ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: হু হু করে আক্রান্ত হচ্ছেন রাজ্যের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। পাহাড় থেকে সমতল, সমস্ত সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকরা করোনা (Coronavirus) সংক্রমিত হচ্ছেন। মনে করা হচ্ছে, করোনা ভাইরাসের ‘সফট টার্গেট’ চিকিৎসা ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত কর্মী-আধিকারিকরা। সোমবারও মারণ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে এক চিকিৎসকের।
সূত্র মারফত পাওয়া খবর, ইতিমধ্যে করোনা (COVID-19) আক্রান্ত হয়েছেন নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের (NRS Hospital) ৭০ জন চিকিৎসক। এছাড়াও আর আহমেদ ডেন্টাল কলেজের ৩০ জন দন্ত চিকিৎসক, ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপাল-সহ ৩৬ জন, বেলেঘাটা আইডির দুই ডাক্তার, রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অফ অপথ্যালমোলজির অন্তত ১০ জন চিকিৎসক করোনা সংক্রমিত হয়েছেন। পাশাপাশি বেলেঘাটা আইডি, এম আর বাঙ্গুরের অজস্র নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী এবং চিকিৎসকরা করোনা পজিটিভ হয়েছেন।
এদিন বারাসতের জেনারেল ফিজিশিয়ান পারিজাত বিকাশ রায়ের মৃত্যু হয়। বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর। লিভারের অসুখ ছিল তাঁর। এর মাঝেই করোনা আক্রান্ত হন তিনি। এদিন সকালে নিজের বাড়িতেই মৃত্যু হয় তাঁর।
[আরও পড়ুন: দুই বাঘের প্রেম প্রস্তাবে ‘না’, ভালবাসার অত্যাচারে জঙ্গল ত্যাগ কুমিরমারির বাঘিনীর!]
এমনকী, পূর্ব রেলের একাধিক হাসপাতালের অন্তত ২১ জন চিকিৎসক, প্যারা মেডিক্যাল কর্মীও সংক্রমিত হয়েছেন। সবমিলিয়ে ইতিমধ্যে রাজ্যের প্রায় ৬ হাজার চিকিৎসক করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। রাজ্যে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের শুরুতেই এমন পরিস্থিতি চিন্তা বাড়িয়েছে। চিকিৎসকেরা মনে করছেন, তাঁদের আশঙ্কাই এবার হয়তো সত্যি হতে চলেছে।
সংক্রমিত চিকিৎসকেরা আইসোলেশনে। রয়েছেন বাড়িতে। ফলে কাজ করতে পারছেন না তাঁরা। ফলত হাসপাতালের আউটডোর হোক বা ইনডোরে চিকিৎসাধীন রোগীদের দেখভাল করবেন কে? ডাক্তারেরা মনে করছেন, এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে কয়েকদিনের মধ্যে এটাই বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়াবে। একাধিক চিকিৎসক করোনা আক্রান্ত হওয়ায় উদ্বেগে স্বাস্থ্যকর্তারাও। স্বাস্থ্য পরিষেবা স্বাভাবিক রাখতে চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের সমস্ত ছুটি বাতিল করার পথে হাঁটছে স্বাস্থ্যভবন। দ্রুত সকলকে কাজে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। তার পরেও একাধিক প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। কাজে যোগ দেওয়া চিকিৎসকরা যদি আক্রান্ত হন সেক্ষেত্রে পরিষেবা কীভাবে সচল রাখা হবে, তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।