সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানে ক্ষমতায় ফিরেছে তালিবান (Taliban)। তবে গৃহযুদ্ধের জেরে কার্যত মাটিতে নুয়ে পড়েছে দেশটির অর্থনীতি। চরম রাজনৈতিক ডামাডোলে বিপর্যয় নেমে এসেছে সাধারণ মানুষের জীবনে। দেখা দিয়েছে প্রবল খাদ্য সংকট। এহেন পরিস্থিতিতে দুস্থ আফগানদের জন্য খাদ্যসামগ্রী পাঠাতে তৎপর হয়েছে ভারত। কিন্তু এই চেষ্টায় বাদ সাধছে পাকিস্তান (Pakistan)। পণ্য সরবরাহের জন্য পথ খুলছে না ইসলামাবাদ। কিন্তু বিপদের মুখে ভারতের খাদ্যসামগ্রী পেতে মরিয়া তালিবরা এবার ইমরান খানের সরকারের উপর চাপ বাড়াচ্ছে বলে খবর।
[আরও পড়ুন: ভারতকে বিপাকে ফেলতে পাকিস্তান তৈরি করে তালিবান, দাবি প্রাক্তন আফগান রাষ্ট্রদূতের]
পাক সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ভারত থেকে গম পেতে ইচ্ছুক তালিবান। তাই পণ্য সরবরাহের জন্য পথ খুলে দেওয়ার আরজি জানিয়ে ইমরান খানের সরকারের উপর চাপ বাড়িয়েছে তারা। ফলে সেই প্রস্তাবে সায় দিতে চলেছে ইসলামাবাদ বলে খবর। অর্থাৎ, এবার ভারত থেকে পণ্য বোঝাই ট্রাক পাকিস্তান হয়ে আফগানিস্তানে পৌঁছবে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে ইমরান খান জানিয়েছেন, ‘ব্যতিক্রমী’ পদক্ষেপ হিসেবে ‘তালিবানের আবেদনে’ ভারত থেকে গম সরবরাহের বিষয়টি ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে দেখা হবে। সহজ কথায়, এবার আখুন্দজাদাদের কথা ফেলতে না পেরে ভারতকে পণ্য পাঠাতে দিতে রাজি হয়েছেন পাক প্রধানমন্ত্রী।
উল্লেখ্য, গত মাসে আফগানিস্তানে খাদ্য সংকটের মোকাবিলায় ৫০ হাজার মেট্রিক টন গম পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় নয়াদিল্লি। স্থলপথে ট্রাকে করে সেগুলি পাকিস্তানের ভিতর দিয়ে আফগানিস্তানে পৌঁছনোর কথা ভাবা হয়েছিল। যার জন্য প্রয়োজন অন্তত ৫ হাজার ট্রাকের। এই বিপুল পরিমাণের পণ্য পাঠাতে রাস্তা ব্যবহারের জন্য ইসলামাবাদের অনুমতি চেয়েছিল ভারত। এই মর্মে গত মাসেই ভারত চিঠি দিয়ে পাক সরকারের অনুমতি চায় যাতে ট্রাকগুলি পাকিস্তানে ঢুকতে পারে। সেই প্রস্তাবে সরাসরি না করেনি পাকিস্তান। কিন্তু তাদের দেশের ভিতর দিয়ে সেই ট্রাকগুলি যাওয়ার অনুমতিও এখনও পর্যন্ত দিয়ে উঠতে পারেনি ইসলামাবাদ। ফলে আফগানিস্তানে ত্রাণ পৌঁছনোর বিষয়টি পুরোপুরি আটকে রয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, কূটনীতির মঞ্চে এটা ভারতের বড় জয়। কারণ, কৌশলগত ভাবে সন্ত্রাসবাদের প্রসার রুখতে তালিবান সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে নয়াদিল্লিকে। আর পাকিস্তানের উদ্বেগ বাড়িয়ে খাদ্য পাঠিয়ে আফগান জনতার পাশে থাকার বার্তা দিয়েছে মোদি সরকার। তালিবানও বুঝতে পেরেছে ভারতের মতো সামরিক ও অর্থনৈতিক শক্তিকে চটিয়ে আখেরে তাদেরই লোকসান।