শিলাজিৎ সরকার: চার বছর আগের টোকিও অলিম্পিক। জাপানের রাজধানী দুই তরুণকে পরিচিত করেছিল বিশ্ব অ্যাথলেটিক্সে। ভারতীয় জ্যাভলিন থ্রোয়ার নীরজ চোপড়া। মার্কিন স্প্রিন্টার কেনি বেডনারেক। এমনিতে দু'জনের ইভেন্ট একেবারেই আলাদা।
দু'জনের মধ্যে ব্যক্তিগত পরিচিত নেই। তবে টোকিওর অলিম্পিক স্টেডিয়ামে একদিন হয়তো নিজের অজান্তেই কেনির দৌড় থামিয়ে দিয়েছিলেন নীরজ। টাটা স্টিল ওয়ার্ল্ড কলকাতা ২৫কে উপলক্ষে শহরে এসেছেন মার্কিন অ্যাথলিট কেনি। বৃহস্পতিবার দক্ষিণ কলকাতার এক স্কুলে পড়ুয়াদের সঙ্গে এক অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি। সেখানে একান্ত আলাপচারিতার মাঝে কেনি শোনালেন সেই গল্প। আসলে অলিম্পিক স্টেডিয়ামে সেবার জ্যাভনিল গ্লো-র যোগ্যতা অর্জন পর্বের পরই ছিল ২০০ মিটার দৌড়ের ফাইনাল। ফলে নীরজরা যখন পুরোদমে থ্রো করছেন, তখন পাশেই প্রস্তুতি শুরু করেছিলেন কেনি এবং অন্য প্রতিযোগীরা। নিজেদের দিকে জ্যাভলিন ধেয়ে আসতে দেখে দ্রুত দৌড় থামিয়ে দেন মার্কিন স্প্রিন্টার। কেনির কথায়, 'ওইদিন স্টেডিয়ামের মাঝখানে জ্যাভলিন থ্রো ইভেন্ট চলছিল। পাশে আমরা প্রস্তুত হচ্ছিলাম ফাইনালে নামার জন্য। হঠাৎ দেখি জ্যাভলিন উড়ে আসছে। বুঝতে পারিনি ওগুলো কতদূর আসবে। তাই আমরা দাঁড়িয়ে পড়ি।"
টোকিওয় আবির্ভাবেই ২০০ মিটার দৌড়ে রুপো পান কেনি। প্যারিসেও এই ইভেন্টে দ্বিতীয় হয়েছেন তিনি। এমনিতে ভারতীয় অ্যাথলিটদের মধ্যে নীরজকেই ঠিকমতো চেনেন কেনি। বলছিলেন, "আমি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় নীরজকে দেখতে পাই। তবে কখনও কথা হয়নি। আসলে আমরা দু'জনই টোকিওয় পদক জিতে শুরু করেছি। নীরজ সম্ভবত প্রথম ভারতীয় হিসাবে ওর ইভেন্টে অলিম্পিক সোনা জিতেছে, তাই না? সেটা কিন্তু দুর্দান্ত বিষয়।"
অবশ্য করোনা-পর্ব না থাকলে হয়তো টোকিও গেমসে দেখাই যেত না কেনিকে। আসলে সেসময় পুরোপুরি পেশাদার অ্যাথলিট হয়ে ওঠেননি তিনি। যোগ্যতা মানের ধারেকাছে থাকলেও ২০২০ সালে অলিম্পিকের নির্ধারিত সময়ে চোটে কাবু হয়ে ছিলেন। ফলে এক বছর প্রতিযোগিতা স্থগিত না হলে গেমসে অংশ নিতে পারতেন না তিনি। এজন্য করোনাকে ধন্যবাদ দিতেও কুণ্ঠিত নন কেনি। "সত্যি বলতে অলিম্পিক পিছিয়ে যাওয়ায় সুবিধাই হয়েছে। নয়তো অংশ নিতে পারতাম না। কেরিয়ার গ্রাফটা অন্যরকম হত আমার", অকপটে বলেন মার্কিন তারকা। আগে কখনও দূরপাল্লার দৌড় দেখেননি কেনি। কলকাতায় সেই আক্ষেপ মিটতে চলেছে, তা ভেবেই খুশি অলিম্পিকে জোড়া রুপোর মালিক।
