অর্ণব আইচ: মালকিন দুনিয়া ছেড়ে চলে গিয়েছেন। মালিক পুলিশ হেফাজতে। তাই খাঁচাবন্দি ‘চুনিয়া-মুনিয়া’দের দেখার কেউ নেই এখন। কিন্তু বন্দি পাখিগুলির তো দোষ নেই। তাদের দেখভাল তো হওয়া চাই। তাই গড়ফা থানার (Garfa PS) আধিকারিকদের অনুরোধে এখন অভিনেত্রী পল্লবী দে (Pallavi Dey) ও প্রেমিক সাগ্নিকের প্রিয় ‘চুনিয়া-মুনিয়া’দের দেখাশোনার ভার পড়েছে চামেলি কাঁসারির উপর। চামেলি দক্ষিণ কলকাতার গড়ফার গাঙ্গুলিপুকুরের চারতলা আবাসনের কেয়ারটেকারের স্ত্রী।
চুনিয়া-মুনিয়ারা ফিঞ্চ (Finches) প্রজাতির বিদেশি পাখি। সংখ্যায় তারা চার। সদ্যপ্রয়াত টেলি অভিনেত্রী পল্লবী দে’র খুব প্রিয় পাখি ছিল এই চারটি। সেগুলিকে আদর করে ‘চুনিয়া-মুনিয়া’ বলে ডাকতেন পল্লবী, এমনই জানিয়েছেন ওই বহুতলের বাসিন্দারা। আর এই পাখি প্রেমে পল্লবীর পাশে ছিলেন প্রেমিক সাগ্নিক চক্রবর্তীও। দু’জন মিলে দেখাশোনা করতেন পাখিগুলির। কখনও আবার পরিচারিকা সেলিমাও খেতে দিতেন পাখিগুলিকে। পরিষ্কার করতেন খাঁচাও।
[আরও পড়ুন: নয়া দুর্নীতির অভিযোগ, লালু ও তাঁর মেয়ের বাড়ি-সহ ১৭ জায়গায় তল্লাশি সিবিআইয়ের]
কিন্তু ছন্দ কাটল রবিবার। সকালেই প্রেমিকা পল্লবীর ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান সাগ্নিক। পুলিশের কাছে সাগ্নিক জানিয়েছেন, পল্লবীকে ঝুলন্ত অবস্থা থেকে নামিয়ে নিয়ে আসার পর তিনি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব প্রেমিকাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েন। কিন্তু পল্লবীকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। এরপর সাগ্নিককে আটক করে গড়ফা থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। শুরু হয় জেরা। ফ্ল্যাটের দরজা তালাবন্ধ ছিল। গড়ফা থানার পুলিশ আধিকারিকরা ফ্ল্যাটের দরজা খুলে তল্লাশি চালানোর সময়ই তাঁদের চোখে পড়ে খাঁচাবন্দি চারটি ফিঞ্চ পাখি। ততক্ষণে পুলিশ আধিকারিকরা জেনেছেন, সাগ্নিকের বাবা বিদেশি পাখির ব্যবসাও করেন। সম্ভবত সাগ্নিক তাঁর বাবার কাছ থেকেই এই পাখিগুলি নিয়ে এসে প্রেমিকা পল্লবীকে উপহার দেন।
[আরও পড়ুন: ‘I LOVE YOU, THE END’, হাতে লিখে ‘আত্মঘাতী’ যুবক, ঘর থেকে উদ্ধার ঝুলন্ত দেহ]
পুলিশ আধিকারিকরা খাঁচার কাছে গিয়ে দেখেন, ভিতরে খাবার ও জল প্রায় শেষ। বন্ধ ঘরে পাখিগুলি যে কষ্ট পাচ্ছে, তা দেখেই বোঝা যায়। তাঁরাই বাড়ির কেয়ারটেকারকে বলেন এই পাখিগুলির দায়িত্ব নিতে। এতে রাজি হয়ে যান কেয়ারটেকার। বাড়ির একতলায় কেয়ারটেকারের ঘরের সামনে একটি টেবিলের উপরই রাখা হয় ওই খাঁচা। সেগুলির দেখভাল শুরু করেছেন কেয়ারটেকারের স্ত্রী চামেলি কাঁসারি। তিনিই চারটি পাখিকে রোজ খাবারদাবার ও জল দিচ্ছেন। খেয়াল রাখছেন যাতে তারা কষ্ট না পায়। থানার পক্ষ থেকেও মাঝেমধ্যে তাদের ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।