সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সোমবারই মণিপুর (Manipur) নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে (PM Narendra Modi) উদ্বেগজনক রিপোর্ট জমা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। ওই রিপোর্ট বলা হয়েছে, উত্তরপূর্বের রাজ্যে কার্যত গৃহযুদ্ধ চলছে। সেনা নামিয়েও নিয়ন্ত্রণে আসছে না মেইতেই-কুকি জাতিদাঙ্গা। জম্মু ও কাশ্মীরের মতোই সন্ত্রাস দমন অভিযানে স্থানীয়দের একাংশের বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে জওয়ানদের। এই প্রতিরোধের কারণেই চুরি যাওয়া সরকারি অস্ত্র উদ্ধারও সম্ভব হচ্ছে না। গত ৭ জুন থেকে অস্ত্র উদ্ধারের কাজে নেমেছে অসম রাইফেলস এবং সেনা। যদিও ৭০ শতাংশ অস্ত্র এখনও উদ্ধার হয়নি বলেই জানা গিয়েছে।
রাজ্য পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, অশান্তির সুযোগ নিয়ে গত কয়েক দিনে ৩,৫০০ অস্ত্র এবং কয়েক লক্ষ গোলাগুলি থানা এবং বাহিনীর থেকে চুরি বা লুট হয়েছে। ওই অস্ত্র উদ্ধারে সম্প্রতি অভিযানে শুরু হলেও গত এক সপ্তাহে তেমন ফল মেলেনি। কেন্দ্রীয় সংস্থার আশঙ্কা, চুরি করা অস্ত্র বিভিন্ন সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীর মধ্যে বিক্রি বা বিলিয়ে দেওয়া হয়েছে। তেমন হলে সেই অস্ত্র উদ্ধার করা কার্যত অসম্ভব।
[আরও পড়ুন: মোদি সরকারকে উৎখাত করবে ওয়াগনার গ্রুপ! উদ্ধবের মুখপত্রে দাবি]
উল্লেখ্য, সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শান্তির বার্তা দিয়ে সাধারণ নাগরিক অস্ত্র ফেরাতে অনুরোধ করেন। অস্ত্র উদ্ধার কাজের সঙ্গে থাকা মণিপুরের এক আধিকারিকের বক্তব্য, “লুট করা অস্ত্র ফেরানোর দু’টি পথ। এক সাধারণ মানুষ যদি তা নিজে থেকে ফেরান অথবা আমরা অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করব। আমরা উদ্ধার করছি বটে, দিন প্রতি সংখ্যা যৎসামান্য। এখনও অবধি ১, ১০০টি অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। তাও অমিত শাহর অনুরোধের পরেই এটুকু হয়েছে।” সেনার বক্তব্য, সাধারণ মানুষ, এমনকি মহিলারা অস্ত্র উদ্ধার অভিযানে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছেন।
গত শনিবার সকালে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সেনা জওয়ানদের সংঘর্ষ হয়। তারপরই ১২ জন মেইতেই জঙ্গিকে বন্দি করা হয়। কিন্তু জওয়ানদের ঘিরে ফেলে স্থানীয় মহিলারা। বারবার আবেদন জানানো হতে থাকে বন্দিদের ছেড়ে দেওয়ার জন্য। সাধারণের প্রাণহানির ঝুঁকি থাকায় শেষপর্যন্ত বন্দিদের ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় সেনা। ‘বিদ্রোহী’দের মুক্তি দেওয়ার পর এলাকা ছেড়ে দেয় ভারতীয় সেনা। তবে সেখান থেকে উদ্ধার হওয়া অস্ত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: ভোটমুখী তেলেঙ্গানায় ঘুঁটি সাজাচ্ছে কংগ্রেস, কেসিআরের ঘর ভেঙে ‘হাত’ ধরছেন ৩৫ শীর্ষ নেতা!]
৩ মে থেকেই হিংসার আগুনে জ্বলছে মণিপুর। মেইতেই-কুকি সংঘাতে এখনও পর্ষন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ১০০ জনেরও বেশি মানুষ। সম্প্রতি মণিপুর সরকারের এক রিপোর্ট বলা হয়েছে, রাজ্যে মায়ানমার থেকে অনুপ্রবেশ ঘটছে। প্রায় ২ হাজার অনুপ্রবেশকারী রয়েছে রাজ্যে। এই পরিস্থিতিতে বিরোধীদের টানা আক্রমণের মুখে পড়ে একপ্রকার বাধ্য হয়েই শনিবার সর্বদল বৈঠক ডাকেন অমিত শাহ।