আগামিকাল জি ফাইভে আসছে ‘কালী’ সিজন টু। পাওলি দাম ফিরছেন কালীর চরিত্রে। রোহন ঘোষ এবং অরিত্র সেন পরিচালিত, রোড শো ফিল্মস প্রযোজিত এই ওয়েব সিরিজে এবার দেখা যাবে মুম্বইয়ের অভিনেতা চন্দন রায় সান্যাল, ‘পাতাল লোক’ খ্যাত অভিষেক বন্দোপাধ্যায় এবং বিদ্যা মালবাড়েকে। এই বাইলিঙ্গুয়াল থ্রিলারটি আরও ছ’টি ভাষায় ডাব করা হয়েছে। পাওলি দামের সঙ্গে বিদিশা চট্টোপাধ্যায় কথা বললেন সেকেন্ড সিজনের সম্ভাবনাময় দিকগুলি নিয়ে।
এই লকডাউনের বাজারে কী মনে হয় দর্শক আরও বেশি করে ‘কালী টু’ দেখবে? যদিও আমফানের পর সকলেই কম বেশি মুষড়ে পড়েছে।
পাওলি: এটা সত্যিই খুব কঠিন সময়। কিন্তু এই লকডাউনের মধ্যে বাড়িতে থেকে একটা জিনিস বুঝতে পেরেছি, ওয়েব প্ল্যাটফর্ম এখন দৈনন্দিন জীবনের একটা জরুরি অঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সবাই যেহেতু বাড়িতে, তাই অনেক বেশি সময় পাচ্ছে সিনেমা এবং ওয়েব সিরিজ দেখার। এবং এটা এখন যেন একটা অভ্যাসে দাঁড়িয়েছে। ‘কালী টু’ মার্চে রিলিজ করার কথা ছিল। কিন্তু লকডাউনের কারণে পিছিয়ে গিয়েছিল। আমি মনে করি এটাই ঠিক সময় এই সিরিজ প্রকাশ করার। আর এই অস্থির সময়ে একজন এন্টারটেনার হিসেবে আমি দর্শককে এইটুকুই দিতে পারি।
সিজন ওয়ানের থেকে কতটা এগিয়ে সিজন টু?
পাওলি: সিজন ওয়ান ছিল একটা দিনের গল্প। তাই এর বেশির ভাগটাই ছিল কালী কেন্দ্রিক। সিজন টু-ও কালীকে নিয়েই। কিন্তু কালীকে ঘিরে এবারে য বৃত্ত সেটা এখন অনেকটা বড়। বেশ কিছু ইন্টারেস্টিং চরিত্র ঢুকেছে। গল্পটা শুধুমাত্র কলকাতায় সীমিত নেই। আরও বেশি গ্রিপিং, এজি, অ্যাকশানও বেশি। এবারে যারা কালীর প্রতিপক্ষ, তাদের সঙ্গে লড়াইটা অনেক বেশি কঠিন। সব মিলিয়ে বলতে গেলে এই সিজন আরও বড় স্কেলের এবং অনেক বেশি ডায়নামিক। এই সিজনের শেষে কালি কিছু সিদ্ধান্ত নেয় যেখানে একটা টুইস্ট আছে। দর্শক একটা জরুরি জিনিস জানতে পারবে।
[ আরও পড়ুন: শীঘ্রই আসছে ‘পাতাল লোক’-এর দ্বিতীয় সিজন, ইঙ্গিত দিলেন অনুষ্কা ]
আমরা কি আশা করতে পারি যে সিজন থ্রি আসতে পারে?
পাওলি: ওয়েল এই সিজনের শেষে ডেফিনিটলি সিজন থ্রিয়ের একটা আভাস থাকবে। কিন্তু আদৌ হবে কিনা সেটা এখনই নিশ্চিত করে বলতে পারি না।
আপনার কী মনে হয়, এই সময় দাড়িয়ে আগামী দিনে শুটিংয়ের ভবিষ্যৎ কী?
