সুকুমার সরকার, ঢাকা: জোরকদমে চলছে পদ্মা নদীর উপর সেতু তৈরির কাজ। গতবছরই সেতুর শেষ স্প্যানটি বসানোর কাজও শেষ হয়েছে। ২০২২ সালের মধ্যেই যাতায়াত শুরু করা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। এহেন সময়ে পদ্মা সেতুতে একাধিক বার ফেরির ধাক্কা এক বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অংশ হতে পারে বলে জল্পনা উসকে দিলেন বাংলাদেশের (Bangladesh) সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
[আরও পড়ুন: Bangladesh terrorists: বাংলাদেশে গ্রেপ্তার ৪ আনসার জঙ্গি, ফাঁস ‘খিলাফত’ প্রতিষ্ঠার ষড়যন্ত্র]
শুক্রবার পদ্মা সেতুতে ধাক্কা দেয় একটি ফেরি, এর আগেও এমন দুর্ঘটনা ঘটে গিয়েছে। গত ২৩ জুলাই মাদারিপুরের বাংলাবাজার ঘাট থেকে শিমুলিয়ায় আসার পথে একটি ফেরি সেতুর ১৭ নম্বর পিয়ারে আঘাত করেছিল। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে একই দিন সকাল মাদারিপুরের বাংলাবাজার ঘাট থেকে মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটগামী ‘কাকলী’ নামের একটি ফেরি পদ্মা সেতুর ১০ নম্বর পিয়ারে ধাক্কা দেয়। ওই ঘটনার পর সেতুর মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে পরিদর্শনে আসেন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “পদ্মা সেতুতে ফেরির ধাক্কাকে তুচ্ছ কোনও ঘটনা ও নিছক দুর্ঘটনা অথবা চালকের অদক্ষতা বলে এড়িয়ে যাওয়া ভুল হবে। এখানে কোনও ষড়যন্ত্র আছে কিনা, অন্তর্ঘাত আছে কিনা তদন্ত করে দেখতে হবে। সেনাবাহিনীকে বলব এ ব্যাপারে গভীরভাবে তদারকি করা দরকার।” তিনি আরও বলেন, “পদ্মা সেতু নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে। এখনও এর পিছনে অনেক লোক লেগে আছে। দেশ-বিদেশ থেকেও লেগে আছে। বার বার কেন ঘটছে ধাক্কার ঘটনা। পদ্মা সেতু এখন জাতীয় সম্পদ। সারা দেশের মানুষের অনুভূতিতে আঘাত আসে। সেতুটি গোটা জাতির সম্পদ। জাতীয়ভাবে মানুষ আহত হচ্ছে।”
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের পদ্মা নদীর উপর নির্মাণাধীন এই সেতুটি বহুমুখী সড়ক ও রেল সেতু। এর মাধ্যমে লৌহজং, মুন্সিগঞ্জের সাথে শরিয়তপুর ও মাদারীপুর যুক্ত হবে। ফলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশের সঙ্গে উত্তর-পূর্ব অংশের সংযোগ ঘটবে। বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশের জন্য পদ্মা সেতু ইতিহাসের একটি সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জিং নির্মাণ প্রকল্প বলেই মত বিশ্লেষকদের। দুই স্তর বিশিষ্ট ষ্টিল ও কংক্রিট নির্মিত ট্রাস ব্রিজটির (truss bridge) ওপরের স্তরে থাকবে চার লেনের সড়ক পথ এবং নিচের স্তরটিতে থাকবে একটি একক রেলপথ। পদ্মা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা নদীর আববাহিকায় ১৫০মিটার দৈর্ঘ্যর ৪১টি স্পান বসবে, ৬.১৫০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এবং ১৮.১০ মিটার প্রস্থ পরিকল্পনায় নির্মিত হচ্ছে দেশের সবচেয়ে বড় সেতু।