সুলয়া সিংহ: ৮৫বছরের মধ্যে এই প্রথম। দুর্গাপুজো (Durga Puja) যতটা সমারোহ করে হওয়ার, তা হবে। শুধু কোনও দর্শকের প্রবেশ নিষেধ। করোনা আবহে একেবারে দর্শকহীন দুর্গাপুজো করতে চলেছে উত্তর কলকাতার বিখ্যাত পুজো কমিটি সন্তোষ মিত্র স্কোয়্যার (Santosh Mitra Square)। সম্পূর্ণ ব্যতিক্রমী একটি উদ্যোগ, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। উৎসবের মরশুমে রাজ্যজুড়ে করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকায় নিজেদের সিদ্ধান্ত বদল করে বুধবার সন্ধেবেলা এমনই ঘোষণা করল সন্তোষ মিত্র স্কোয়্যার। ফলে এবছর আর হেঁটে নয়, ভারচুয়ালিই সন্তোষ মিত্র স্কোয়্যারের পুজো দেখতে হবে দর্শনার্থীদের।
উত্তর কলকাতার সাবেকি দুর্গাপুজোর তালিকায় প্রথম দিকেই থাকে সন্তোষ মিত্র স্কোয়্যারের নাম। প্রতি বছর এই মণ্ডপে প্রতিমা আসার সঙ্গে সঙ্গেই নামে দর্শনার্থীদর ঢল। কিন্তু এবছর সবদিক থেকে ব্যতিক্রম। বিশ্বজুড়ে কোভিড মহামারীর সংকট। এই অবস্থায় বাঙালির সেরা উৎসব দুর্গাপুজো হবে কি না, তা নিয়েই একরাশ অনিশ্চয়তা ছিল। সেসব কাটিয়ে সরকারি বিধি মেনে পুজোর আয়োজন করেছিল সন্তোষ মিত্র স্কোয়্যার। মণ্ডপ তৈরি, শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে দর্শনার্থীদের প্রবেশ, প্রস্থান পথও নির্দিষ্ট করা হয়ে গিয়েছিল। মণ্ডপে চলে এসেছিল প্রতিমাও।
[আরও পড়ুন: চাপের কাছে নতিস্বীকার, মেডিক্যালে দুর্গাপুজোর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার চিকিৎসকদের]
কিন্তু গত কয়েকদিনে রাজ্যের কোভিড (COVID-19) গ্রাফ দেখে কমিটির সদস্যদের চিন্তা বেড়েছে। সেই দুর্ভাবনা থেকেই রাতারাতি সিদ্ধান্ত বদল করে ফেলেন তাঁরা। সন্তোষ মিত্র স্কোয়্যারের পুজো উদ্যোক্তাদের অন্যতম সজল ঘোষ জানান, ”এবছর কোনও দর্শনার্থী আমরা আর ঢুকতে দেব না মণ্ডপে। সবদিকের গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আগে প্রাণ বাঁচুক, তারপর উৎসব। তবে দর্শনার্থী ছাড়া মায়ের পুজো মা যথাযথভাবেই পাবেন।”
[আরও পড়ুন: উৎসবের মরশুমে বাড়ছে যাত্রীচাপ, সামাল দিতে দিনের শেষ মেট্রোর সময় ফের বদল]
পুরোপুরি দর্শকশূন্য পুজো করার কারণে বেশ আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে চলেছে এই পুজো কমিটি। স্পনসরদেরও আপত্তি উঠেছে। তাঁদের টাকা ফেরতের সিদ্ধান্ত পর্যন্ত নেওয়া হয়েছে। শুধু একটাই প্রার্থনা, ভিড়ে যেন করোনা সংক্রমণ আর না ছড়িয়ে পড়ে। আগে প্রাণ, পরে উৎসব উদযাপন। এই পরিস্থিতিতে কলকাতার এই বড় পুজো কমিটির এমন ব্যতিক্রমী সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছেন অনেকেই। যদিও পুজোপ্রেমী মানুষজনের মন কিছুটা খারাপ। হাজার হোক, স্বচক্ষে দেখা আর ভারচুয়ালি দেখার মধ্যে তফাৎ তো আছেই।
ছবি: অরিজিৎ সাহা।