পাওলি: কঠিন সময় তো বটেই। করোনা পরবর্তী সময়ে আমাদের জীবনে নানান পরিবর্তন এসেছে। অনেক লিমিটেশনও এসেছে। যেমন মাস্ক পরা, গ্লাভস পরা, হাত ধোয়া, সোশ্যাল ডিসটেনসিং মেনটেন করা, এবং এগুলো নিয়েই আমাদের চলতে হবে। কবে, কী কী নিয়ম মেনে শুটিং শুরু করা যাবে, সেটা এখনই বলা সম্ভব নয়। কিন্তু শুরু তো হবেই। হতেই হবে। এতগুলো মানুষের ভবিষ্যৎ জড়িয়ে। এত বড় একটা ইন্ডাস্ট্রি। তবে আশা রাখি সিনেমা নিশ্চয়ই তার নতুন ফরম্যাট খুঁজে পাবে। এবং ফিরবেই।
ট্রেলারে দেখছিলাম আপনাকে বেশ কিছু স্ল্যাং বলতে হয়েছে। সেটা করতে অসুবিধে হয়নি?
পাওলি: বাব্বাহ আর বোলো না! এটা ভীষণ চাপ। আমার সত্যিই খুব অসুবিধে হয় এইসব শব্দ বলতে। আমরা কিছু শব্দ ইংরেজিতে শুনে অভ্যস্ত, তাই কানে লাগে না। কিন্তু বাংলা এত মিষ্টি একটা ভাষা সেখানে বাংলায় গালাগালি দিলে কেমন যেন শুনতে লাগে। এগুলো বলতে আমার একটু অসুবিধে হয়েছিল। বলেছিলাম একটু পালটে দেওয়া যায় না? কিন্তু চরিত্রের কথা ভাবলে সেটা খুবই রেলিভ্যান্ট। কারণ কালী এমন পরিস্থিতিতে এসে পড়ছে, যেখানে তার পিঠ ঠেকে গিয়েছে। যেখানে জগৎটা অন্ধকার। সেখানে তার মুখ দিয়ে এই শব্দ বেরোনোটা খুব স্বাভাবিক। এটুকু দরকার ছিল। প্রথম দুই এক দিন অসুবিধে হয়েছিল। তারপর আয়নার সামনে গালাগালি দিয়ে প্র্যাকটিস করে নিয়েছিলাম। সিনিয়র অ্যাকটরদের গালাগালি দিয়ে সরি চেয়ে নিতাম।
চন্দন রায় সান্যালের সঙ্গে আগেও কাজ করেছেন। কিন্তু অভিষেকের সঙ্গে এই প্রথম। তাই তো?
পাওলি: হ্যাঁ। অভিষেকের সঙ্গে এই প্রথম। দারুন অ্যাকটর। আমরা কাজের ফাঁকে আড্ডা দিতাম। যদিও একইসঙ্গে দুটো শিডিউল চলত বলে বেশি সময় পাইনি। তবে চন্দনের সঙ্গে ওর নতুন ছবির গল্প, নতুন ফ্ল্যাট, বুদ্ধদেব দাশগুপ্তর সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা নিয়ে পুরনো গল্প হয়েছে। তবে আমি কিন্তু বিদ্যার সঙ্গে আগেও কাজ করেছি ‘ইয়ারা সিলি সিলি’ নামের একটা ছবিতে। বিদ্যা আবার যোগা ফ্রিক। আমাকে প্রচুর টিপস দিয়েছে।
[ আরও পড়ুন: অসমের বন্যায় অর্থসাহায্য দেবলীনার, মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে দিলেন ৭৩ হাজার টাকা ]
লকডাউনে কীভাবে সময় কাটাচ্ছেন?
পাওলি: অর্জুন তো গুয়াহাটিতে। আমি সকালে উঠে ওয়ার্ক আউট করি। সারাদিন ধরে গান শোনা, সিনেমা দেখা, সিরিজ দেখে সময় কাটাই। বর্ডার টাউন, পঞ্চায়েত, ফ্যান্টম থ্রেড, হাই সিজ, মনার্কা, আউটল্যান্ডার, আরও অনেক সিরিজ দেখেছি। এবং মানি হাইস্ট আমার আগেই দেখা। আমি বিঞ্জ ওয়াচ করি। শেষ না করে উঠতেই পারি না। খুব খারাপ অভ্যাস। কিন্তু সিরিজ শুরু করলে শেষ করতেই হবে।
The post ‘আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে গালাগালি দেওয়া প্র্যাকটিস করেছি’, ‘কালী’ ওয়েব সিরিজ নিয়ে অকপট পাওলি appeared first on Sangbad Pratidin.