সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পঞ্চায়েত নির্বাচনে (Panchayat Election 2023) রাজ্যজুড়ে সবুজ ঝড়। কার্যত খড়কুটোর মতো উড়ে গিয়েছে বিজেপি। উত্তরবঙ্গ, জঙ্গলমহল থেকে মতুয়াগড়, যা কিনা বিজেপির গড় হিসাবে পরিচিত ছিল, সেখানেও কার্যত ধুয়েমুছে সাফ গেরুয়া শিবির। গোটা রাজ্যে শাসকদল সামান্য কিছুটা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে শুধু সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকাগুলিতে। বিশেষ করে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত দুই জেলা মালদহ এবং মুর্শিদাবাদে খানিকটা হলেও ‘প্রতিরোধ’ গড়তে পেরেছে বাম ও কংগ্রেস।
বস্তুত, নির্বাচন প্রক্রিয়ার একেবারে শুরু থেকে রাজ্যের যে যে এলাকায় অশান্তি সবচেয়ে বেশি হয়েছে, সেগুলিও সংখ্যালঘু অধ্যুষিত। সেটা মুর্শিদাবাদ হোক, মালদহ হোক, ভাঙড় হোক বা উত্তর দিনাজপুর। ভোটের ফলেও দেখা যাচ্ছে বিচ্ছিন্নভাবে হলেও এই এলাকাগুলিতে ভাল করেছে বাম-কংগ্রেস জোট। সিপিএম (CPIM) এবং কংগ্রেসের (Congress) দাবি, রাজ্যের সংখ্যালঘু মন যে বদলাচ্ছে, পঞ্চায়েতের ফলাফলে তাঁর ইঙ্গিত মিলছে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী (Adhir Ranjan Chowdhury) আবার দাবি করেছেন, “ভোটে অবাধ সন্ত্রাস না হলে মুর্শিদাবাদে নিশ্চিহ্ন হয়ে যেত তৃণমূল।”
[আরও পড়ুন: ‘পদ ছেড়ে চলে যাওয়া উচিত’, পঞ্চায়েতে বিপুল জয়ের পর কুণাল ঘোষের নিশানায় রাজ্যপাল]
যদিও অধীর বা সিপিএমের দাবিকে পাত্তাই দিতে নারাজ তৃণমূল। শাসকদলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের ব্যাখ্যা, “মালদহ এবং মুর্শিদাবাদ দুই জেলাতেই বিরোধীদের থেকে অনেক এগিয়ে তৃণমূল। পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে জেলা পরিষদ, সব স্তরেই নিরঙ্কুশ তৃণমূল। তাহলে সংখ্যালঘু ভোটে ভাঙনের প্রশ্ন আসছে কোথা থেকে?” বস্তুত, কুণালের (Kunal Ghosh) দাবি পুরোপুরি সঠিক। পরিসংখ্যানের হিসাবে এই দুই জেলাতেও একচ্ছত্রভাবে প্রথম স্থানে তৃণমূল। তবে বাম-কংগ্রেস জোটও এই দুই জেলায় ‘দুঃসহ’ পরিস্থিতি থেকে খানিকটা ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছে। এই দুই জেলার পাশাপাশি নদিয়া, উত্তর দিনাজপুর এবং বীরভূমের সংখ্যালঘু অধ্যুষিত কিছু এলাকায় জোটের ফলাফল বিজেপির তুলনায় অনেক ভাল।
[আরও পড়ুন: ২৯-এ ২৮! ফুরফুরা শরিফে তৃণমূলের জয়জয়কার, সবুজ ঝড়ে উড়ে গেল নওশাদের ISF]
যদিও বাম-কংগ্রেসের জোটের এই ‘সাফল্যে’র দাবিকেও বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন না কুণাল। তিনি বলছেন,”বিধানসভায় সিপিএম এবং কংগ্রেস নিজেদের ভোটটা পুরোপুরি বিজেপিতে পাঠিয়ে দিয়েছিল। সেখানে কিছুটা ভোট ওরা পুনরুদ্ধার করেছে। তাও সবটা পারেনি। সেকারণেই বিচ্ছিন্নভাবে কোথাও কোথাও জিতেছে। তবে সংখ্যালঘু এলাকাগুলিতে এখনও তৃণমূলই মানুষের প্রথম পছন্দ, সেটা ভোটের ফলেই স্পষ্ট।”