পাকিস্তান: ১৮৫/৯ (শাদাব ৫২, ইফতিকার ৫১, নখিয়া ৪/৪১)
দক্ষিণ আফ্রিকা: ১০৮/৯ (বাভুমা ৩৬, আফ্রিদি ৩/১৪, শাদাব ২/১৬)
ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধিততে পাকিস্তান ৩৩ রানে জয়ী।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একই দিনে ভাল ও মন্দ খবর পাকিস্তানের জন্য। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে (South Africa) হারিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভেসে রইল পাকিস্তান (Pakistan)।
অন্য দিকে, পাকিস্তানের ওয়াজিরাবাদের জাফর আলি চকে গুলিবিদ্ধ প্রাক্তন পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। এই খবর যখন ছড়িয়ে পড়ল গোটা বিশ্বে, তখন স্যর ডনের দেশে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া অবস্থা থেকে দারুণ ভাবে ফিরে এল পাক-ক্রিকেট। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের (ICC T-20 World Cup) শেষ চারে এখনও পৌঁছতে পারেন বাবর আজমরা। অন্যদিকে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে বৃষ্টি অভিশাপ হয়েই রইল। ১৯৯২ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে বৃষ্টির জন্যই ছিটকে যেতে হয়েছিল প্রোটিয়া শিবিরকে। ২০২২ সালেও সেই বৃষ্টির জন্য দক্ষিণ আফ্রিকা এখন অস্বস্তিতে।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সময়টা ভাল যাচ্ছিল না পাকিস্তানের। ঘরে-বাইরে সমালোচনার শিকার হচ্ছিলেন অধিনায়ক বাবর আজম। প্রাক্তনরা তরুণ ক্রিকেটারদের উপরে রুষ্ট। তাঁদের ফিটনেস নিয়ে সমালোচনা করছেন। এরকম পরিস্থিতিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে জ্বলে উঠল পাকিস্তান। প্রোটিয়াদের হারিয়ে মেগা টুর্নামেন্টে টিকে থাকল ইমরান খানের দেশ।
[আরও পড়ুন: আম্পায়ার এবং কোহলির বিরুদ্ধে ক্ষোভ, ম্যাচ হেরে আইসিসির কাছে নালিশের পথে BCB]
অবশ্য পাকিস্তান তো চিরকালই খাদের মুখে দাঁড়িয়ে সেরা খেলাটা খেলে থাকে। কে ভুলতে পারে ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপের কথা। তিরিশ বছর আগের বিশ্বকাপে এই অস্ট্রেলিয়ার মাটিতেই তো ইংল্যান্ডের কাছে মাত্র ৭৪ রানে অল আউট হয়ে গিয়েছিল পাকিস্তান। বৃষ্টির জন্য ম্যাচ ভেস্তে গিয়েছিল। সেই পাকিস্তান পরে টুর্নামেন্টে ঘুরে দাঁড়িয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়ে যায়। ফাইনালে হারিয়েছিল ইংল্যান্ডকেই।
বৃহস্পতিবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে পাকিস্তান ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতিতে ৩৩ রানে হারাল দক্ষিণ আফ্রিকাকে। আর সেই সঙ্গে বিশ্বকাপে টিকে রইল। এদিন পাকিস্তান জেতায় তাদের পয়েন্ট হল ৪। দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ ৫ পয়েন্ট। আর ভারত ৬ পয়েন্ট পেয়ে গ্রুপে শীর্ষে। বাংলাদেশের সংগ্রহ ৪ পয়েন্ট। বাবর আজমরা এবার তাকিয়ে থাকবেন ভারত-জিম্বাবোয়ে ম্যাচের দিকে।ভারত হারলে পাকিস্তানের সুবিধা। চলতি মাসের ৬ তারিখ বাংলাদেশের মুখোমুখি পাকিস্তান। ভারত যদি হেরে যায় আর পাকিস্তান জেতে, সেক্ষেত্রে পাকিস্তান ও ভারতের পয়েন্ট সমান হবে। তার পর দেখা হবে দু’ দলের রান রেট। জিম্বাবোয়েকে হারিয়ে দিলে ভারত আট পয়েন্ট পেয়ে পৌঁছে যাবে শেষ চারে। দক্ষিণ আফ্রিকা এদিন হেরে গেলেও সেমিফাইনালে যাওয়ার আশা শেষ হয়ে যাচ্ছে না। নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে শেষ ম্যাচ দক্ষিণ আফ্রিকার। সেদিকে তাকিয়ে থাকবেন সবাই। বলা ভাল গ্রুপ টু-য়ের দিকে নজর সবার।
এ তো গেল, কী হলে কী হবে! বৃহস্পতিবারের ম্যাচ পাকিস্তানের কাছে আক্ষরিক অর্থেই ছিল মরণবাঁচনের। প্রোটিয়াদের বিরুদ্ধে শুরু থেকেই উইকেট হারায় পাকিস্তান। মহম্মদ রিজওয়ান, বাবর আজম ওপেন করতে নেমে ব্যর্থ হন। কিন্তু পাকিস্তানকে ম্যাচে ফেরান শাদাব খান ও ইফতিকার আহমেদ। শাদাব মাত্র ২২ বলে ৫২ রান করেন। ইফতিকার ৩৫ বলে ৫১ রানের ইনিংস খেলেন। এই দু’ জনের জন্যই পাকিস্তান ২০ ওভারের শেষে করে ৯ উইকেটে ১৮৫ রান।
রান তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই উইকেট হারাতে থাকে দক্ষিণ আফ্রিকা। শুরুতে আঘাত হানেন শাহিন শাহ আফ্রিদি। খাতা না খুলে ফেরেন কুইন্টন ডি’ কক। রুশোও (৭) আফ্রিদির শিকার। অধিনায়ক বাভুমা লড়াই করছিলেন। কিন্তু শাদাব খানের ঘূর্ণিতে ফেরেন বাভুমা (৩৬) ও মার্করাম (২০)। এরপরই বৃষ্টিতে থমকে যায় খেলা। ৯ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার রান ৪ উইকেটে ৬৯। সেই সময়ে দক্ষিণ আফ্রিকা ১৫ রানে পিছিয়ে ছিল। বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচ হয়ে যায় ১৪ ওভারের। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দক্ষিণ আফ্রিকার টার্গেট হয় ১৪২ রান। অর্থাৎ পাঁচ ওভারে প্রোটিয়া শিবিরকে তুলতে হবে ৭৩ রান। নিঃসন্দেহে কঠিন টার্গেট। চাপে পড়ে উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। শেষ পর্যন্ত প্রোটিয়া শিবির করে ৯ উইকেট হারিয়ে ১০৮ রান।