মণিশংকর চৌধুরী: আরাবুল ইসলাম। রাজ্য রাজনীতির ‘দোর্দণ্ডপ্রতাপ’ নেতাদের তালিকা তৈরি করলে একেবারে প্রথম সারিতে উচ্চারিত হতে তাঁর নাম। সেই আরাবুল ইসলামের ঘরের মাঠেই হার তৃণমূলের। আরাবুল ভাঙড়ের পোলেরহাট ২ নম্বর পঞ্চায়েতের (Panchayat Election 2023) বাসিন্দা। গ্রাম পঞ্চায়েতের ফলাফলের প্রাথমিক ট্রেন্ডে জানা যাচ্ছে, আরাবুলের গ্রাম পঞ্চায়েতে পরাস্ত হয়েছে শাসকদল। পোলেরহাট দুই নম্বর পঞ্চায়েত দখল করেছে জমি রক্ষা কমিটি এবং আইএসএফের (ISF) জোট।
জয়ের প্রবণতা স্পষ্ট হতেই গণনাকেন্দ্র ছাড়েন আরাবুল ইসলাম (Arabul Islam)। পোলেরহাট ২ নম্বর অঞ্চলে হার স্বীকারও করে নেন তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক। এবছর পোলেরহাট ২ নম্বর পঞ্চায়েতে এবার আসন সংখ্যা বেড়ে হয়েছিল ২৪। সব আসনেই এবার লড়াই করে জমি রক্ষা কমিটি এবং আইএসএফ (ISF) সমর্থিত নির্দলরা। জানা গিয়েছে, এই ২৪ আসনের বেশিরভাগেই জয়ী হয়েছেন জমি কমিটির নির্দলরা। ফলাফল স্পষ্ট হতেই এদিন গণনাকেন্দ্র ছাড়েন আরাবুল। তিনি স্বীকার করে নেন, পোলেরহাটের বেশিরভাগ আসনে পরাস্ত হয়েছে তৃণমূল। তবে তাঁর দাবি, ‘এমনটা হতেই পারে।’
[আরও পড়ুন: মামলা করে অনুব্রতর দিল্লিযাত্রা আটকানোর চেষ্টার পুরস্কার! জয়ী শিবঠাকুরের স্ত্রী ]
সামগ্রিকভাবে গোটা ভাঙড়ে সেই মনোনয়ন পর্ব থেকেই অশান্তি চলছে। বিশেষ করে ভাঙড় ২ নম্বর ব্লকে। যার জেরে ভাঙড় দু’নম্বর ব্লকের ১০টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট ২১৮ আসনের মধ্যে ৮৬টি আসন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে গিয়েছে শাসকদল। কিন্তু যে যে পঞ্চায়েত আসনগুলিতে নির্বাচন হয়েছে, সেই আসনগুলিতে প্রাথমিক ট্রেন্ড অনুযায়ী আইএসএফের সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হচ্ছে শাসকদলের। বেশ কিছু আসনে শাসকদলকে টেক্কা দিয়ে জয়ী হয়েছেন আইএসএফ প্রার্থীরা। তবে পোলেরহাট দুই ছাড়া বাকি ৯টি পঞ্চায়েতের অধিকাংশ আসনেই যেহেতু শাসকদল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে গিয়েছে, তাই বোর্ড গঠনের ক্ষেত্রে তৃণমূল খানিকটা হলেও এগিয়ে। পঞ্চায়েত সমিতিতে ভাঙড় এলাকায় ৩০টি আসন। তার মধ্যে ১৬টি-তে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে। অর্থাৎ পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ডও তৃণমূলই গ্রহণ করেছে। জেলা পরিষদের ৩ আসনের মধ্যে ২টি এগিয়ে তৃণমূল। এর মধ্যে রয়েছেন আরাবুলের ছেলে হাকিমুলও।
[আরও পড়ুন: আগুন বাজারে দামের ঝাঁজ কমেছে লঙ্কার, সস্তার পথে সবজিও, কী বলছেন ব্যবসায়ীরা]
তবে পোলেরহাট ২ অর্থাৎ আরাবুলের নিজের এলাকায় ভোটের ফলে তৃণমূল যে ধাক্কা খেতে পারে, সে ইঙ্গিত আগেই ছিল। কারণ আরাবুল এবং তাঁর ছেলে হাকিমুল নিজেই নিজেদের এলাকায় প্রার্থী হননি। তাঁরা প্রার্থী হয়েছেন অপেক্ষাকৃত নিরাপদ ব্যাওতা থেকে। তখনই ইঙ্গিত ছিল, পোলেরহাটে ভাল লড়াই করবেন জমি রক্ষা কমিটির প্রার্থীরা। সেটাই ভোটের ফলে প্রতিফলিত হচ্ছে।