রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: পঞ্চায়েত ভোটে(Panchayat Election 2023) ধাক্কা খেয়ে পশ্চিমবঙ্গে স্ট্র্যাটেজি বদলাচ্ছে বিজেপি ও আরএসএস। পুরোদস্তুর সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের লাইনই তারা নিতে চলেছে। আর সেই লক্ষে্যই আগামী ১৮ ও ১৯ আগস্ট আরএসএস নেতারা কলকাতায় একটি বৈঠক করতে চলেছে। সেই বৈঠকে বিভিন্ন জেলা থেকে বিজেপি ও সংঘ পরিবারের নেতারা থাকবেন। চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখেই গোপন ওই বৈঠক হতে চলেছে বলে সূত্রের খবর। অন্যদিকে, রাজ্য প্রশাসনের কাছেও খবর রয়েছে যে, বিজেপি মেরুকরণের ছক কষছে। পঞ্চায়েত ভোটে জোর ধাক্কা খাওয়ার পর লোকসভার আগে প্রমাদ গুনছে বিজেপি ও সংঘ পরিবার। এদিকে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন যে, তাঁর কাছে খবর আছে রাজ্যে মেরুকরণ করতে চায় বিজেপি। ফলে যে রিপোর্ট এসেছে তা থেকেই এটা স্পষ্ট।
[আরও পড়ুন: ‘ওপেনহাইমার’ নিয়ে শোরগোল! গীতপাঠের বিতর্কিত দৃশ্যকে সমর্থন মহাভারতের ‘কৃষ্ণ’ নীতিশের]
পঞ্চায়েত ভোটের ফলাফলে শঙ্কিত বিজেপি ও সংঘ পরিবার। চারটি গোষ্ঠীর ভোটের ফল নিয়ে প্রমাদ গুনছে গেরুয়া শিবির। রাজবংশী, মতুয়া, আদিবাসী ও গোর্খা ভোটব্যাঙ্ক হাতছাড়া হতে থাকায় উদ্বিগ্ন দিল্লির নেতারা। অথচ, এই সব এলাকা থেকে গত উনিশের লোকসভা নির্বাচনে ঢেলে ভোট পেয়েছিল বিজেপি। বাংলা থেকে ১৮ জন সাংসদ পেয়েছিল তারা। আবার একুশের বিধানসভা নির্বাচনেও এই অংশের ভোট ভালই এসেছিল। কিন্তু পঞ্চায়েত ভোটে উত্তরবঙ্গ ও জঙ্গলমহলে ফল ভাল না হওয়াটা চব্বিশের লোকসভা ভোটের আগে বিজেপির কাছে অশনি সংকেত বলেই মনে করা হচ্ছে। সংঘের দেওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী এই মুহূর্তে রাজ্যে ভোট হলে চার থেকে পাঁচটি আসন গেরুয়া শিবিরের ঝুলিতে আসতে পারে। তাই চব্বিশের লোকসভার লক্ষ্যে তারা মনে করছে, মেরুকরণ ছাড়া তাদের কাছে দ্বিতীয় কোনও পথ নেই। সোমবার রাতে দিল্লিতে বঙ্গ বিজেপি নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন আরএসএসের শীর্ষনেতা বি এল সন্তোষ, অরুণ কুমার, প্রদীপ যোশীরা। পঞ্চায়েতে উত্তরবঙ্গ ও জঙ্গলমহলে বিজেপির ফলাফল নিয়ে যথেষ্ট উদ্বেগ প্রকাশ করেন আরএসএস নেতৃত্ব। যে স্ট্র্যাটেজি রিপোর্ট এসেছে, এক) আগামীদিনে লোকসভা ভোটে সুবিধা পেতে বিজেপির মূল লক্ষ্য থাকছে ভেদাভেদ ও জাতপাতের রাজনীতির লাইন। দুই) এই স্ট্র্যাটেজিতেই তারা টার্গেট করছে হাতছাড়া হওয়া রাজবংশী, গোর্খা, মতুয়া, আদিবাসীদের। তিন) রাজ্য সরকারকে দুর্বল করা যায় এমন পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা চলছে। চার) মহিলা নির্যাতন, এসসি—এসটি সংক্রান্ত বিভিন্ন ঘটনাকে প্রচারে তুলে ধরে সহানুভূতি পাওয়ার চেষ্টা। পাঁচ) তৃণমূলের ভোট ব্যাংক ভাঙনে অন্য রাজনৈতিক দলকে ফান্ডিং করা। এদিকে, সূত্রের খবর, আলিপুরদুয়ারে ভাল ফল না হওয়ায় সেখানকার সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জন বার্লাকে মন্ত্রিসভা থেকে সরানো হতে পারে। সেই জায়গায় মন্ত্রী হতে পারেন মালদহ উত্তরের সাংসদ খগেন মুর্মু।