সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: রেল শহর আদ্রার তৃণমূল সভাপতির খুনের নেপথ্যে রাজনীতি নাকি অন্য কিছু? পঞ্চায়েত নির্বাচনের আবহে এখন এই বিষয়টিই সব চেয়ে বড় প্রশ্নচিহ্ন হয়ে ঝুলছে। যদিও শাসকদল এই ঘটনায় বিরোধীদের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে। তবে এর নেপথ্যে বেশ কিছু কারণ উঠে আসছে। পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ঘটনার তদন্ত চলছে।”
ডাকাবুকো এই তৃণমূল নেতাকে রেল শহর আদ্রায় ভরসন্ধেয় গুলিতে ঝাঁজরা করে দেওয়ায় হতবাক গোটা পুরুলিয়া। কারণ, এই তৃণমূল নেতা বরাবর একদা গেরুয়া গড় বলে পরিচিত আদ্রার রঘুনাথপুরে বিজেপির বিরুদ্ধে একেবারে সামনে থেকে রুখে দাঁড়িয়েছেন। তবে বিভিন্ন বিষয়ে এই ডাকাবুকো নেতাকে ঘিরে বিতর্কও রয়েছে। এই ঘটনার সঙ্গে ঝাড়খণ্ডের শিল্পশহর বোকারোর কোনও যোগ আছে কি না, সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তাঁর কারণ, এই রেল শহরে অতীতে বারেবারে রেলের ঠিকদার সংক্রান্ত অশান্তির জেরে গুলি চলেছে। মৃত্যু হয়েছে। জখমের ঘটনাও ঘটেছে। ফলে এই বিষয়গুলিকে একেবারেই উড়িয়ে দিচ্ছে না পুলিশ।
[আরও পড়ুন: চিকিৎসক প্রজ্ঞাদীপা হালদারের অস্বাভাবিক মৃত্যু, ‘লিভ ইন পার্টনারই খুনি’, দাবি মৃতার মায়ের]
২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের আগে কাশীপুরে বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) ভরা জনসভায় এই তৃণমূল নেতা নিজের দামী গাড়ি নিয়ে দ্রুত গতিতে ঢুকে পড়েছিলেন। সেই ঘটনায় বিজেপি নেতা-কর্মীরা তাঁর গাড়ি ভাঙচুর করেছিল। যা রাজ্য-রাজ্যনীতিতে তোলপাড় ফেলে দেয় সেই সময়। সেই ডাকাবুকো নেতাকেই ভরসন্ধেয় একেবারে শাসকদলের পার্টি অফিসে ঢুকে গুলিতে ঝাঁজরা করে দেওয়ায় স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব শুধু হতভম্ব নয় রীতিমতো আতঙ্কিত। তাই এদিন রাত আটটার পর থেকেই সম্পূর্ণ রেলশহর আদ্রা ও শিল্পশহর রঘুনাথপুর থমথমে। রঘুনাথপুর সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের বাইরে থিকথিকে ভিড় থাকলেও চোখে মুখে আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট। পঞ্চায়েত ভোটের আবহে শাসকদলকে ব্যাকফুটে ফেলতেই কি এই খুন? নাকি অন্য কোনও বিষয়ে পুরনো শত্রুতার জেরে এই খুন? পরিকল্পনামাফিক কাজে লাগানোর চেষ্টা করা হচ্ছে না তো পঞ্চায়েতের আবহকে? এহেন একাধিক বিষয় ভাবাচ্ছে জেলা পুলিশকে।