজনের মধ্যে রানিগঞ্জের বাসিন্দা রাখাল দাসের সঙ্গে সৈকতের হৃৎপিণ্ডের মিল পাওয়া যায়। তাঁর শরীরেই হৃৎপিণ্ডটি প্রতিস্থাপিত হয়।
[স্কুলে শিশুর যৌন হেনস্তা রুখতে একগুচ্ছ নির্দেশিকা জারি হাই কোর্টের]
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের সুপার ইন্দ্রনীল বিশ্বাস জানান, হৃৎপিণ্ড হাসপাতালে এসে পৌঁছানোর পরই তা প্রতিস্থাপনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। একটি চিকিৎসক দল গড়া হয়। প্রায় চার ঘণ্টা ধরে অস্ত্রোপচার চলে। সফল হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপন৷ প্রসঙ্গত, এর আগে শুধুমাত্র এইমস হাসপাতালে হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপন হয়েছে। এই প্রথম কলকাতার কোনও সরকারি মেডিক্যাল কলেজে হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপন হয়।
[বিনা অনুমতিতে তদন্তে ‘না’, সিবিআই নিয়ে নয়া বিজ্ঞপ্তি জারি রাজ্যের]
দুর্গাপুজোর সময় ব্রেন ডেথ হওয়া বাগুইআটির বাসিন্দা দুর্গা সাধুর তিনটি অঙ্গ প্রতিস্থাপিত হয়েছিল এসএসকেএম হাসপাতালের তিনজন রোগীর শরীরে। দেওয়ালির রাতে দেবলীনা ঘোষ নামে ব্রেন ডেথ হওয়া এক যুবতীর হার্ট, দুটি কিডনি এবং চোখ প্রতিস্থাপিত হয়। গত ৪ নভেম্বর অসুস্থ অবস্থায় ২৬ বছরের দেবলীনাকে ভরতি করা হয় ঢাকুরিয়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে। আইটিইউ-তে তাঁকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল। ভরতির সময় থেকেই তাঁর জ্ঞান ছিল না। ক্রমেই তাঁর অবস্থার অবনতি হতে থাকে। দীপাবলির সন্ধ্যায় তাঁর ব্রেন ডেথ হয়। বেসরকারি হাসপাতালের তরফে যোগাযোগ করা হয় দেবলীনার পরিবারের সঙ্গে। অনুমতি মেলে অঙ্গ প্রতিস্থাপন করার।
The post শহরে প্রথম সরকারি হাসপাতালে সফল হৎপিণ্ড প্রতিস্থাপন appeared first on Sangbad Pratidin.